প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে সাজানো প্রতিটি নতুন সরকারের রুটিন ওয়ার্কের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের পর যে নতুন সরকার শপথ নিয়েছে তাকে বাস্তবের নিরিখে নতুন বলার অবকাশ কম। কারণ নবম সংসদের নিয়ন্ত্রক আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট দশম সংসদে আরও বৃহৎ পরিসরে আবিভর্ূত হয়েছে। পুরো সংসদই এখন মহাজোটময়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তারা যেমন ক্ষমতার অনুষঙ্গ তেমন বিরোধী দলেরও নিয়ন্ত্রক। জাতীয় পার্টির সদস্যরা একই সঙ্গে মন্ত্রিসভায় এবং বিরোধী দলের অংশ হওয়ার যে কৃতিত্ব দেখাচ্ছেন তার নজির দুনিয়াতেই বিরল। বাস্তবতার দিক থেকে নতুন না হলেও তাত্তি্বক দিক থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে 'নতুন' না বলার সুযোগ নেই। নবম সংসদ গঠিত হয়েছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটারের অংশগ্রহণে। দশম সংসদের বেশিরভাগ আসনে একজনের বেশি প্রার্থীই খুঁজে পাওয়া যায়নি! বাদবাকি আসনে যে নির্বাচন হয়েছে তার অনেকগুলো ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতিই ছিল না। সাংবিধানিক দিক থেকে বৈধ হওয়া সত্ত্বেও বিরোধী দল বর্জন করায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের নৈতিক বৈধতা সত্যিকার অর্থেই দুর্বল। যে কারণে এ সংসদের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকারকে নানা চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়েই এগুতে হচ্ছে। নির্বাচন যাই হোক সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন সরকারের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এ কারণেই প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ ও শক্তিশালী প্রশাসন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের প্রতিটি স্তর সাজানো হচ্ছে নতুনভাবে। মেধাবীদের নিয়োগ করা হচ্ছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে। পক্ষান্তরে বিগত সরকারের আমলে যারা ব্যর্থ ও দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বিবচিত হয়েছেন তাদের ওএসডি ও জাম্পিং পোস্টে পদায়ন করা হচ্ছে। প্রশাসন সাজানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের শক্তি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা আরও ২০ হাজার বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে সময়ের চাহিদা পূরণে পুনর্গঠন এবং জননিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের শক্তিবৃদ্ধির প্রশ্নে দ্বিমত পোষণের কোনো অবকাশ নেই। তবে পুরো কাজটি যাতে সততার সঙ্গে হয়, যাতে সত্যিকারের মেধাবী ও যোগ্যরা দায়িত্ব পায়
সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।