সরকার ও বিরোধী দলের সংঘাতে প্রতিদিনই রক্ত ঝরছে। রাজনীতির মারপ্যাঁচে নেই এমন লোকজনও প্রাণ হারাচ্ছে। দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ক্রমান্বয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক সমাজ। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আইকন হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের বিপর্যয় এড়াতে জোরদার হচ্ছে কূটনৈতিক উদ্যোগ। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর এ তৎপরতা আরও বেড়েছে। নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট অব্যাহত সহিংসতার মধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো চার দিনের সফরে ৬ ডিসেম্বর ঢাকা আসছেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর বিরোধী দল যখন একের পর এক সাংঘর্ষিক কর্মসূচি ঘোষণা করছে তখন জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতের এই সফর তাৎপর্যের দাবিদার। জাতিসংঘের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকেও দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপে বসে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ উদ্দেশ্যে উভয় দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কূটনীতিকদের নিরন্তর প্রয়াসের ফলশ্রুতিতে অচলাবস্থা নিরসনে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু হয়েছে। উভয়পক্ষ এ আলোচনা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে মুখ না খুললেও দুই পক্ষের বক্তব্যে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে বিশিষ্ট নাগরিকরা সংকট মোচনে তার প্রভাব কাজে লাগানোর অনুরোধ করেছেন। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তিনি তার সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে সমঝোতার সব চেষ্টাই করবেন। সংবাদ মাধ্যমের তথ্যানুযায়ী কূটনীতিকদের দ্বারা অনুরুদ্ধ হয়েই বিশিষ্ট নাগরিকরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রতিবেশী দুই বন্ধু দেশ ভারত ও চীনের জন্যও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। ভারত সমস্যা সমাধানে এ দেশের জনগণের ওপর তাদের আস্থার কথা বলেছে। পক্ষান্তরে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচনকেন্দ্রিক মতপার্থক্য যখন জাতির ভবিষ্যৎকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলছে তখন কূটনীতিকদের এ প্রয়াস আশাজাগানিয়া। তবে সমস্যা যেহেতু নিজেদের সেহেতু তার সমাধানে প্রধান দুই দলের সদিচ্ছাই নিয়ামক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।