শীতবস্ত্র দেওয়াটা এখন পুরোদস্তুর ফ্যাশন, লোকদেখানো আচার, পাবলিসিটি স্টান্ট, আলগা ভাব! এখন দেশে এমন শীত পড়া শুরু করেছে যে, কম্বল-সোয়েটার-মাফলারে শীত মানবে না। তার উপর দুস্থ-নিরাশ্রয় মানুষেরা শত কাপড় জড়ালেও শীতে কাবু হয়ে মুমূর্ষূ হয়ে পরছে। কারণ, তাদের অনেকেরই নেই উপযুক্ত আশ্রয়স্থল, রাতে শোবার জায়গা! আবার যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই আছে, তা'ও আবার না থাকারই শামিল! তাদের ঘরে বর্ষায় পরে পানি, গ্রীষ্মে কাক-ফাটা রোদ, শীতে হাড়-কাঁপানো কুয়াশা!! অথচ, স্বচ্ছল মানুষদের স্বার্থপর আচরণে এবং সরকারের লীলাখেলায় এই শীতেও হচ্ছে ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং! গ্যাসের তীব্রতর সংকটে জ্বালানী হিসেবে বিদ্যুতের উপর অতিরিক্ত চাপ তো আপাত দৃষ্টিতে যৌক্তিক; তবে যারা ফটোসেশন করে "লুঙ্গি-পরা নগ্ন-পায়ের পুরুষদের" চাদর দান করে, "ছিন্ন-শাড়ী-পরা নারীদের" সোয়েটার দান করে; তারা ঠিকই তাদের ইটের প্রাসাদে গিয়ে, ৩ স্তরের পোশাক আপাদমস্তক পড়ে, রুম-হিটার অন করে, তিব্বতী কম্বল মুড়ো দিয়ে, গরম-গরম চিকেন স্যুপ খায় আর টিভিতে ফ্যাশন শো দেখে ! ব্যানার-পোস্টার-ফেসবুক ইভেন্ট করে "শীতবস্ত্র বিতরণ"-এর যে আনুষ্ঠানিকতা করা হয়, তাতে গ্রামাঞ্চলের আসল ভুক্তভোগ মানুষেরা সবসময়-ই বঞ্চিত থাকে! দেখা যায়, শহরের একই স্পটে একই দর্শকদের কাছে একই নাটক প্রদর্শন করে কিছু হুজুগে ভাঁড়; ক'দিন পরে সেই দর্শকদের-ই কেউ বসে যায় অতিরিক্ত কাপড়-গুলো বিক্রি করে কিছু উপড়ি রোজগারের জন্য ! এতকিছুর পরেও কিছু মানুষ আছেন যারা শীতার্ত মানুষদের সাইক্লোন সেন্টারে যাওয়ার পথ দেখিয়ে দেন, পাদুকা বিহীন বৃদ্ধকে পাম-শু কিনে দেন, "ভেন্টিলেশন-ড্রেস" লুঙ্গি পরা রিকশাওয়ালাকে পুরানো প্যান্টটা দান করেন, ঘরের কাজের বুয়াকে তার বাচ্চাদের জন্য শীতবস্ত্র দেন, কাশতে থাকা যে যুবক কাশির ঔষধ হিসেবে বিড়ি টানে তাকে সদুপদেশ দেন, ঠাণ্ডায় গলা বসে যাওয়া অফিসের দারোয়ানকে ঔষধ কিনে দেন! ভালো কাজ হওয়া উচিত নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মত, ক্ষণজন্মা, নিঃশব্দ; নিতম্ব হতে নির্গত গ্যাসের মত নয়, যার থাকে গন্ধ অথবা শব্দ অথবা দুটোই! [[ পারসোনালি নিবেন না ভাই। একটা সত্যি কথা বলি, কদিন ধরেই বিভিন্ন মহল (আমার পরিচিত বিভিন্ন জায়গা) থেকে শুধুই প্রেসার আসছিল শীতবস্ত্র দেওয়ার জন্য। ঘরে যা আছে, সবই প্রথম কয়েক জায়গায় দিয়ে দিয়েছি, এরপরে আসা এক গ্রুপকে টাকাও দিয়েছি; এখন যখন মাঘ মাস আসন্ন, বাকিরা পেইন দিচ্ছে, আর নানান কথা বলছে। বলে নাকি শুধু ফেসবুকে "লাইক" পাওয়ার মধ্যেই আমার কাজকর্ম সীমাবদ্ধ! তাদেরকে বলেও বিশ্বাস করানো যায় না। এসব মৌসুমী সমাজসেবীদের জন্যই অতিষ্ঠ হয়ে এই লেখাটি লেখা! ]]
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।