i want to live simple and die simple
গল্পের চরিত্রের সাথে , ঘটনার সাথে কেউ বাস্তবের মিল খুঁজতে গেলে সেটা তার নিজস্ব মস্তিষ্কের অতিরিক্ত উর্বরতা ( আই মিন মাথায় গোবরের পরিমান বেশি )বলে ধরা হবে । এজন্য লেখককে দায়ী করা যাবে না।
চেয়ারম্যানের গম ভাগঃ
( ১ )
এক গ্রামে ছিলো এক চেয়ারম্যান । তার ছিলো ছয় মেম্বার । চেয়ারম্যান বেজায় চতুর হলেও , তার মেম্বার গুলো ছিলো সাধাসিধে ।
জনগনের মাল লুট-পাট করতে মেম্বারদের কে হাতে রাখতে হতো চেয়ারম্যানের । তাই মালের ভাগ মেম্বারদের ও দিতে হতো । তবে সে সবসময় এই ধান্ধায় থাকতো যে কিভাবে মেম্বারদের ফাঁকি দিয়ে নিজে বেশী খাওয়া যায়।
একবার জনগনের জন্য ৪৯ মণ গম এলো । চেয়ারম্যান ঠিক করল এটা পুরোটাই তারা মেরে দিবে ।
জনগনকে কিছুই দেবে না । সেই মতো মেম্বারদের ডেকে সে বললো - আমরা সাত জনে সমান ১৬ মণ কইরা পামু । তো আমার ভাগের ১৬ মণ আমি রাইখা দিসি। বাকি গম নিয়া ১৬ মণ কইরা প্রত্যেকে ভাগ কইরা নে। এই বলে চেয়ারম্যান বাকি ৩৩ মণ ( ৪৯-১৬ = ৩৩ ) গম মেম্বারদের দিয়া দিলো।
মেম্বাররা বাসায় গিয়ে মাপতে গিয়ে পরলো মহা ফাঁপড়ে । দুই জনরে ১৬ মণ কইরা গম দেবার পর বাকি থাকে মাত্র ১ মণ ! অথচ চেয়ারম্যান কইলো যে সবাই ১৬ মণ কইরা গম পাইবো ! কেমতে কি ? চল তো চেয়ারম্যানের কাছে ।
( ২ )
চেয়ারম্যান তো মেম্বারদের অভিযোগ শুনেই রেগে কাঁই ।
বলে - গর্ধভের দল । সামান্য কয় মন গম তোরা ভাগ করতে পারস না ! তগো লইয়া সমাজে চলুম ক্যামতে ? আমার মান- ইজ্জত তো প্লাস্টিক হইয়া যাইব ।
আইচ্ছা খাতা কলম ল ।
চেয়ারম্যান বলে চলে - আমরা মানুষ সাত জন । প্রত্যেকে ১৬ মণ কইরা গম পামু ঠিক ? ত খাতায় একটার নিচে আরেকটা এমন কইরা ৭ বার ১৬ লেখ ।
এক মেম্বার লিখলো-
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
চেয়ারম্যান - কই লিখছস্ִ ? এই বার দেখ ডান দিকে ৭ টা ছয় না ? তো ৭ টা ছয় এক লগে যোগ করলে কত হয় ? ৪২ । আইচ্ছা অইটা একটা টান দিয়া নিচে লেখ।
মেম্বার লিখে-
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
--------
৪২
চেয়ারম্যান - এইবার বাম দিকে তাকা । কয়টা ১ দেখা যায় ? ৭ টা না । তাইলে ৭ টা ১ যোগ করলে কত হয় ৭ না ? এই ৭ এখন ৪২ এর নিচে লিখা যোগ কইরা দেখ , হাবা হাসমতের দল ।
মেম্বার লিখে -
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
১৬
--------
৪২
৭
---------
৪৯
চেয়ারম্যান - দেখলি তো গর্ধভের দল ১৬ মণ সাতবার যোগ করলে ৪৯ মণ হয় । সেই হিসাবে আমাদের ৭ জনের প্রত্যেকের ১৬ মণ কইরা গম পাবার কথা ।
যা বাড়ি গিয়া ভালো কইরা মাপ ।
( ৩ )
চেয়ারম্যানের কথা শুইনা মেম্বাররা ফিরে এলো । ভাবলো চেয়ারম্যান জ্ঞানি মানুষ ! ভুল মনে হয় আমাগো ই হইসে ।
কিন্তু মাপতে গিয়া সেই একই বিভ্রাট । আবার সিদ্ধান্ত - চল চেয়ারম্যানের কাছে যাই।
চেয়ারম্যান আবার ক্ষ্যাপা । এই সামান্য জিনিষটা বুঝস না ! তগো দিয়া জনসেবা ক্যামনে হইবো । আইচ্ছা খাতা নে । লেখ । প্রথমে ১৬ লেখ ।
এর নিচে পুরন চিন্হ দিয়া লেখ ৭ । এরপর একটা টান দে।
এক মেম্বার লিখে -
১৬
* ৭
-------
চেয়ারম্যান বলে - আইচ্ছা ১৬ এর ডানদিকে আছে ৬ । এই ৬ রে নিচের ৭ দিয়া গুন করলে কত হয় ? ৪২ না ? লেখ ৪২ ।
মেম্বার লিখে -
১৬
*৭
--------
৪২
চেয়ারম্যান - এইবার বাম দিকের ১ রে ৭ দিয়া গুন করলে কত হয় ? ৭ না ? ওই ৭ টা ৪২ এর নিচে লেখ ।
এরপর যোগ কইরা দেখ। মেম্বার লিখে-
১৬
*৭
------
৪২
(+) ৭
----------
৪৯
চেয়ারম্যান - বলদের দল ! যা বাড়ি গিয়া ঠিকমতো ভাগ কর !
(4)
চেয়ারম্যানের ঝাড়ি খাইয়া সাধাসিধা মেম্বাররা আবার ফিরে আসে । আবার মাপ দেয় , কিন্তু ভবি ভোলে না । যেই কে সেই । অনেক চিন্তা ভাবনা করে , সাহস সন্চয় করে আবার ওরা এলো চেয়ারম্যান এর কাছে ।
চেয়ারম্যান তো পারলে মারে এইবার । বলে মুর্খের দল তগো মেম্বার বানাইসে কে ? নে খাতা নে । দুই পাশে দুই টা ব্রাকেট দে । মাঝখানে লেখ ৪৯ আর বাম পাশে লেখ ৭ । এই বার বল ৭ এক এ কত হয় ? ৭ না ? তাইলে ওইটা ৪৯ এর নিচে লেখ ।
এক মেম্বার লিখে-
৭) ৪৯ ( ১
৭
-----------
চেয়ারম্যান - এই বার ৪৯ থেকে বাদ গেলো ৭ । তাইলে থাকে কত? ৪২ না ওইটা নিচে লেখ । এই বল ৪২ কে ৭ দিয়া ভাগ করলে কত হয় ? ৬ না ? ওইটা ভাগ্ফলের ১ এর পাশে লেইখা দেখ কত হয় ?
মেম্বার লিখে -
৭ ) ৪৯ ( ১৬
- ৭
-------------
৪২
- ৪২
------
০
চেয়ারম্যান - এক জিনিষ আর কতবার । একবার যোগ দিয়া , একবার গুণ দিয়া , একবার ভাগ দিয়া বুঝাইলাম । এখন যদি তোরা অন্ক ই না বুঝস তো আমি কি করুম ? যা বারি যা যেমনে পারস ভাগ কইরা ল ।
নইলে নিজেরা কামড়া - কামড়ি কইরা মর । খবরদার আমারে আর জ্বালাবি না ।
বন্ধুরা ,
- শুভন্করের ফাঁকি আর
- কাজীর গরু খাতায় আছে গোয়ালে নাই
এই কথাগুলো কোথা থেকে এসেছে বুঝতে পারলেন ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।