শিক্ষক জ্ঞানের আলো দিয়ে শিক্ষার্থীর মনের চোখ খুলে দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ফারজানা আক্তার ওরফে ইমুর বেলায় তা হয়ে গেছে নির্মম এক ঘটনা। শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমের কলমের খোঁচায় তার একটি চোখ গুরুতর জখম হয়েছে।
গত রোববার কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার নান্দিনা ভাগলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা (১০) বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মওলাসহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আহত স্কুলছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান। সেখানে আহত স্কুলছাত্রী ও তার স্বজনদের সান্ত্বনা দেন তাঁরা।
পরে তাত্ক্ষণিকভাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মওলা অভিযোগ ওঠা শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম ও কর্তব্যে অবহেলার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন জাহানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলো ডটকমকে তিনি বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
মামলার প্রাথমিক কার্যক্রম চলছে। এই অমানবিক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
বিদ্যালয়, এলাকাবাসী ও শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বিজ্ঞান ক্লাসে নান্দিনা গ্রামের ব্যবসায়ী মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে ফারজানাকে পড়া না পারার কারণে সহকারী শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম প্রথমে চড় মারেন। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে কলম দিয়ে খোঁচা মারলে ফারজানার বাম চোখে মারাত্মক জখম হয়। এ অবস্থায় তাঁকে চিকিত্সার জন্য না পাঠিয়ে বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে বাধ্য করেন ওই শিক্ষিকা।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের চিকিত্সক অধ্যাপক শাহজাহান চৌধুরী জানান, ছাত্রীর চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এর পরও ছাত্রীটি শঙ্কামুক্ত নয় বলে তিনি জানান। তার চোখের মণিতে আঘাত লেগেছে।
ফারজানার বাবা মো. সেলিম মিয়া এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
অন্যথায় থানায় মামলা করার কথা জানান তিনি।
কিশোরগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির শিক্ষাবিষয়ক কমিটির সভাপতি আবদুল গণি বলেন, ‘এমন অমানবিক ঘটনা আমার শিক্ষকতা জীবনে দেখিনি। একজন অভিভাবক হিসেবে আমিও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ’
এ ব্যাপারে শাহনাজ বেগম ও প্রধান শিক্ষক নাসরিন জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।