বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে এসে যে যে মন্ত্রণালয় চাইবেন সেগুলোই দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকালে গণভবনে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিরোধীদলীয় নেতার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ থাকলে সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিতে দলের এমপিদের নাম দিন। যে যে মন্ত্রণালয় চান বলুন, দেওয়া হবে। নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জরিপ ও তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে। কাকে প্রার্থী দিলাম সেদিকে না তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নৌকাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করুন। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে। তারা ইচ্ছা মতো বদলিও করতে পারবে। সারা বিশ্বের সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবেই নির্বাচনের ধারা আমরা শুরু করে যেতে চাই। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা দেশে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাব। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে বলেন, দেশ, জনগণ, গণতন্ত্র ও সংবিধানের স্বার্থে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যাতে কেউ নস্যাৎ করতে না পারে, সে জন্য সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাইকে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। মনে রাখবেন, নিজেরা প্রার্থী হতে গিয়ে যদি দলীয় মন্ত্রী-এমপিদের সমালোচনা করেন তবে ভোটারদের কাছে নিজের অবস্থানকেই নড়বড়ে করে ফেলবেন। কারণ বর্তমান মন্ত্রী-এমপিরা যদি ব্যর্থ হন, তবে এত উন্নয়ন হলো কীভাবে? মন্ত্রী-এমপিরা উন্নয়ন করেছেন বলেই আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা-বিশ্বাস বেড়েছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধীরা এক হয়েছে। তারা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠুক তা চায় না। সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকুক তাও চায় না। এরা ক্ষমতায় এলে দেশের সবকিছু অর্জন আবার ধ্বংস করে দেবে। শান্তি, উন্নয়ন, কল্যাণ, ভাগ্য-উন্নয়ন এবং জঙ্গি-সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশের জন্য দেশের জনগণ আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করবে ইনশাল্লাহ। সমঝোতার পথ ছেড়ে হরতালের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার জন্য বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকতে তিনি (খালেদা জিয়া) যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে রক্তস্নাত পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। এখন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় তিনি হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন, হরতালের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র হোক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে, রায়ও কার্যকর হবে।
এর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যাকে মনোনয়ন দিলে জয় পাওয়া যাবে, তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। জনপ্রিয়তা যাচাই করে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, সবাই এক থাকলে সামনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলের উপ-দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, ওবায়দুল কাদের, সাহারা খাতুন, এইচ টি ইমাম, ড. মসিউর রহমান, গওহর রিজভী প্রমুখ। উল্লেখ্য, ৩০০ সংসদীয় আসনে দুই হাজার ৬১১ জন মনোনয়ন প্রার্থী আওয়ামী লীগের ফরম কিনেছেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।