ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ক্রীড়াবিদ, সংগঠক ও কোচদের জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত করে সম্মান জানানো হয়। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি করে এ পুরস্কার তুলে ধরা হয়। পুরস্কার পেয়ে অনেককে আবেগে চোখের পানিও ফেলতে দেখা গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে ক্রীড়াবিদদের জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, নিজের হাতে তিনি আর কাউকে পুরস্কার তুলে দিতে পারেননি। ১৯৮০ সালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এক সঙ্গে চার বছরের পুরস্কার ক্রীড়াবিদদের হাতে তুলে দেন। সেই থেকে শুরু, কিন্তু পুরস্কার নিয়ে প্রতিবারই কমবেশি বিতর্ক হচ্ছে। কেননা যোগ্যতার বদলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দলীয় পরিচয়ে ক্রীড়াঙ্গনে দেশসেরা এ সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে নওশের, ওয়াজেদ গাজী, খালেদ মাহমুদ সুজন বা খালেদ মাসুদ পাইলটদের মতো বিখ্যাত ক্রীড়াবিদরা এখনো জাতীয় পুরস্কারের মেডেল গড়ায় ঝুলাতে না পারলেও জীবনে কোনোভাবে খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত না থাকার পরও অনেকে এত বড় সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। নাম বাছাই করতে যে কমিটি গঠন করা হয় সেখানেও রয়েছে বিতর্ক। যোগ্যতার বদলে এখানে উৎকোচের বিনিময়ে পুরস্কারের জন্য অনেকের নাম তোলার অভিযোগ রয়েছে। প্রতি বছরই দেওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান সরকার আমলে মাত্র দুই বার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়েছে। ২০১১ সালে ২০০৮, ২০০৯ সালের ক্রীড়াবিদদের পুরস্কারে ভূষিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে অবশ্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বা ক্রীড়া পরিষদ থেকে বলা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে তাদের কিছুর করার নেই। কারণ নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তাদের কাজ শেষ করার পরই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতবার কেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণ করা হয়নি- এ ব্যাপারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব শিবনাথ রায় বলেন, দেখেন মন্ত্রণালয় বা ক্রীড়া পরিষদের দায়িত্ব হচ্ছে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা কিন্তু কারা কারা এত বড় সম্মানের যোগ্য তা বাছাইয়ের জন্য কমিটি রয়েছে। দেশের খ্যাতনামা ক্রীড়াবিদদের নিয়ে কমিটি হয়েছে। এখন তারা যদি সময়মতো নাম বাছাই করতে না পারেন তাহলেতো অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। চলতি বছরের জুন ও জুলাইয়ের মধ্যে ২০১০ ও ২০১১ সালের পুরস্কার বিতরণের কথা ছিল কিন্তু সবকিছু ঠিক না হওয়াতে তা করা যায়নি। এখন আবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২০১২ সালের পুরস্কারও দেওয়া হবে। সুতরাং নাম বাছাইয়ে সময় লাগছে বলে এখনো অনুষ্ঠান করা যায়নি। তবে খুব শীঘ্রই বাছাই কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই আশা করছি সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে। ২০১২ সালে না হলে টানা দুই বছর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে না। শিবনাথ বলেন, এর আগেও অনেক গ্যাপ দিয়ে এক সঙ্গে বেশ কয়েক বছরের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আশা করছি ডিসেম্বরের আগেই অনুষ্ঠান করতে পারব।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।