সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মহাজোট সরকারের এ দুই ক্ষমতাধর মন্ত্রীকে তাদের সম্পদের হিসাব দিতে দুদক কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দেওয়া হলফনামার তথ্যানুযায়ী, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী রুহুল হকের ব্যাংক হিসাবের অর্থ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১০ গুণ। এর বেশির ভাগই স্ত্রী ইলা হকের নামে। পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী মাঠে নামার সময় দুজনের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ১০৮ টাকা। এখন তার পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৩ টাকা। ইলা হকের নামে ২০০৮ সালে ব্যাংক ব্যালেন্স ছিল মাত্র চার লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে তা সাত কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকায় পেঁৗছেছে। এ ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬৫ গুণ। অন্যদিকে, রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ২০০৮ সালে ছিল প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে প্রায় দুই কোটি ৬৩ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। হলফনামা অনুযায়ী, মাহবুবুর রহমান গত পাঁচ বছরে ২০ একর থেকে দুই হাজার ৮৬৫ একর জমির মালিক হয়েছেন। পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ছাড়া কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ না থাকা স্ত্রীর নামে এখন এক কোটি ২৬ লাখ ৭১ হাজার টাকার সম্পদ। নিজের ৩৬ লাখ ৩৩ হাজার ১১২ টাকার স্থাবর সম্পত্তি পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ৭২ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামায় তার একমাত্র আয় দেখানো হয় খণ্ডকালীন রাখি মালামাল থেকে, যার পরিমাণ ছিল বছরে মাত্র দুই লাখ ১৫ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে তিনি এখন শুধু মৎস্য উৎপাদন ও বিক্রয় খাত থেকে বছরে আয় করেন এক কোটি ৫০ লাখ টাকা। ডা. আ ফ ম রুহুল হক ও মাহবুবুর রহমানের সম্পদ গত পাঁচ বছরে যেভাবে বেড়েছে তা একমাত্র আলাদীনের চেরাগের দ্বারাই সম্ভব। এ সম্পদ তারা কীভাবে অর্জন করেছেন সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুর্নীতি দমন কমিশন। আমরা আশা করব, সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সম্পদের হিসাব নেওয়ার প্রক্রিয়া নিছক লোকদেখানো বিষয় বলে বিবেচিত হবে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া হিসাবে অন্য যাদের সম্পদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আলাদীনের চেরাগের স্পর্শ অনুমিত হচ্ছে তাদের ব্যাপারেও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল মহাজোটের পক্ষ থেকে। সে প্রতিশ্রুতি পূরণে এক মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রী নয় অন্য সব রাঘববোয়ালের সম্পদ নিয়েও তদন্ত হওয়া উচিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।