আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৃত্যু উপত্যকা কাম্য নয়

গত এক বছরে সহিংস রাজনীতি ও অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে দেশের প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারাচ্ছে একের পর এক মানুষ। গার্মেন্টে পুড়ে ও ভবন ধসে শত শত মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে চলতি বছর রেকর্ড সংখ্যক লোক হয়েছে হতাহত। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের মানুষ। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে নিরাপত্তাহীনতা। প্রকাশ্যে রাজপথে তাদের পিটিয়ে হত্যা করছে দুর্বৃত্তরা। গাড়িতে পেট্রলবোমা ছুড়ে কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ। সাধারণ খুন, পারিবারিক সহিংসতা, সড়ক দুর্ঘটনা সব মিলিয়ে হঠাৎ করে অপঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে বাংলাদেশকে মৃত্যু উপত্যকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। স্বাভাবিক মৃত্যু মানুষের একটি সহজাত অধিকার। রাজনৈতিক হানাহানি ও সংঘাতে এ অধিকার আজ হাতছাড়া হতে চলেছে। একের পর এক সহিংসতায় একদিকে যেমন হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে দিন দিন বিপর্যস্ত হচ্ছে অর্থনীতি। বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে অভ্যুদয়ের যে আশা সৃষ্টি করেছিল রাজনৈতিক সহিংসতা তার ইতি ঘটাতে চলেছে। রাজনীতি থেকে মানবিক উপাদানগুলো অপসৃত হওয়ায় তা প্রতিদিনই হিংস মূর্তিতে আবিভর্ূত হচ্ছে। আজকের বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে রাজনীতিকদেরই আত্দত্যাগে। দেশের স্বাধীনতার জন্য তাদের অবদান প্রাতঃস্মরণীয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন নিয়ে তারা যে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন তা দুর্ভাগ্যজনক। নিজেদের নাক কেটে অপরের যাত্রাভঙ্গের যে অবিমৃষ্যকারিতার পরিচয় তারা দিচ্ছেন তা কাম্য হওয়া উচিত নয়। সরকার ও বিরোধী দল দুই পক্ষই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের কথা বলছেন। কিন্তু এ নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে একমত হতে পারছেন না নিছক জেদের কারণে। সরকার ও বিরোধী দলের আস্থার সংকট অতীতে রাজনীতিকদের জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছে। দেখেশুনে মনে হচ্ছে কেউই তা থেকে শিক্ষা নেননি। বলা হয়, ইতিহাসের শিক্ষা হলো ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেওয়া। এই প্রবাদ বাক্যের যথার্থতা প্রমাণে রাজনীতিকরা পিঠে বেঁধেছি কুলো আর কানে দিয়েছি তুলো নীতি গ্রহণ করেছেন। কোনো আবেদন-নিবেদন তাদের কানে যাচ্ছে না। আমরা মনে করি দেশবাসীকে তারা মৃত্যু উপত্যকার দিকে ঠেলে দেওয়ার যে বোকামি করছেন তা কারোর জন্যই মঙ্গল ডেকে আনবে না। নিজেদের স্বার্থেই সংঘাতের বদলে সমঝোতার পথে তাদের এগিয়ে আসা উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.