রপ্তানির আড়ালে চলছে বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনা। অস্তিত্বহীন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া এলসির বিপরীতে অর্থ পাঠিয়ে শত শত কোটি টাকা পাচার করা হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতির জন্য কুখ্যাতি অর্জনকারী বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে রপ্তানির আড়ালে। এই জালিয়াত প্রতিষ্ঠানটি রপ্তানির নামে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলে ও ফরেন ডকুমেন্টারি বিল কিনে পাঁচটি ব্যাংক থেকে এক হাজার ১৭৬ কোটি টাকা আত্দসাৎ করে। বিসমিল্লাহ গ্রুপের মালিক দুবাইয়ে একটি বেনামি প্রতিষ্ঠানে রপ্তানি দেখিয়ে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্দসাৎ করেন। জালিয়াতির এই হোতা সপরিবারে বিদেশে অবস্থান করায় ব্যাংক তার পাওনা আদায় করতে পারছে না। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে শত শত প্রতিষ্ঠান। রপ্তানি করে অর্থ ফেরত আনা হয়নি এমন অপ্রত্যাশিত অর্থের পরিমাণ ২২০ কোটি ডলার বা প্রায় ১৭ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। এ টাকা দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব। রপ্তানিকৃত পণ্যের অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যৌক্তিক কারণ ছাড়া ফেরত আনতে বাধ্য হলে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকের বিরুদ্ধে আগে মামলা করা হতো। এ ধরনের মামলা করত বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরো। তবে ব্যুরো বিলুপ্ত হয়ে দুদক গঠন হওয়ার পর আর মামলা হয় না। মূলত দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সিআইডির মধ্যে কে মামলা করবে বা কে তদন্ত করবে এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের অভাবে মামলা হচ্ছে না। পাচারকারীদের জন্য তা সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে। রপ্তানিকৃত পণ্যের অর্থ ফেরত না আনার পাশাপাশি রপ্তানিতে মূল্য কম দেখিয়ে আর আমদানিতে বেশি দেখিয়ে অর্থ পাচার হয়ে থাকে। রপ্তানির অর্থ যথাসময়ে ফেরত না এনে অনেক ক্ষেত্রে সে অর্থ দেশের বাইরে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় এটি বড় ধরনের অপরাধ বলে বিবেচিত হলেও রপ্তানিকারকদের অনেকেই হরহামেশা এ অপরাধটি করে থাকেন। এ জন্য দুদককেই মামলা করতে হবে তেমন নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধ হওয়া দরকার। প্রয়োজনে পাচারকারীদের ধরতে কড়া আইন প্রণয়নের কথা ভাবতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।