শুনেছি আমাদের দেশে সাবেক কোনো এক অর্থমন্ত্রীর দপ্তরে তিন বাহিনীর প্রধানকে একবার তলব করা হয়েছিল। সেই মিটিংয়ে সেনাপ্রধান বসেছিলেন পিছনের চেয়ারে। অর্থমন্ত্রী মহোদয় তাকে সামনে এসে একই সারিতে তিনজনকে বসতে বললেন। তখন সেনাপ্রধান নাকি বলেছিলেন, তিনি পিছনের সারির লোক, মুখ্য বাহিনীর প্রধান। তার লোকজন দিয়ে সব ধরনের কাজ করানো হয়।
সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় তার অধীনসত্দ লোকদের খাটানো হয়। এতে দেশে-বিদেশে তাদের অনেক সুনামও রয়েছে। অথচ অন্য বাহিনীর তুলনায় তাদের (সৈনিকদের) বেতন বৈষম্য অনেক। কাজেই তিনি একই সারিতে না বসে বৈষম্য বজায় রেখেই বসেছেন।
এই উদাহরণ দিয়েই একটি বিষয় কতর্ৃপক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।
। মধ্যপ্রাচ্য থেকেই পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। অথচ সেই তুলনায় মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরা কী সুবিধা পাচ্ছে? পাসপোর্ট তৈরিতে হয়রানি কমেছে? বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে কোন উপকার পাচ্ছে? রিক্রুটিং এজেন্টদের দানবী হসত্দক্ষেপ থেকে সাধারণ মানুষ রেহাই পাচ্ছে ? দালালদের প্রতারণা থেকে মানুষ কি মুক্তি পাচ্ছে? মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের জন্য কি বিমান ভাড়া কমেছে? বরং ছুটিতে গেলে মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীরা বিমানবন্দরের অফিসার, সুইপার বা লোডার কতর্ৃক কোনো-না-কোনোভাবেই নির্যাতিত হচ্ছে। এটা কমন, মধ্যপ্রাচ্যের গরীব শ্রমিকদের ওপর এটা রয়েই গেছে। সামান্য একটা টর্চলাইটের লোভ পর্যন্ত তারা সামলাতে পারে না।
ব্যবসায়ের জন্য নয়, বরং নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য শুল্কযুক্ত একটি জিনিস (যেমন টিভি) বিনা শুল্কে নিতে পারছে?
আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশি টাকা খরচ করে মধ্যপ্রাচে যেতে হয়; কিন্তু বেতন বাড়েনি, বরং অনেক কমেছে। যা কাউকে বলাও যায় না। আগের তুলনায় সুযোগ-সুবিধা অনেক কমেছে, তবে হয়রানি বেড়েছে। এটা শুধু বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রেই হচ্ছে। যেন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করাটাই অপরাধ।
মূল্যায়ন ও বৈষম্যের ক্ষেত্রে অন্য দেশের কথা বাদই দিলাম। একই পদে নিযুক্ত পাশর্্ববতর্ী দেশ ভারতের শ্রমিক আর আমাদের দেশের শ্রমিকের মঝে বেতন বৈষম্য দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। অথচ আমাদের পরিশ্রমী ও কর্মঠ শ্রমিকের অনেক ডিমান্ড। সবাই তাদের কাজ পছন্দ করে। এ নিয়ে কতর্ৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করলে তারা বলেন, প্রশ্নটা যেন আমাদের সরকারকে করি।
তাদের নাকি কোনো দোষ নেই, তারা কম বেতন দিয়ে শ্রমিক নিতে পারলেই তো লাভ। তারা আরো বলে, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি নাকি দুর্বল। তখন অনেক প্রবাসীই আক্ষেপ করে বলেন যে, আমাদের দেশে কোন সরকার নেই। এরচেয়ে লজ্জার বিষয় আর কী হতে পারে? বড়োই আপসোস যে, উদ্ভূত লজ্জাটা প্রবাসীদের না লেগে যদি সংশিস্নষ্ট কতর্ৃপক্ষের চোখে লাগতো!
( আইয়ুব আহমেদ দুলাল, ডেলিম ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি, জুবাইল, সৌদিআরব )
ঃঃ দৈনিক ইত্তেফাক ঃ [লিংক=যঃঃঢ়://িি.িরঃঃবভধয়.পড়স/মবঃ.ঢ়যঢ়?ফ=06/12/20//িধথুসাাী]20.12.2006[/লিংক] ঃ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।