সবাইকে আমার নিজস্ব ব্লগ ভিজিট করার আমন্ত্রন রইলঃ www.islameraalo.wordpress.com
পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম ইসলাম যা পরিস্কারভাবে বলে দেয় যদি কোন মুসলিম কুর’আনের কোন বিধান বা কোন আয়াতকে অমান্য করে এমনকি সন্দেহপ্রকাশ করে তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়। মানে সে আর মুসলিম থাকেনা। অন্য কোন ধর্মেই এমন কথা বলা হয়নি। আর পৃথিবীতে যত ধার্মীক আছে তাদের মধ্যে কেবল মুসলিমরাই এমন যারা কুরানের ব্যাপারে না সন্দেহ করে না কোন আয়াতকে অমান্য করে। বাকী অন্য ধর্মের যতই ধার্মীক বা ধর্মগুরু হোক না কেন সে স্বীকার করতে বাধ্য যে ধর্মগ্রন্থের সবু্কিছু সত্য নয়, সবকিছু সম্ভব নয়, অনেক ভুল আছে।
ইসলাম নিয়ে সারা বিশ্বে যত সমালোচনা হয়েছে তার থেকে কয়েক গুন বেশি প্রশংসা হয়েছে। কিন্তু কিচ্ছু ইসলাম বিদ্বেষী শুধু সমালোচনা গুলোকেই প্রচার করে বেড়ায়, পৃথিবীর কত সাহিত্যিক, খেলোয়ার, বিজ্ঞানী, ঐতিহাসিক ইসলামের প্রসংসা করেছে সেসব দেখেও এরা চোখ বন্ধ করে নেই। ভারতে অরুন সৌরি নামেও একজন উগ্র আর.এস.এস কর্মী ইসলামের বিরুদ্ধে বই লিখেছিল। জাকির নাইক যাকে সারা বিশ্বের সামনে নগ্ন করে দিয়েছে যাই হোক, এই আর.এস.এস বা বিজেপি কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দকেই তাদের আদর্শ মনে করে। এরা ইসলাম এবং মুসলিম বিদ্বেষী।
ভারত থেকে মুসলিমদের তাড়াতে পারলেই এদের শান্তি অথচ স্বামীজি ইসলাম এবং মুসলিমদের সমন্ধে বলেছেন -
‘দেখা যাবে ইসলাম যেথায় গিয়েছে সেথায় আদিম নিবাসীদের রক্ষা করেছে। সেসব জাত সেথায় বর্তমান। তাদের ভাষা জাতীয়তা আজও বর্তমান’। [প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য/১১৮ পৃষ্ঠা]
মহাত্মা গান্ধী বলেছেন -
‘মুহাম্মাদ (সা) ছিলেন একজন মহান পয়গম্বর। তিনি সাহসী ছিলেন এবং আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করতেন না।
তিনি কখনও এক কথা বলে অন্য কাজ করতেন না। এই পয়গম্বর ছিলেন ফকিরের মতো। তিনি যদি ইচ্ছা করতেন তাহলে প্রচুর সম্পদ করতে পারতেন। আমি যখন তাঁর দুঃখের কাহিনী পড়ি তখন আমার চোখ দিয়ে কান্না ঝরে পড়ে। তিনি, তাঁর পরিবারবর্গ এবং তাঁর সঙ্গীরা কতই না কষ্ট ভোগ করেছিলেন স্বেচ্ছায়।
তাই আমার মতো একজন সত্যাগ্রহী তাঁর মতো মানুষকে শ্রদ্ধা না করে থাকতে পারে না। যিনি তাঁর মনকে নিবদ্ধ রেখেছিলেন এক আল্লাহর প্রতি এবং তিনি চিরকাল হেঁটেছেন আল্লাহ ভীরুতার পথে। মানব জাতির প্রতি তাঁর সহানুভূতি ছিল সীমাহীন। (Islam and its holy prophet as judged by the Non Muslim world; page- 20)
ঐতিহাসিক ড. তারাচাঁদ বলেছেন -
‘অমুসলিমদের উচিত গরিব, পদদলিত এবং অনাথদের বন্ধু চিরসত্যবাদী মুহাম্মাদ (সা) সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা। মুহাম্মাদ (সা) ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন আরাম ও সুখের জীবন।
তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেন। নিজের পোষাক ও জুতো নিজ হাতে সেলাই করতেন। তিনি তাঁর শত্রুদের ক্ষমা করেছিলেন, দয়া দেখিয়েছিলেন ক্রীতদাসদের প্রতি। তিনি যেমন সাহসী ও অকুতোভয় ছিলেন, তেমনি ছিলেন ভদ্র ও অমায়িক। আমরা অবশ্যই স্বীকার করব যে ইসলামের বিস্তার তলোয়ার দিয়ে রাজ্যজয়ের মাধ্যমে হয়নি, ইসলামের বিস্তার হয়েছে তাঁর ব্যাক্তিত্বের জাদুতে এবং তাঁর আশ্চর্য বাগ্মীতার প্রভাবে।
(Islam and its holy prophet as judged by the Non Muslim world; page- 240)
সি.পি. রামস্বামী লিখেছেন -
‘ইসলাম বলতে কি বোঝায় ? আমি মনে করি এবং বিশ্বের সমস্ত চিন্তাশীল ব্যক্তিও এটা স্বীকার করেন যে বিশ্বের এক এবং একমাত্র সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ধর্ম ইসলাম যা আজ প্রকৃতপক্ষে কাজ করে চলেছে এই বিশ্বে। একজন হিন্দু হয়ে এবং হিন্দু বিশ্বাসের মধ্যে দৃঢ় ভাবে বেষ্টিত হয়েও আমি অত্যন্ত স্পষ্ট ভাবে এ কথা বলছি । (The Eastern times; 22 desember; 1944)
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় বলেছেন -
‘জগতের বুকে ইসলাম সর্বোতকৃষ্ট গণতন্ত্রমুলক ধর্ম। প্রশান্ত মহাসাগর হইতে আরম্ভ করিয়া আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূল পর্যন্ত সমস্ত মানবমন্ডলীকে উদারনীতির একসূত্রে আবদ্ধ করিয়া ইসল্ম পার্থিব উন্নতির চরম উতকর্ষ ল্ভ করিয়াছে।
পন্ডিত জহরলাল নেহেরু লিখেছেন -
‘হযরত মহম্মদের প্রচারিত ধর্ম, এর সরলতা, ন্যায়নিষ্ঠা এবং এর বৈপ্লবিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সমতা ও ন্যায়নীতি পার্শ্ববর্তী রাজ্যের লোকেদের অনুপ্রাণীত করে।
কারণ ঐ সমস্ত রাজ্যের জণসাধারনের দীর্ঘদিন যাবত একদিকে শাসক গোষ্টী কর্তৃক নিপীড়িত, শোষিত ও নির্যাতিত হচ্ছিল, অপর দিকে ধর্মীয় ব্যাপারে নির্যাতিত নিষ্পেষিত হচ্ছিল পোপদের হাতে…. তাদের কাছে এ নতুন ব্যবস্থা ছিল মুক্তির দিশারী।
রবীঠকুর লিখেছেন -
“মুহাম্মাদের আবির্ভাব কালে পৌত্তলিক আরবীয়রা যে তাঁহার একেশ্বরবাদ সহজে গ্রহণ করিয়াছিলে তাহা নহে, তাই বলিয়া তিনি তাহাদিগকে ডাকিয়া বলেন নাই, তোমাদের জন্য যাহা সহজ তাহাই তোমাদের ধর্ম, তোমরা বাপ দাদা ধরিয়া যাহা মানিয়া আসিয়াছে তাহাই তোমাদের সত্য। তিনি এমন অদ্ভুত অসত্য বলেন নাই যে, যাহাকে দশ জন মিলিয়া বিশ্বাস করা যায় তাহাই সত্য, যাহাকে দশ জন মিলিয়া পালন করা যায় তাহাই ধর্ম। একথা বলিলে উপস্থিত আপদ মিটিত কিন্তু চিরকালের বিপদ বাড়িয়া চলিত”। (গ্রন্থঃ সঞ্চয়; প্রবন্ধঃ ধর্মের অধিকার)
শেষে বলব, ইসলামের উপর যতই অত্যাচার হোক ইসলাম পৃথিবী থেকে কখনোই মুছে যাবেনা।
সারা বিশ্বকেই একদিন ইসলামের পতাকাতলে আসতে হবে, আসতেই হবে। শাইখ আবদুল আজিজ বিন বায “ইসলাম পৃথিবীর বুকে সূর্যের মতন যা কখনো পুরোপুরি হারিয়ে যায় না। যদি কোন স্থানে সে অস্তমিত হয়, অন্য আরেকটি স্থান আলোকিত করে জেগে উঠে। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।