দেশীয় শিল্প বাঁচাতে ১৯টি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা বহালের দাবি জানিয়েছে উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। দেশীয় শিল্প ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত একটি গোষ্ঠী ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে অপচেষ্টা করছে বলে মনে করেন ব্যসসায়ীরা। তাদের দাবি- কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন অপকৌশল ও ছলচাতুরীর মাধ্যমে এ ১৯টি পণ্য আমদানি করছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন স্থলবন্দরের মাধ্যমে এসব পণ্য আমদানিকরা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ১৯টি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- ডুপ্লেঙ্ বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপারসহ সব ধরনের পেপার ও পেপার বোর্ড, মাছ, সুতা, জুস, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, আলু, রেডিও-টিভির পার্টস, সাইকেলের পার্টস, মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিক ওয়্যার, স্যানিটারি ওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিল ওয়্যার, মার্বেল স্লাব, টাইলস এবং মিঙ্ড ফেব্রিঙ্। শুল্ক ফাঁকির মাধ্যমে আমদানি করা এসব পণ্য খোলাবাজারে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা দেশীয় শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে।
তথ্যমতে, শিল্পোদ্যোক্তা ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের জোর দাবির পরিপ্রেক্ষিত গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালের ২৭ জুন ওই ১৯টি পণ্য বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ১৮৩/২০০০/শুল্ক-নম্বরের জারি করা ওই এসআরও (প্রজ্ঞাপন) বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে বুড়িমারী স্থলবন্দরকে। ওই এসআরওর ফলে দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো চরম বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়।
ফলে ওইসব পণ্য উৎপাদনে আরও নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়। নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনের ফলে দেশে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে ওইসব পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প। এমনকি দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভও হয়েছে সুসংহত।
এ অবস্থায় কিছু অসাধু চক্র দেশীয় উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানা ধ্বংসে হীনচক্রান্ত করছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রদান করে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে তদবির করে ওই ১৯ পণ্যের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ওই পণ্য আমদানি হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হবে।
ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, কিছু চক্রের অশুভ চক্রান্তে যদি ১৯ পণ্যের আমদানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয় তাহলে দেশীয় শিল্প নতুন করে ধ্বংসের মুখে পড়বে। বন্ধ হতে পারে শত শত শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এতে বেকার হয়ে পড়বে লাখ লাখ মানুষ। গুটিকয় সুবিধাভোগী লাভবান হলেও দেশের অর্থনীতিতে মারাত্দক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে দেশে উৎপাদন হয় এমন পণ্য আমদানি যাতে না হয়, সেদিকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এ বিষয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দাবি করেছে দেশীয় উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।