বিরিন শট নুরুল ইসলাম নামে এক চোরা ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি করতে গিয়ে পা হড়কে গভীর ম্যানহোলে পড়ে যায়। এলাকায় নুরু চোরা হিসেবে পরিচিত নুরুল ইসলাম কে কেউ দেখতে পারেনা। তাই নুরুল ইসলাম যখন বুঝতে পারলো এত রাত্রে বাঁচাও বাঁচাও করে চিৎকার করলেও তাকে কেউ ঘুম থেকে ওঠে তুলতে আসবেনা তখন সে বুদ্ধি করে ''ইসলাম গেল ইসলাম গেল'' বলে চিৎকার করতে লাগলো। সে চিৎকার শুনে পাড়ার সব লোক ঘুম থেকে ওঠে মুহুর্তের মধ্যে দৌড়ে ছুটে এল আর বোকা বনে গেল। কিন্তু এসেই যখন পড়েছে তখন নিতান্ত অনিচ্ছায় হলেও তারা নুরুকে ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করলো।

আরেকবার নুরু চোরা বাজারে পাবলিকের পকেট মারতে যেয়ে ধরা খেলে শুরু হলো গণকিল। সঙ্গে থাকা নুরুর ছোট চালু ছেলেটা বাবাকে বাঁচাতে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে গিয়ে তাদের পাড়ায় খবর দিল আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন, ইসলামের উপর হামলা হচ্ছে। তো সেই পাড়ার পাশের পাড়া ছিল হিন্দু পাড়া---তাদের সাথে মুসলিমপাড়ার লোকজনের মাঝে মাঝেই ছোট-বড় বিভিন্ন ঝগড়া-ফ্যাসাদ লেগে থাকত। পাড়ার লোকজন ভাবলো, হিন্দুরা মুসলমানদের উপর আক্রমণ করেছে। ফলে মুহুর্তের মধ্যে মহল্লার সব লোক লাঠি-সোটা নিয়ে ছুটে এল।

আর এতগুলো লোককে নুরুল ইসলামের ছেলের সাথে লাঠি-সোটা নিয়ে ছুটে আসতে দেখে নুরুল ইসলামের তথা নুরু চোরার উপর হামলাকারীরা পালিয়ে গেল। এরপর নুরুর পাড়ার লোকেরা সব বেকুব বনে গেল---কোথায় ইসলামের উপর হামলা?!--এতো তাদের পাড়ার নাম্বার ওয়ান চোর নুরুল ইসলামের উপর হাম্লা। হায় খোদা এই বদমাশটারে বাঁচাতে কাজ ফেলে সব ছুটে এলাম! ‘‘এই চোরের পোলা আমাদের বেকুব বানালি কেন?’’ সবাই ধমকে ওঠলো । ‘‘বারে, আব্বারে বাচাইতে হইব না?’’-- নুরু চোরার ছেলের দাঁত কেলানো উত্তর। যাই হোক প্রাণে বেচে গেলেও নুরু চোরা মার খেয়ে সেই যে পঙ্গু হলো আর সারলো না।

তারপর থেকে নুরু চোরার ছেলে মসজিদ থেকে চুরি করা একটা দান বাক্স নিয়ে ইসলামী লেবাস ধরে প্রতিদিন শহরে যাওয়া-আসা শুরু করে আর সারাদিন ধরে ইসলামের নামে টাকা তুলতে থাকে। এভাবে নুরু চোরাদের ভাগ্য অচিরেই বদলে গেল। নুরু চোরার ছেলেকে সে কি করে এটা কেউ জিজ্ঞেস করলে সে বলত ইসলামের খেদমত করি। আমাদের হচ্ছি সেই নুরু চোরা আর তার চালাক ছেলের মত, আমাদের বাপ-চাচারা সারাজীবন তাদের অপকর্মের শাস্তি এড়ানোর জন্য ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে এসেছে, এখন তাদের বাঁচাতে আমরা সেই ইসলামের নামই ঢাল হিসেবে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে চলেছি। আর ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে তোলা টাকা দিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদলে ফেলছি।

নুরুল ইসলামকে জেলে পোরা হলে ইসলাম হয় বন্দী । তার ছেলেকে হালকা মার দেয়া হলে তা হয় ইসলামের অনুসারীদের উপর নির্যাতন, বেদম মার দেয়া হলে তা হয় অমানুষিক নির্যাতন। আর নুরুল ইসলামের উপর হামলা ঠেকাতে গিয়ে কেউ যদি মরে তাহলে আসলে সে মারা যায়না---ইসলামকে বাঁচাতে শহীদ হয়। ।