রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে সিলেটে তৎপর হয়ে ওঠেছে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আনা হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক। কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামও আসছে। সিলেট বিভাগের অন্তত ১৫টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এসব অস্ত্রের চালান আসছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। অস্ত্রের চালান ধরতে সীমান্ত এলাকায় পুলিশি নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। গতকাল সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল চা বাগান দিয়ে আসার সময় একটি অস্ত্রের চালান আটক করেছে বিজিবি। এর আগে গত সপ্তাহে গোয়াইনঘাট উপজেলার পান্তুমাই সীমান্ত দিয়ে আসা আরেকটি অস্ত্রের চালান আটক করেছিল পুলিশ। একটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দলের ক্যাডারভিত্তিক গ্রুপগুলো অস্ত্রের মজুদ বৃদ্ধি করছে। সিলেট বিভাগের চার জেলার ১৫ সীমান্ত দিয়ে পেশাদার চোরাকারবারি ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে তারা ভারত থেকে অস্ত্র ও বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত বিস্ফোরক নিয়ে আসছে। সীমান্তগুলো হচ্ছে_ সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটের সোনারহাট, পান্তুমাই, রাধানগর, লালাখালের উৎসমুখ, জাফলংয়ের বল্লাঘাট, তামাবিল, কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলা, ছাতকের বনগাঁও, তাহিরপুরে টেকেরঘাট, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলার লাঠিটিলা, ফুলতলা, কুলাউড়ার শরীফপুর, চাতলাপুর। ভারত থেকে আসা অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে পিস্তল, শটগান, উন্নতমানের পাইপগান ও গুলি। এ ছাড়া বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জামাদির মধ্যে গন্ধক, সালফার, সোডিয়াম ক্লোরাইড ও ডেটিনেটর। গতকাল ভোর রাতে সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল সীমান্ত থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কিছু সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে বিজিবি। এ সময় আটক করা হয় দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে। বিজিবি ৪১ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মাহবুব সাবের জানান, আটককৃতরা একটি কিলিং মিশনে অংশ নিতে ভারত থেকে অস্ত্রগুলো নিয়ে আসছিল।
এদিকে গত ২৪ অক্টোবর গোয়াইনঘাট উপজেলার পান্তুমাই সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আনার সময় আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুই ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। গত জুন মাসে গোয়াইনঘাট উপজেলার সোনারহাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আসা বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রের একটি চালান আটক করে পুলিশ। ওই মাসে সিলেট মহানগর পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে নগরী থেকে আরও ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করে। যেগুলোর বেশিরভাগই ভারতের তৈরি বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রাসঙ্গিক বিষয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মকবুল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতাকে পুঁজি করে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা তৎপর হয়ে ওঠেছে। পুলিশ আগাম খবর পেয়ে সীমান্ত এলাকায় তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। ফলে সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র প্রবেশের সময় ধরাও পড়ছে। অস্ত্রের চালানরোধে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।