নতুন দিগন্তের খোঁজে...
বড় বোন বাড়ীতে আসবে, তাই আমাকেও যেতে হবে- আম্মুর কড়া নির্দেশ। কেন যেতে হবে তা জিজ্ঞেস করার মত পরিবেশ বা পরিস্থিতি তখন ছিল না। এক সপ্তাহ আগে থেকে আমার বাড়ীতে যাবার প্রস্তুতি নেয়া শুরু। আবু বকর ভাইকে ফোন করলাম কিছু টাকার জন্য। গফুর ভাইকে বললাম বাড়ীতে যাব শুক্রবার রাতে।
অফিসে বসের কাছে বলে আগেই ছুটি নিলাম। ইত্যাদি ইত্যাদি....
সেদিন কত তারিখ মনে নেই, সাজ্জাদ ভাই মেইল করলেন তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমার বন্ধুদের মধ্যে গফুর ভাই সিনিয়র তার বিয়ের কোন খবর নেই। গফুর ভাইয়ের জন্য এটা একটা অপমান। সাজ্জাদ ভাইয়ের মেইলের জবাবে আমি লিখলাম- "না আমি এটা হতে দেব না।
আমি আপনার আগে ...... করব। "
এখানে বলে রাখি, সাজ্জাদ ভাই আর আমি দুজন ছিলাম রেজাল্টের দিক দিয়ে প্রথমা না হয় দ্বিতীয়। মাঝে মধ্যে ইসমাইল ভাইও প্রথম দ্বিতীয়তে চলে আসতেন। বন্ধুদের মধ্যে আমি সবার জুনিয়র। মানে বাচ্চা পোলা।
আসল কথায় আসি। আমার রেজাল্ট যেমন সাজ্জাদ ভাইয়ের পরেই থাকত তেমনি সাজ্জাদ ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে আমারও মনে হলো সাজ্জাদ ভাইয়ের পরে কেন আমার ইয়ে, মানে বিয়ে হবে না?
কিছু দিন আগে ধানসিঁড়ি "বিয়ে ভাবনা" শিরোনামে একটা পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি 25 বছরে বিয়ের কথা বলেছেন। আর কয়েক দিন পরেই আমার 25 হবে।
বাসে উঠে সাজ্জাদ ভাইকে একটা ফোন করলাম।
-ভাই, বাড়ীতে যাচ্ছি।
- যাও, দেখ কোন ব্যবস্থা হয় কিনা।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
- ......
বাড়ীতে যাওয়ার পর সবাই কত কথা জিজ্ঞেস করল কিন্তু বিয়ের কথা কেউ কিছু বলে না। সাজ্জাদ ভাইকে আবার ফোন করলাম।
- ভাই, কেউ তো কিছু বলে না।
- এক কাজ কর, কাচের গ্লাস-প্লেট ভেঙে চুপ করে বসে থাকো।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
সাজ্জাদ ভাইয়ের কথাটা আমার মনে ধরল। যেই ভাবা সেই কাজ।
কিন্তু কাচের গ্লাস বা প্লেট হাতের কাছে পাই না। বাড়ীতে ছোট ছোট পিচ্চি আছেতো তাই ওগুলো সব শোকেসের মধ্যে রেখেছে। আমার নজর শোকেসের দিকে। আবার সাজ্জাদ ভাইকে ফোন করলাম।
- আরে বোকা, শোকেসের একটা গ্লাস ভাঙলেইতো পার।
তাইতো, ভাল আইডিয়া। সুযোগ বুঝে শোকেসের একটা গ্লাসে স্ক্রু ড্রাইভারের উল্টো পাশ দিয়ে দিলাম একটা ঘা। অমনি এক পাশের গ্লাস ভেঙে চুরমার। সঙ্গে সঙ্গে আমার ছোট বোন দৌড়ে আসল।
- কি হলো ভাইয়া?
সাজ্জাদ ভাইয়ের কড়া নির্দেশ কথা বলা যাবে না।
তাই কথা বললাম না। আম্মু এসে বলল।
- কি ব্যাপার আরাফাত, তুই কি এখনও সেই বাচ্চা রয়ে গেছিস নাকি ? কোন মেয়ে যে তোর জন্য আনব। - আম্মুর সঙ্কিত কন্ঠ।
পরে আড়াল থেকে শুনেছি আম্মু আব্বুর সাথে বলছে
- ছেলেটা এখনো বচ্চা রয়ে গেছে।
ওকে বিয়ে করালেতো মুসিবতে পড়তে হবে।
আব্বুকেও দেখলাম আম্মুর কথায় সায় দিচ্ছে। ছোট বোনের কাছে শুনলাম, আমি যেই গ্লাসটা ভেঙেছি সেটা আমার মেজ বোনের পিচ্চি ছেলেটা আগে একবার ভেঙে ফেলেছিল।
আমি এখন কোন দিকে যাই? মহা মুসিবতে পড়া গেল। ব্লগার বন্ধুরা, আপনারা কি আমাকে এর থেকে উদ্ধারের উপায় বলতে পারবেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।