আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খাল বেদখলের কেচ্ছা

রাজধানীর বেদখল হওয়া খালগুলো নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছে চার দশক ধরে। প্রতিটি প্রাকৃতিক জলাশয় রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। সেই অর্থে এগুলো জনগণের সম্পদ। রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় জনগণের ট্যাঙ্রে টাকায় পোষা হয় প্রশাসনের লোকজনকে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। রাষ্ট্রের টাকায় তাদের জীবনধারণ চললেও নিজেদের দায়িত্ব পালনে তারা কতটা সজাগ, রাজধানীর প্রাকৃতিক জলাশয় খালগুলোর উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা তারই প্রমাণ। রাষ্ট্র তথা জনগণের প্রতি দায়বোধের অভাব থাকায় গত চার দশকে রাজধানীর ১৭টি বড় খালের অস্তিত্ব লোপ পেয়েছে। ২৬টি খালের অস্তিত্ব থাকলেও দখলদারদের কবলে পড়ে এ অস্তিত্ব কতদিন থাকবে- তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। খাল দখল ও ভরাট করে খালখেকোরা তা প্লট বানিয়ে বিক্রি করছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। খাল উদ্ধারের নামে রাজউক, সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ছোট-বড় অনেক অভিযান চালালেও কোনো কাজ হয়নি। অভিযানগুলোর পেছনে দখলবাজদের উচ্ছেদের চেয়ে পকেটপূর্তির অভিলাষ সক্রিয় থাকায় খালগুলো মুক্ত করা সম্ভব হয়নি দখলবাজদের কবল থেকে। প্রতিবারই দেখা গেছে, মোবাইল কোর্টের সাহায্যে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়, ভেঙে ফেলা হয় অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্থাপনা ও বস্তি। কিন্তু অভিযান চালানোর দুই সপ্তাহের মধ্যে তা আবার চলে যায় দখলদারদের হাতে। রাজউক, সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশেই ঘটে জবরদখলের ঘটনা। রাজধানীতে প্রতিটি খাল দখলের চিত্র অভিন্ন। প্রথমে স্রোতবাহী খালের ওপর খুঁটি পুঁতে মাচান বানিয়ে শত শত বস্তিঘর তোলা হয়। তারপর ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভর্তি করা হয় খাল। এক পর্যায়ে গড়ে তোলা হয় পাকা স্থাপনা। গত অর্ধ শতাব্দীতে এ প্রক্রিয়ায় ১৮০ মাইল দীর্ঘ খাল উধাও হয়ে গেছে। ষাটের দশকে যেখানে ঢাকায় ২৫০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ খাল ছিল এখন তার দৈর্ঘ্য বড় জোর ৭০ কিলোমিটার। একের পর এক খাল ও প্রাকৃতিক জলাশয় দখল হয়ে যাওয়ায় রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নাগরিক জীবনে দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। জনগণের ট্যাঙ্রে টাকায় জীবনধারণকারী কিছু ব্যক্তির কৃতঘ্ন আচরণের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে রাজধানীবাসী। এ অবস্থার অবসানে সংশ্লিষ্টরা সচেতন হবেন- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.