চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। অব্যাহত হরতাল আর অবরোধে, বিশেষ করে পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত খাতেও। নভেম্বর শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। যা অক্টোবরে ছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। গতকাল মূল্যস্ফীতির এ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ার জন্যই মূলত জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এতে মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস উঠেছে বলে মত দিয়েছেন তারা। বিবিএসের তথ্যমতে, অক্টোবরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। কিন্তু নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত খাতেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। অক্টোবরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। মূলত চাল, ডাল, মাছ ও অন্যান্য দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে মনে করে বিবিএস। বিশেষ করে পরিবহন ব্যবস্থার অবনতির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। হরতাল ও অবরোধের কারণে পণ্য সরবরাহ কম হচ্ছে। হরতাল অবরোধ রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যবসায়ীদের ওপর প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, যে রিকশা ভাড়া আগে ৩০ টাকা ছিল তা এখন বেড়ে ৬০ টাকা দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া গ্রাম অঞ্চলে আমন ও বোরো কাটা শুরু হয়েছে, যে কারণে পারিশ্রমিক বাড়ছে।
এদিকে টানা হরতাল-অবরোধে থমকে গেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। ক্যাম্পাস সচল না হওয়ায় ভবিষ্যৎ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ২৬ অক্টোবর ঈদুল আজহা ও পূজার দীর্ঘ ছুটি শেষে ক্যাম্পাস খুললেও সচল ছিল মাত্র ৮-১০ দিন। এরপর ১৮-দলীয় জোটের ডাকা টানা হরতাল-অবরোধের ফাঁদে আটকে গেছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন। স্থবির হয়ে গেছে ফাজিল-কামিল পরীক্ষার কার্যক্রম। ১২ ডিসেম্বর ফাজিলের ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও অবরোধে তা প্রকাশ করা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ ছাড়া টানা অবরোধে ভেঙে পড়েছে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডও। হরতাল ও অবরোধের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দফতরসহ কোনো ভবনেরই তালা খোলা হচ্ছে না। অবরোধের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা তিন দফায় স্থগিত করা হয়েছে। কবে নাগাদ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এখন পর্যন্ত তারিখ ঘোষণা করতে পারছে না প্রশাসন।
আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র হুমায়ূন কবীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, '২৮ জানুয়ারি মাস্টার্সের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রয়োজনীয় ক্লাস শেষ করতে পারেননি শিক্ষকরা। বিভাগটি সেশনজট মুক্ত থাকলেও টানা অবরোধের কারণে হয়তো সেশনজটের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছি।'
ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, 'ক্যাম্পাসটি পরিবহননির্ভর হওয়ায় অবরোধে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারছি না।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হলে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব।'
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।