তখন কীসে পড়ি? ক্লাস এইট কি নাইন হবে হয়ত। একদিন মায়ের সাথে তর্ক করতে করতে দুম করে বলে দিয়েছিলাম- "ধুর! তোমার ওসব আল্লা ফাল্লা আমি মানি না..." মাতো শুনে থ। রেগে একবেলার খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল সেদিন।
তারপর সময় পেরিয়েছে। মা আমাকে বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত হয়ে একদিন হাল ছেড়ে দিয়েছে সময়ের হাতে।
তাতে কাজও কিছুটা হয়েছে অবশ্য। সময়ের প্রবাহ আমার গোঁয়ার চেতনার (লোকে তো তাই বলে) যৎসামান্য যা বিবর্তন ঘটিয়েছে তাতে আমি আমার প্রাথমিক উগ্র নাস্তিকপনা থেকে সরে এসে আপাতত নিউট্রাল হয়েছি। মানে আমি তোমার আল্লা বা ভগবানের অস্তিত্ব নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলব না; তুমিও আমার স্বাধীনচারিতা নিয়ে কোন প্রশ্ন করতে পারবে না।
আসলে হয়েছে কি.. আজ সন্ধ্যাবেলায় আমার এক সহকর্মী-দিদি এসেছিল আমাদের বাড়ি। এসে মাকে ডেকে বলল যে আমাকে কাল ফোঁটা দিতে চায় যদি মায়ের না কোন সমস্যা (ধর্মীয় বা অন্য কিছু) থাকে।
অস্বীকার করব না, দিদির কথা শুনে আমার বুকটা ঢিপ ঢিপ করছিল.. এই বুঝি আমার ক্লাস ফোর পাশ, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ধর্মপ্রাণ মা উল্টা পাল্টা কিছু বলে বসে.. কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে মা যেটা বলল তার সারমর্ম এই- "আমার একটা দিদির বৃদ্ধিতে মায়ের কোন আপত্তি নেই.. বিশেষ করে দিদি যদি দিদির মত হয়.. মায়ের নাকি বয়স হচ্ছে,আমার ওপর আর সে ভাবে নজরদারী করতে পারে না, সেক্ষেত্রে একজন ভালো দিদির গাইড্যান্সে থাকলে ছেলেটা হয়ত আর গোল্লায় যাবে না.."
আচ্ছা, মা ভিতরে ভিতরে এতটা পরিণত বুঝদার কি ভাবে হল? মাতো আমার মত আর বিবর্তন বাদের থিওরি কিম্বা চাণক্যের শ্লোক পড়েনি। এ নিশ্চয় দিনরাত বাংলা সিরিয়াল দেখার ফল।
তা সে যাই হোক, আমাদের রবিবাবু একদা রাখিবন্ধন উৎসবকে ধর্মীয় বেড়াজাল থেকে বার করে এনে সেকুলার বানিয়েছিলেন। আর আজ আমি এই মুকুল ভাইফোঁটা উৎসবটিকে নিউট্রাল বানানোর চেষ্টা করছি..
অতয়েব সবাই বলো-
জয়, মুকুল বাবার জয়
না না, এটা ঠিক হল না, বলো-
জয়, মুকুলের দিদির জয়
না না, শুধু তাই বা কেন? বলো-
জয়, মুকুলের মায়ের জয়
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।