রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় দৈনন্দিন খরচ মেটাতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত এক বছর ধরেই রাজনৈতিক সহিংসতা বা জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি দেশের ১৬ কোটি মানুষকে বিপর্যস্ত করেছে। ফলে বাজেট পরিচালনা করা সরকারের পক্ষ দুরূহ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের অলস টাকা ধার নিয়ে সরকার পরিচালনার চেষ্টা চলছে। আজ এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চার ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ব্যাংক থেকে সরকার ঢালাওভাবে ঋণ নিলে বেসরকারি বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ সংকট এড়াতে সরকার ব্যাংকে রক্ষিত অলস টাকার দিকে নজর দিচ্ছে। বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকে যে উদ্বৃত্ত তারল্য জমা রয়েছে তার পরিমাণ ৩৪ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। এ টাকা বন্ডের মাধ্যমে ঋণ হিসেবে নিতে চাচ্ছে সরকার। স্মর্তব্য, বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছরে ব্যাংকিং খাত থেকে ২৫ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়। গত নভেম্বর পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১৫২ কোটি টাকা। এ হিসাবে পরবর্তী ৭ মাসে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সরকার জনতুষ্টিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়ায় বাজেট ঘাটতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ঢালাওভাবে ঋণ নেওয়ার ঘটনায় বেসরকারি ব্যাংকগুলো অসন্তুষ্ট হলেও তাদের করার কিছু নেই। কারণ সরকার যে ঋণ নেয় তাতে যে লভ্যাংশ দেওয়া হয় তার পরিমাণ আমানতের ক্ষেত্রে দেওয়া লভ্যাংশের কাছাকাছি। তবে উদ্বৃত্ত তারল্য স্বল্পমেয়াদে বিনিয়োগ করলে ব্যাংকগুলো সেই লোকসানের হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া দুনিয়ার প্রায় সব দেশেই সরকার ব্যবস্থার অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ঢালাও ঋণ গ্রহণের পথ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জনতুষ্টির নামে ঋণের পঙ্কে ডুবে থাকাও কোনো ভালো সরকারের লক্ষণ বলে বিবেচিত হতে পারে না। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার স্বার্থে এ বিষয়ে সংযমী হতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।