প্রতিদিনকার চলা মমি করে রেখে যাই ওয়েবের পিরামিডে
বিগতযৌবনা গণবনিতার মতো ক্লান্ত নিরীহ ছিল সেই গাছ বনতলী ঘেঁষে, যুক্ত যা করেছে সে প্রতিবেশে, কখনো হয় নি তার মাপজোক ঢাকে-ঢোলে, পাতায় ফুলে ও ফলে, কাণ্ডে ও মূলে ছাড়া
যে পাখি এসেছে যখন, ফেরায় নি কাউকে কখনো, ঢেরগান প্রযোজিত পান্থপাদপে, নিহিত ভূগোলে, শ্যামে কী কৃষ্ণে নিজ কাণ্ডকলাপে
ছায়ার মায়ায় বেঁধেছে সে বহুজনে, টেনেছে দূরের পাখি, ফড়িং ও মৌমাছি দারুবনতটে
একটা ফুল তার ছুড়েছে কামনাধনুকে তীর
একটা ফল তার ডেকেছে মৃত্যুকে বাড়িতে
একটা পাতা তার গেছে কুঞ্ঝটিকার দিকে
একটা কাণ্ড তার এনেছে সত্যের মহামারি
একটা মূল তার দিয়েছে ভূকম্পনের ভীতি
মাত্র এ পঞ্চদোষে পাড়া-প্রতিবেশী যত মরু ও জলাশয়, পথ ও টিলা-ট্যাঙ্গর, পাহাড় ও গাছপালা, ভূমি ও ঘরবাড়ি ঠুকেছে গাছের নামে পোক্ত নালিশ--- সমাজ নেই এর, এরে একঘরে কর, ফুলে যৌনতা ও ফলে বিষ, পাতার রেখায় এর পাপ লেখা আছে, কাণ্ডে মিথ্যা ও মূলে এর বিনাশমন্ত্র গাঁথা, এরে সমাজচ্যুত কর, কর সাষ্টাঙ্গে নির্মূল
ঘোর বৃষ্টিকে ডেকে আনা হয়--- গাছ তেমনি থাকে
আসে অগ্নিরোদ--- গাছ যেমন তেমন
বজ্র আসে--- কিছুই হয় না গাছের
ক্রমে করাতি প্রস্তুত, ক্রমে পাকানো হয় রশি, সাজ সাজ রব পড়ে পাড়ায়, হৈচৈ-এ জেগে ওঠে জলমীনতক, রাত না ফুরাতে
ভোরে, প্রান্তরে ভেঙে পড়ে পাড়া, পাড়ার গড় চোখ দেখে যে গাছটি আপনা থেকেই নুয়েছে ভূতলে, মানে সে বরণ করেছে ইচ্ছামৃত্যুরে, ফলে হতাশায় জনতা নির্বাক, ফলে বেদনায় বিমূঢ় আক্রোশ
অথচ জনরোষ চেয়েছে দিতে গাছটিকে উচিত শিক্ষা, চেয়েছে তড়িঘড়ি তজ্জাত রোষের দমন
অতৃপ্ত জনরোষমালা পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি শেষে হানতে আরম্ভ করে নিজেরা নিজেকে, এ ওর কণ্ঠায় বসায় মারণ কামড় তো ও মটকে দেয় এর নিশপিশে হাত
প্রকাশ প্রকাশ গাণ্ডীব-এ। পরে ২০০৬ এ বাংলাপ্রসার প্রকাশিত গ্রন্থিকা 'বৃষ্টিগাছের তলায়'-এ অন্তর্ভুক্ত
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।