সমাজের দর্পণ বলে বিবেচিত সংবাদপত্র কেনো তার নিজস্বদায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলো- গত ১৫ বছরে তথ্যস্বাধীনতার সুযোগ পেয়েও কেনো তারা দায়িত্বশীলতা শিখলো না এসব প্রশ্নের উত্তর আসলে সংবাদপত্র কর্মীদের দিতে হবে-
দুঃখজনক সত্য হলো চা চক্ট আর সুশীল আলোচনার ভেতরেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে তথ্যের উপরে পর্দারোপ এবং তথ্য তছরূপের একটা প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে-
কেনো এই বাস্তবতার জন্ম হলো এই সংক্রান্ত আলোচনা হতেই পারে- গণমাধ্যম কেনো তার যথাযোগ্য ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে- কেনো আমাদের সাংবাদিকতার সাথে জড়িত মানুষদের সাংস্কৃতিক বোধ আর সংস্কৃতি চর্চার মাণ ছুটা কাজের বুয়া পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকলো( যদিও ছুটা কাজের বুয়ারা অপমানিত বোধ করতে পারে আমার কথায়) ছুটা কাজের বুয়ারা যেভাবে চলমান আঞ্চলিক এবং পারিবারিক সংবাদ মাধ্যম ও সংবাদ সঞ্চালকের চুমিকা পালন করে আমাদের সাংবাদিকেরাও একই মানের সংবাদ জাতীয় পর্যায়ে সঞ্চালন করে-
রুচিহীনতা- কদর্যতা- বিকৃতি, নষ্টামিতে তাদের সহজাত পারদর্শীতা বিষয়টা কেনো ঘটে আমি জানি না।
"বনের রাজা " ওসমান গনি শব্দটাতে একটা কৌতুক উপাদান থাকলেও এসব ভাড়ামির চেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয় এই অপরাধীকে অমানবিক প্রমাণের চেষ্টায় যখন সাংবাদিকেরাও অমানিক রুচিহীনতায় মগ্ন হয়ে যায়-
ওসমান গণির মা এবং বোনেরা থাকে কুমিল্লায়- সংবাদ মাধ্যমের সামনে টাদের নিঃস্ব এবং মানসিক প্রতিবন্ধি হিসেবে তুলে ধরা এবং তাদের দিয়ে একটা মূল্যায়ন- অপরাধীকে কেউ প্রশ্রয় দেয় না- তবে এটা বারংবার প্রচার করা যে কদর্যতা এটা বুঝবার কোনো বোধ হয় নি সাংবাদিকদের।
মানলাম ওসমান গণি লোকটা পাষন্ড, পিশাচ, নরাধম, যাবতীয় নঞ্চর্থক বিশেষণে তাকে বিশেষায়িত করা যায়- তবে তাকে মানবতার শত্রু প্রমাণ করবার চেষ্টায় যখন সাংবাদিকেরা শালীনতার এবং মানবিকতার লঙ্ঘন করেন তখন সে কদর্যতা ক্ষমাহীন হয়ে যায়।
জলিল বাবার এদের আটক করবার পর রিমান্ডে তাদের স্বীকারোক্তি প্রচার মাধ্যমে এসেছে- দৈনিকের পাতায় এসব পড়ে বিবমিষা জেগেছে- আমাদের দৈনিকগুলোর সম্পাদক এবং সাংবাদিকদের রুচিহীনতার জলন্ত দলিল এসব প্রতিবেদন-
আমার দেশে সাংবাদিকের করা প্রতিবেদনে এসেছে- এর পর বাবর কথা বলতে ইতস্তত করলে তাকে ভয় দেখানো হয় বাতি নিভিয়ে দেওয়া হবে- কিংবা এমন কিছু তবে এটা সত্য যে সেখানে বাবরকে বাতি নিভিয়ে দেওয়ার ভীতি দেখানো হয়েছিলো- এর পর ভয়ে তিনি অপরাধের ফিরিস্তি দেন- প্রথম শ্রেনীর পত্রিকা হিসেবে বিবেচিত দৈনিকগুলোর প্রতিবেদনের হালও একই রকম ছিলো-
এখানে একটা প্রত্যক্ষ দর্শী হয়ে উঠার দাবি আছে- রিমান্ডে সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকবার রীতিটা প্রচলিত হলো কবে? যদি সাংবাদিক নিজে উপস্থিত না থাকেন তবে এই রিমান্ডের ভিডিও ফুটেজ তাদের সরবরাহ করে হয়েছে- যদি এটাই সত্য হয় তবে এই কাজটা কি কোনো ভাবে আইনসঙ্গত?
রাজার খরগোশ পাওয়া যাচ্ছিলো না- খরগোশ হারিয়ে চৈতন্যহারা রাজা সেপাই আর কোতোয়ালকে খবর দিলেন- এই খরগোশ ইলোপের একটা যথাযোগ্য বিহিত করবার নির্দেশও জারি হলো- করিৎকর্মা সেপাইরা ধরে নিয়ে আসলো হরিণকে- তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলো-
অবশেষে রিমান্ডে হরিণ স্বীকারোক্তি দিলো সেই খরগোশকে খেয়ে ফেলেছে- যদি তাকে সুযোগ দেওয়া হয় সে দেখিয়ে দিবে কোথায় খরগোশের চামড়া আর নাড়িভুড়ি লুকিয়ে রেখেছে সে
এবং ভোরের বেলায় রাজা এসে বললেন তদন্ত করবার প্রয়োজন নেই- আসলে খরগোশ লুকিয়ে ছিলো সিঁড়ির নীচে-
রিমান্ডে যদি তৃণভোজী হরিণ মাংশাসী হয়ে উঠে তবে দায়টা রিমান্ড সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার-
তবে এসব স্বীকারোক্তি ভিত্তিহীন। আদালতে উপস্থাপিত স্বীকারোক্তি অগ্রহনযোগ্য যদি আসমি অভিযোগ করে তাকে দিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে মানসিক উৎপীড়নের মাধ্যমে এই স্বীকারোক্তি গৃহীত হয়েছে-
যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ ছাড়া যেকোনো তথ্য উপস্থাপন হয়তো কাজের বুয়া সংস্কৃতির চর্চাকারী সনাগবাদিকদের মনে কোনো রকম প্রশ্ন তুলে না, তারা স্কুপ নিউজের প্রত্যাশায় যেকোনো কিছুই ছাপিয়ে দিতে পারেন- তাদের কোনো পেশাগত কিংবা নীতিগত দায়বদ্ধতা নেই- তবে আমাদের সম্পাদকেরা কি করছেন- তাদের তো এসব বিবেচনা করা প্রয়োজন-
নিকৃষ্ট সাংবাদিকতা উদাহরণ তৈরি করা ভিন্ন তারা অন্য কিছু করতে পারছেন না সামরিক কালে এটা রীতিমতো ঘৃন্য একটা বিষয়।
বর্তমান সরকারের নিজস্ব প্রয়োজন আছে- তারা নিজেদের ধারাবাহিক মূল্য নিয়ন্ত্রনের ব্যর্থতা আড়াল করবার জন্য আরও বেশী দুর্নীতিবিরোধি হয়ে উঠবেন- তাদের জনগনকে বিভ্রান্ত করা কিংবা জনগনকে সততার মাদক গেলানো ভিন্ন অন্য কোনো পন্থা হাতে নেই- তবে সেটাকে সামলে রাখার দায়িত্ব গণমাধ্যমের- বরং তাদের উন্মত্ততাকে সমর্থন করাটা হবে ভয়ংকর ভুল সিদ্ধান্ত।
কাউকে শুধুমাত্র বিবেচনার বলে অপরাধী করে ফেলা কিংবা যথেষ্ট প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও তাকে অপরাধী ঘোষণা দেওয়াটা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নয়- এমন মানের সাংবাদিকতাকে হলুদ সাংবাদিকতা বলে- আর এর জন্য উপযুক্ত হচ্ছে সিনে পত্রিকা- যেখানে অমুকের সাথে তমুকের রেম পরিণয় সংক্রান্ত গুজব ছড়ানো যায় তবে জনতার দর্পন বিবেচিত দৈনিকের পাতায় গুজব ছড়ানোটা আসলে এক ধরনের অপসংস্কৃতির চর্চা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।