http://www.myspace.com/423882880/music/songs/31785002
কোনো স্মোকার বা নন স্মোকারকে ফেভার করতে নয়। আমি আর আমার বন্ধু শাহীন হিসাব করে দেখলাম, ৮ বছরে আমাদের সিগারেট বাবদ খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ২০০ টাকা। হয়তো তার চেয়ে বেশি। কিন্তু তাতে কি হয়েছে? আসলে অনেকেই ভাবছেন, টাকার প্রতি এতোই যখন টান তখন কিছু না খেয়ে থাকলেই হয়! মূল কথা কিন্তু টাকাও নয়! কিন্তু কখনো কখনো সিগারেট ভালোলাগছে না, তারপর সাময়িক বিরতি এবং আবার স্মোকিং। অভ্যাসটা ছাড়া যাচ্ছে না।
সিগারেট ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে নানা জন নানান পরামর্শ দিয়েছেন। যেমনঃ
১/ ছাড়ালেই ছাড়া যায়।
২/ শপথ করো, আজ থেকে আর খাবো না!
৩/ কলা খাও!
৪/ চকলেট খাও।
৫/ প্রেম করো!
৬/ চুইংগাম খাও
৭/ মেডিটেশান করো!
৮/ জিম করো!
৯/ বিয়ে করো!
১০/ সঙ্গ ঠিক করো, যারা সিগারেট খায় তাদের এভয়েড করো।
১১/ একটা কঠিন অসুখ না হলে, সিগারেট ছাড়া যায়না।
আবার অনেকে ভয় দেখিয়েছেনঃ
১/ সিগারেট খাচ্ছ, সেক্সে সমস্যা হবে।
২/ সিগারেট খেওনা, গলায় ক্যান্সার হবে।
৩/ সিগারেটের প্রতি টানে ২ দিন করে আয়ূ কমছে।
৪/ ফুসফুস ফুটো হয়ে যাবে।
৫/ সিগারেট মানে মৃত্যু অনিবার্য।
৬/ অল্প বয়সে হার্ট এ্যাটাক হবে।
৭/ সিগারেট আসলে ছাড়া যায়না, রক্ত নিকোটিন টানে।
৮/ ইচ্ছা শক্তি মরে যায়।
৯/ সিগারেট প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে একটা মানুষকে অপরাধী করে দিচ্ছে।
অনেকে আবার রূপ নিয়ে বলেছেনঃ
১/ স্বাস্থ্য শুকিয়ে যায়
২/ ঠোঁট কালো হয়ে যায়, দেখতে বিশ্রী লাগে।
৩/ বিরক্তিকর বডি ওডর
৪/ হাত পা কাঁপে।
৫/ চেহারা নষ্ট হয়ে যায়।
যারা কেয়ার করেনা, তারা বলেছেন এই ভাবেঃ
১/ সিগারেট খেলে মানুষ মারা যায়না!
২/ সিগারেট ছাড়া মাথা খোলেনা।
৩/ টেনশন ফ্রি থাকা যায়।
৪/ পুরুষ মানুষ সিগারেট না খেলে হয় নাকি?
৫/ অকেশনালি খাওয়া যেতে পারে।
৬/ একদিনতো সবাই মরবে, সিগারেট কি দোষ করছে!!
৭/ এটা কোনো বদঅভ্যাস নয়, এটা পারসনাল ব্যাপার।
৮/ ব্যক্তিত্ববানেরা সিগারেট খায়।
৯/ সিগারেট না খেলেতো মাথা খারাপ হয়ে যায়, মনে হয় মরে যাচ্ছি।
হয়তো আমাদের স্মোকার ব্লগার ভাই বোনদের অনেক অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে থাকতে পারে। চারিদিকে এমন সব কথা বার্তা শোনার পর আমরা অনেকেই কনফিউজড।
কিন্তু আসল ব্যাপার হলো আমরা কিন্তু সিগারেট ছাড়তে পারছিনা। বাঁচতে হলে, জানতে হবে- এইডস এর এই ক্যাম্পেইন এর চেয়ে আমাদের দেশে দরকার সিগারেটের বিরুদ্ধে কোনো শক্তিশালী ক্যাম্পেইন। কিন্তু সরকার থেকে সেরকম কিছু দেখছিনা। ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো আমাদের সরকারকে সবচেয়ে বেশি ট্যাক্স দেয়, সেই কারণে কি সরকার নিশ্চুপ!!
রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিগারেটের বুথ। বাসে ট্রেনে ফেরিওয়ালা, পাশের লোকটি চেয়ে খেলো।
সিগারেটে কোনো কোনো দোকান রাত বারোটার পর খোলা থাকছে। পছন্দের সেলিব্রেটিরা স্মোক করছে, বিজ্ঞাপন করছে। পার্টিতে বন্ধুরা বারবার অফার করছে! স্ট্যাটাস আপগ্রেড করতে সিগারেট খাচ্ছে অনেকে! অনেকে মেয়েদের কাছে পুরুষ হতে চাচ্ছে, তাই সিগারেট।
বাবা ঘরে স্মোক করছে, কিন্তু বাচ্চাদের শাসাচ্ছে। বাবার বন্ধুরা দাওয়াত খেতে এসে খাচ্ছে, বড়ো ভাইয়া খাচ্ছে- ভাবী আর বারণ করছে না।
বন্ধুরা জন্মদিনের পার্টিতে এসে খাচ্ছে, একদিনই তো। এক্সকারশানে যাওয়ার কালে প্যাকেটে প্যাকেট সিগারেট, অবশ্য রাতে গোল করে বসে ভোদকা খাওয়ার সময় আরো বেশি লাগে। অনেকে খুব আয়েশি ভঙ্গিতে সিগারেট খেতে খেতে স্মৃতিচারণ করেন, আমি ৬ মাস এক বছর সিগারেট খাইনি। অনেকে খাননা কিন্তু অস্ট্রেলিয়া থেকে বন্ধু ডানহিল এনেছে , না খেলেই নয়। পাশের বাড়ির জব্বার আংকেল হার্ট এ্যাটাকে মারা গেছেন, ডাক্তার স্মোকিং করতে না করেছেন, শুনেন নি।
তারপর সপ্তাহখানিক গ্যাপ, আবার শুরু হয় খাওয়া। ডেট করতে যাওয়ার আগে, এটা মেনটরস বা ক্লোরোমিন্ট চুষতে চুষতে প্রেমিকার কাছে সিগারেটের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করা।
মোট কথা, সিগারেটের অভ্যাস আমাদের এমন ভাবে গ্রাস করে রেখেছে, ঘিরে রেখেছে যে আমরা অনেকই নিরুপায়। এটা আমাদের কাছে আর বদঅভ্যাস নয়, জীবনেরই অংশ। আমরা স্মোকার রা খুব দ্রুত মরে যাচ্ছি।
আমরা আসলে ম্যারাথন মৃত্যু যাত্রী। কোনো দায়বদ্ধতা নেই!
কিন্তু আমরা বাঁচতে চাই, কিভাবে??
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।