সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষকে দুটি করে চোখ দিয়েছেন। চোখ মানব দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যার চোখ নেই সেই বোঝে চোখ কতটা প্রয়োজনীয়। কাউকে যদি বলা হয় আপনাকে এক কোটি টাকা দেব বিনিময়ে আপনার একটা চোখ দিয়ে দেন আশা করি সে কস্মিনকালেও রাজি হবে না। যদি না সে সুস্থ মস্তিস্কের হয় অথবা বিশেষ কোন পরিস্থিতি সামনে আসে।
চোখে অন্ধ মানুষ আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধি হিসেবে বিবেচিত। যিনি দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ২ কোটি ৪০ লক্ষ প্রতবন্ধি মানুষের একজন। কাজেই চোখের বিকল্প শুধুই চোখ।
চোখের দুই ধরণের কাজ হয়ে থাকে। সোজা বাংলায় বাহ্যিক কাজ এবং আত্মিক/গুরুতত্ত্ব কাজ।
চোখের বাহ্যিক কাজ হল চোখ দিয়ে দৃশ্যমান কোন কিছু দেখা। অপরদিকে আত্মিক/গুরুতত্ত্ব কাজ অনেক বেশি গভীর। একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা গেলে এর গভীরতার কিয়দাংশ হলেও বোঝা যাবে। প্রশ্নটি হল- সৃষ্টিকর্তা কেন মানুষের দুটো চোখ দিলেন? আমি এর বৈজ্ঞানিক বা ডাক্তারি ব্যাখ্যা চাচ্ছি না। বরং আত্মিক/গুরুতত্ত্ব ব্যাখ্যাই এখানে মুখ্য।
সৃষ্টিকর্তা মানুষের একটি চোখ দিয়েছেন যে চোখ দিয়ে মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনে করা নিজের ভুলগুলো অবলোকন করবে। যাতে সংশোধন এর পথ বেছে নিয়ে নিজের ব্যক্তি জীবন, সমাজ জীবন, রাষ্ট্র জীবনকে সুন্দর করতে পারে। সংশোধন করে সেটি কেমন হবে তার জন্য একটা নমুনা প্রয়োজন। সেই কাজটি করবে অপর চোখটি। যার কাজ হল অন্য একজন মানুষের গুনাবলী অবলোকন করা।
শুধুমাত্র দুটি চোখের আত্মিক/গুরুতত্ত্ব কাজকে যথার্থভাবে পরিচালনা করে একটা মানুষের বাহ্যিক এবং আত্মিক সংশোধনের অনেকাংশ সম্পন্ন করা যায়। যদি এর উল্টোটি হয় অর্থাৎ এক চোখকে নিজের গুন দেখার কাজে এবং অপরটিকে অপরের দোষ অনুসন্ধানে ব্যবহার করি তবে এ কথা নির্দ্বিধায় বলে দেয়া যায়, হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
এবার আসা যাক কি করে বোঝা যাবে চোখের কাজ সুচারুরূপে হচ্ছে। যে কোন কাজ করার পর যদি সেই কাজটি ভুল হয়েছে বলে অনুমেয় হয়, নিজের ভেতর অনুশোচনার বোধদয় হয় এবং ভবিষ্যতে না করার সংকল্প মনে বদ্ধমুল হয় তবে বুঝতে হবে এক চোখ তার আত্মিক/গুরুতত্ত্ব দ্বায়িত্ব যথার্থই পালন করছে। অপরদিকে অপর কোন মানুষের যে কোন ভাল কাজ দেখে যদি উপলব্ধি করা যায়, দৃঢ় হয়ে সেই ভাল কাজটি নিজের ভেতরে নিয়ে আসার চেষ্টা করা যায় এবং আনতে পারলে অপর চোখটির যথার্থ দ্বায়িত্ব পালনের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তবে যেটা না বললেই নয়, প্রথম মোদ্দা কথা হচ্ছে কোনটা ভাল কোনটা অন্যায় তা আগে চিনতে হবে। এবং অবশ্যই ভালকে ভাল, অন্যায়কে অন্যায় হিসেবে চিনতে হবে।
কাজেই আমরা সকলেই যেন নিজেদের সংশোধনের পথ বেছে নেই। যার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমরা আমাদের চোখের যথার্থ আত্মিক/গুরুতত্ত্ব ব্যবহার নিশ্চিত করে আমাদের দৈনন্দিন জীবন তথা ব্যক্তি জীবন, সমাজ জীবন, রাষ্ট্র জীবনকে সুসংগঠিত করতে পারি এটাই কাম্য। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।