গাজীপুরে গার্মেন্ট কারখানায় আগুন লেগে অন্তত ১০ জন অগি্নদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। শ্রীপুর উপজেলার বেরাইদের চালা এলাকায় পলমল গ্রুপের আসওয়াদ নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানায় মঙ্গলবার বিকালে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। গভীর রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। আগুনে তৈরি পোশাকসহ ওই কারখানার চারটি ইউনিট পুড়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে অগ্নিদগ্ধ ১০টি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে।
গত বছর আশুলিয়ায় তাজরীন গার্মেন্টের অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন শ্রমিকের প্রাণহানির পর এটি গার্মেন্ট অগ্নিকাণ্ডের সবচেয়ে বড় ঘটনা। শ্রমিকদের অভিযোগ, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। আগুনে সুতা, তৈরি পোশাক, মেশিনপত্রসহ অন্যান্য মালামালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজীপুরে গার্মেন্ট অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনা দেশের পোশাকশিল্পের ভাবমূর্তিকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করল।
অনুমান করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে। কারখানায় আগুন নেভানোর যন্ত্রপাতি থাকলেও সে অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা কার্যত কোনো কাজে আসেনি। তবে শ্রমিকদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ায় প্রাণহানি সীমিত রাখা সম্ভব হয়। গার্মেন্ট অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি এ শিল্পের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। তাজরীন গার্মেন্টে গত বছর শতাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনা বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাতকে সমালোচনার কেন্দ্রস্থলে পরিণত করে।
এর পর থেকে পোশাক কারখানাগুলোতে আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি বসানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়। গাজীপুরের অগ্নিকাণ্ড প্রমাণ করেছে, এসব উদ্যোগে ফাঁক রয়েছে। গার্মেন্ট শিল্প দেশের প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার সিংহভাগ অর্জিত হয় এ খাত থেকেই। কিন্তু কর্মজীবীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ড নানা কারণে ঘটতে পারে। শটসার্কিট থেকে আগুন লাগার আশঙ্কাই বেশি থাকে। আগুন নেভানোর যথাযথ প্রস্তুতি থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখারও সুযোগ ঘটে। গাজীপুরে গার্মেন্টে আগুন কীভাবে লাগল এবং এ জন্য দায়ী কারা, তা যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবার এবং যারা আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই। আর কোনো পোশাক কর্মীকে যাতে বেঘোরে প্রাণ হারাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকার ও কারখানা মালিকদের এগিয়ে আসতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।