টার্নওভার কর কে দেবে আর না দেবে এ সম্পর্কে এনবিআরের কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। সে কারণে এ ব্যাপারে দ্রুত একটি স্পষ্ট নির্দেশনা সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারির সুপারিশ করেছে বিল্ড (বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ)। সুপারিশে বলা হয়, টার্নওভার কর প্রদানের ক্ষেত্রে যোগ্যতার শর্ত সম্বলিত একটি স্পষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা যেতে পারে। যেখানে কর প্রদানের যোগ্য ও অযোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা থাকবে। এটি করদাতাদের বুঝতে সহায়তা করবে যে, তাদের ভ্যাট প্রদানের প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া বর্তমানে দিচ্ছেন না এমন করদাতাদের কর প্রদানে এটি উৎসাহিত করবে।
প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট পলিসি কো-অর্ডিনেশন কমিটির চতুর্থ সভায় এ ধরনের সুপারিশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১০ নভেম্বর সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সভার কার্যবিবরণীটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সবুর খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, টার্নওভার ট্যাঙ্ পরিশোধের ব্যাপারে এনবিআরের কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যবসায়ীরা এটি পরিশোধে ঝামেলায় পড়ছেন। এ ব্যাপারে এনবিআর চেয়ারম্যান ১১ ডিসেম্বর আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সভায় জানান, টার্নওভার কর জাতীয় রাজস্ব আয় বিবেচনায় তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হওয়ায় এটির ওপর এনবিআরের নজরদারি দুর্বল। তবে বিল্ড-এর দেওয়া সুপারিশগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে পাঠানো হলে সেগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা হবে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে এ বিষয়ে সরকারকে নানা ধরনের সুপারিশ দিয়ে আসছে বিল্ড। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আইএফসির ব্যবস্থাপনায় এবং ডিএফআইডি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফান্ড, ডিসিসিআই, এমসিসিআই এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করছে এটি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চতুর্থ সভায় কর ব্যবস্থাপনা সহজিকরণ করতে আরও যেসব বিষয়ে বিল্ড সুপারিশ করেছে সেগুলো হচ্ছে- বার্ষিক টার্নওভার ৭০ লাখ টাকার (নতুন আইনে ৮০ লাখ টাকা) নিম্নের প্রতিষ্ঠানগুলোর ১৫ শতাংশ ভ্যাটের জায়গায় ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার কর প্রদানের সুবিধার ব্যাপ্তি কেবল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পরিবর্তে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য সম্প্রসারিত করা; ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি টার্নওভার করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দরপত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া এবং ট্যাঙ্ ক্রেডিট পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দলিল হিসেবে টার্নওভারের বিক্রয় রসিদ ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া। এ ছাড়া রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করতে প্রত্যর্পণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থের ওপর কর্পোরেট কর আরোপের বিধান তুলে দেওয়ারও সুপারিশ করেছে বিল্ড। সংস্থাটি বলেছে, প্রচলিত এবং অপ্রচলিত রপ্তানিকে উৎসাহিত করার জন্য প্রত্যর্পণে প্রাপ্ত অর্থকে আয় বা মুনাফা হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক নয়। তাই প্রত্যর্পণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থের ওপর প্রযোজ্য করপোরেট কর আরোপের বিধান প্রত্যাহার করা উচিত। ক্যাশ ইনসেটিভ বা নগদ সহায়তার অর্থ প্রাপকদের রপ্তানিকৃত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত ইউটিলিটির ওপর প্রদত্ত মূসকের জন্য রাখারও সুপারিশ করা হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।