আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কার কাঁধে নেবে এই লাশের কফিন?

১. কার কাঁধে নেবে এই লাশের কফিন? রাজনীতির জুয়া খেলায় মগ্ন সরকার ও বিরোধী দল। ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ- রাজনীতিবিদদের মুখে শুনে আসা এই বাণী আজ পরাহত ক্ষমতার লড়াইয়ের কাছে। মানুষের জীবনের চেয়েও ক্ষমতার মসনদ কত মূল্যবান আবারও তার প্রমাণ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সংলাপ, সমঝোতা কিছুই হয়নি। সরকারের অনুগত নির্বাচন কমিশন বোধহীন আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানের মতো সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা না করেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট ঘোষণা করে দিয়েছে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌ পথ অবরোধ। দেশজুড়ে প্রথম দিনের সহিংসতায় সাতটি লাশ পড়েছে। নিহত হয়েছেন একজন বিজিবি সদস্যও। কোনো রাজনৈতিক নেতার লাশ নয়, কোনো রাজনৈতিক নেতার সন্তান-সন্ততির লাশ নয়। লাশ পড়েছে মাঠকর্মীর। লাশ পড়েছে সাধারণ মানুষের। লাশ পড়েছে নেতাদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসীদের। কোনো মানুষের প্রাণহানি কারও কাম্য নয়। তবুও রাজনীতির প্রতিহিংসার ছোবলে কী বর্বরোচিতভাবে সাতক্ষীরায় জেলা যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে জামায়াত-শিবির, বগুড়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেছে যুবদল নেতার। সিরাজগঞ্জে জীবন গেছে পথচারীর। এই নৃশংস মানুষ হত্যার নাম রাজনীতি? এর আগেও নিহত পক্ষের লোকজন হামলাকারী পক্ষের লাশ ফেলেছে। পুলিশের লাশ পড়েছে। পথচারীর লাশ পড়েছে। লাশ পড়ছে মানুষের।

২. যে বাঙালির ঐতিহ্য ছিল হৃদয়বান বলে, আপদে-বিপদে একে-অন্যের পাশে হৃদয় খুলে দাঁড়ানোর সেই মানুষ আজ রাজনৈতিক শক্তির ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে দানবের মূর্তি নিয়েছে। ভাই ভাইকে মারছে, স্বজন স্বজনকে। স্বাধীনতার ৪২ বছরের মাথায় একসময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি বাংলাদেশ যখন দক্ষিণ এশিয়ায় উদীয়মান টাইগার হিসেবে অর্থনৈতিক শক্তিতে দাঁড়াতে যাচ্ছিল ঠিক তখন এই হরতাল, অবরোধ, নৈরাজ্যের রাজনীতি, হানাহানি, বিদ্বেষ, রক্তপাত শুধু মানুষের প্রাণহানিই ঘটাচ্ছে না, ছোটখাটো ব্যবসায়ী থেকে দেশবরেণ্য শিল্পপতিদের পথে বসিয়ে দিচ্ছে। কল কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পণ্য পরিবহনে নেমেছে স্থবিরতা। জনজীবনে ভয়, আতঙ্ক মিলিয়ে দেশজুড়ে এক ঘুটঘুটে অন্ধকার সময়। জাতীয় রাজনীতির সর্বনাশা জুয়া খেলায় শিক্ষার্থীদের জীবন ব্যাহত হয়ে পড়ছে। যেন মানুষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক শক্তির যুদ্ধ বেধেছে। এ যুদ্ধ বাধাতে সরকার ও বিরোধী দল কেউ দায় এড়াতে পারে না। দুই পক্ষই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে ব্যর্থ। ২২ বছরের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে কোনো শাসকই কার্যকর ভূমিকা রাখেনি। কোনো বিরোধী দলও নেয়নি দায়িত্বশীল ভূমিকা। সংসদকে সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু না করে রাজপথকেই সংকট সমাধানের সহিংস পথ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। বার বার মানুষের রক্তে রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতায় এলেও জনগণকে দেওয়া অঙ্গীকার পূরণ করেনি। রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন, প্রতিহিংসা, লোভ-লালসা, দুর্নীতি, দলীয়করণ সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই নয়, শাসক শ্রেণীর রাজনৈতিক দলগুলো পর্যন্ত ভঙ্গুর করে ফেলা হয়েছে। দলীয়করণ ও দুর্নীতির উল্লাসনৃত্য চলছে। জনগণ ক্ষমতার মালিক_ সংবিধানপ্রদত্ত এই ক্ষমতাকে উপেক্ষা করে ব্যক্তি ও দলের খেয়াল-খুশিমতো চলছে শাসনব্যবস্থা। জনগণের চাওয়া-পাওয়াকে কখনই আমলে নেওয়া হয়নি। অতীতের সেনাশাসন দূরে থাক, ওয়ান-ইলেভেনের শিক্ষা থেকেও কেউ শিক্ষা নেয়নি।

৩. মানুষের প্রত্যাশা ছিল সংলাপের। মানুষের প্রত্যাশা ছিল সমঝোতার। হয়নি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। রাজপথে এখন দুই পক্ষ মুখোমুখি। এর আগে উচ্চ আদালতের বিচারকদের বাড়িতে বোমা হামলা হয়েছে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারা হয়েছে। এবার রেললাইন জুড়ে চলছে নাশকতা। রেল দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যুর মিছিল দেখার কর্মসূচি কখনো গণতান্ত্রিক হতে পারে না। পাঁচ বছরে সরকার পক্ষ যেমন অনেক উন্নয়ন করলেও নানা কেলেঙ্কারি, মন্ত্রীদের অতিকথন, অদক্ষ মন্ত্রী-নেতাদের নিরন্তর দায়িত্বহীন কথা বলা মানুষকে বিক্ষুব্ধ করেছে, তেমনি বিরোধী দলও জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে এমন কোনো নেতৃত্ব বা কর্মসূচি দিতে পারেনি যাতে জনতার হৃদয় জয় হয়। সরকারবিরোধী নেতিবাচক ভোটে জনমতে সাতটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পাল্লা ভারী হলেও এটা তাদের জনপ্রিয়তার অর্জন ছিল না। মানুষের সামনে আওয়ামী লীগ জোটের বিকল্প বিএনপি জোট হওয়ায় বার বার নেতিবাচক ভোটে সরকার পরিবর্তন হচ্ছে মাত্র। এতে শাসনব্যবস্থায় যেমন পরিবর্তন আসছে না, তেমনি বিরোধী দলের রাজনীতির গতিপথও নতুন দিকনির্দেশনা দিতে পারছে না। সরকার যেমন তাদের খেয়াল-খুশিমতো সংসদ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে তেমনি বিরোধী দলও সব সুযোগ-সুবিধা নিলেও সংসদে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। সংসদ বর্জনের রাজনীতির পথে হেঁটেছে। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করেনি। বিএনপি '৭১-এর কলঙ্কিত ঢোল জামায়াতকে গলায় নিয়ে হাঁটতে গিয়ে নিজের সর্বনাশই ডেকে আনেনি, রাজনীতিকে সহিংসতার পথে উসকে দিয়েছে। সরকারও সেখানে দমননীতির পথে হেঁটেছে। সময়মতো আলোচনার দুয়ার খোলেনি। এর মাশুল দিতে হচ্ছে দেশের মানুষকে। মরতে হচ্ছে মানুষকে। দেশের অর্থনৈতিক লোকসানের পাল্লা দিনে দিনে ভারী হচ্ছে। দুনিয়ার কোথাও বাংলাদেশের মতো ব্যাংক ঋণের সুদ নেই। চড়া সুদ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে রাজনৈতিক সহিংসতা ও হরতাল-অবরোধের রাজনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের পথে হাঁটতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। রাজনৈতিক শক্তির দৃষ্টি হলো ক্ষমতার দিকে। মানুষ ও অর্থনীতির দিকে নয়।

৪. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে টেলিফোনে গণভবনে দাওয়াত করেছিলেন। ৩৭ মিনিট ফোনালাপে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার কড়া ঝালবাক্য ধৈর্য নিয়ে শুনেছেন। বিএনপির নেতারা সংলাপের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন। যাদের হাতে দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাদের কাছে আবদার জানিয়েছেন। ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা ছিল প্রধানমন্ত্রীর হাতে। প্রধানমন্ত্রীর আশপাশের অনেকে চাননি তিনি খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করুন। কিন্তু টেলিফোনের জবাবে হরতাল প্রত্যাহার তো করেননি, হরতালের পর টেলিফোন করে বিরোধীদলীয় নেতা বহাল দাওয়াত কবুল করে গণভবনেও যাননি। গণভবনে গেলে কিছু না কিছু পেতেন। কিছু না পেলেও রাজনীতির দাবা চালে জিততেন।

৫. রাজনীতির দাবা খেলায় শেখ হাসিনা ভোরবেলা চায়ের পেয়ালা হাতে নিয়ে যে চাল দেন তার জবাব দিতে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান অফিস খোলে রাত ১১টায়। রাজনীতিতে আজকের আওয়ামী লীগ প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের শূন্যতায় অনেক ভঙ্গুর হলেও বিএনপি তার কাছে নাবালকই রয়ে গেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। অথচ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির বয়স বিচার করলে ৩৪ বছরে পা দেওয়া ভরা যৌবনের দল হওয়ার কথা। সংসদে যেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি তেমনি রাজপথেও গণআন্দোলন ঘটাতে ব্যর্থ। '৯৪ সালে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে গিয়ে দুজন মেয়রকে কাজে লাগিয়েছিল। ঢাকার মেয়র মরহুম মোহাম্মদ হানিফ ও চট্টগ্রামের মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মহিউদ্দিন চৌধুরীর ডাকে চট্টলাবাসী রাজপথে নেমেছিল। হানিফের জনতার মঞ্চে গণজোয়ার তৈরি হয়েছিল। বিএনপি পল্টনে পুলিশ পাহারায় প্রেস ব্রিফিং আর গুলশানের মধ্যরাতের আমলানির্ভর কূটনৈতিক যোগাযোগের ভ্রান্ত রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। সরকারকে অবৈধ বলছে, নিজেরা পদত্যাগ করছে না। প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার দাওয়াতের পর এবং তা বহাল রাখার সুযোগ দিলেও সেই পথে যায়নি। জানাজা পড়া রাষ্ট্রপতির দরবারে গেছে। রাত-বিরাতে গোপনে সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে কথা বলেছে। কূটনীতিকদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছে। গণমানুষের আন্দোলন দাঁড় করাতে পারেনি। জামায়াতনির্ভর বিরোধী জোট এখন সহিংসতার যে পথ নিয়েছে তাতে সরকারের হাতে কঠোর দমনের ট্রামকার্ড তুলে দিয়েছে। বিএনপির তৃণমূল নেতারা পাঁচটি বছর নির্বাচনের জন্য অর্থ, শ্রম বিনিয়োগ করেছিলেন। আন্দোলনের জন্য করেননি। নির্বাচনমুখী নেতা-কর্মীদের হঠাৎ করে গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর আন্দোলনে নামাতে পারবে কি না সেই প্রশ্ন রয়েই গেছে।

বিএনপি নেত্রী সহকর্মীদের নিয়ে পদত্যাগ করে জনতাকে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি দিতে পারতেন। সাত মেয়রকে দিয়েও তা করাতে পারতেন। কিন্তু তা না করে মানুষ মারার, অর্থনীতি ধ্বংসের এই রাজনীতি কেন? তাকেই ভাবতে হবে।

মাঝখানে সরকারের প্রতি নাখোশ মহাজোটের প্রধান শরিক এরশাদের জাতীয় পার্টিকে ছয়টি মন্ত্রিত্ব দিয়ে নির্বাচনের ময়দানে ঠেলে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সেনা মোতায়েনের কথা বলছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন দেশের এই সহিংস পরিস্থিতি রুখে দাঁড়িয়ে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হলে সেনা মোতায়েন এখনই জরুরি। রাজনীতির চেয়ে বা রাজনৈতিক শক্তির ক্ষমতার লড়াইয়ের চেয়েও দেশের মানুষ ও সম্পদের মূল্য অনেক বেশি। দেশবাসী বিশেষ করে এই প্রজন্ম সামনে এগিয়ে যেতে চায়। পেছনে হাঁটতে চায় না। এখনো সময় আছে প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াত কবুল করে আলোচনায় গিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বের করার। প্রয়োজনে তফসিল পুনর্বিন্যাস ও নির্বাচনকে সরকারি দলের প্রভাবমুক্ত রাখার পথটি বের করার। রাজনীতিতে জেদ, হিংসা, বিদ্বেষ, আবেগের কোনো স্থান নেই। অংকের খেলায় নির্বাচনই শেষ কথা। এই সহিংস নাশকতা আন্দোলন হতে পারে না। এই পরিস্থিতি চললে গণমানুষের অসন্তোষ চরম পর্যায়ে যাবে। সরকারকেও বুঝতে হবে। পাঁচ বছর সরকার আনকোরা অনভিজ্ঞদের নিয়ে পথ চললেও নির্বাচনকালীন সরকারে যারা এসেছেন তারা অনেক প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞ। কী রাজনীতি, কী রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিচালনায়। তাদেরও বুঝতে হবে দায় কেউ এড়াতে পারবেন না। সরকারের সামনেও বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব এখনো অনেক বেশি। বিরোধী দলকেও গণতন্ত্রের রাজনীতিতে হাঁটতে চাইলে আগুন নিয়ে খেলার এই হঠকারী রাজনীতি পরিহার করতে হবে। রাজনীতির এই সর্বনাশা জুয়া খেলা দেশকে পুলসিরাতের রাস্তায় ঠেলে দিয়েছে। দেশ এখন পুলসিরাতের রাস্তা অতিক্রম করছে। ভয়, আশঙ্কা, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায়। এ থেকে পরিত্রাণে সরকার ও বিরোধী দল উভয় পক্ষকেই সমান দায়িত্ব নিতে হবে। দেশটা জনগণের। বহু রক্তে অর্জিত দেশ ব্যক্তির খেয়াল-খুশিতে চলতে পারে না। সহস শহীদের রক্তে কেনা গণতন্ত্র বিবর্ণ হতে পারে না। আমরা কোনো অদৃশ্য শক্তির ইশারায় খেলতে পারি না। আমরা জাতীয়তাবাদী চেতনা থেকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন দেশের বাসিন্দা হয়েছিলাম। আমাদের সংকটের সমাধান আমাদের নেতানেত্রীদের খুঁজতে হবে। এই সংঘাতের রাজনীতিতে আমাদের সন্তানদের লাশ পড়ছে। লাশের কফিন সবার কাঁধেই নিতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.