টানা হরতাল-অবরোধে শেরপুরের সহস্রাধিক চাতাল কল তিন সপ্তাহ ধরে কার্যত বন্ধ। এসব চাতাল কলে ৫০ হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। কলগুলোয় কয়েক লাখ টন চাল আটকে থাকায় মালিকরা ধান কিনছে না। ফলে ক্রেতা নেই ধানের বাজারে। বিক্রি করতে না পারায় নতুন ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। অন্যদিকে চাতাল কলগুলোর বেশির ভাগই ব্যাংক থেকে সিসি ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে। এরা ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না।
অধিক ধান উৎপন্ন হওয়ায় চাতাল কলনির্ভর শেরপুরের অর্থনীতি। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে শেরপুর থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক চাল পাঠানো হয়। রাস্তায় নিরাপত্তার অভাবে পরিবহনগুলো প্রায় এক মাস ধরে কোথাও চাল নিয়ে যেতে পারছে না। চাল আটকে আছে কলে। আর কয়েক দিন গেলেই বেশির ভাগ চাল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে সদ্য কাটা ধান কৃষকরা বিক্রি করতে না পারায় শ্রমিকদের পাওনাও পরিশোধ করতে পারছে না। শেরপুরের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তিও পরিশোধ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।
বাণিজ্যিক ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এক মাস ধরে ঋণের কিস্তি পরিশোধের পরিমাণ হতাশাব্যঞ্জক। ব্যবসায়ীরা ব্যাংককে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। সরেজমিনে বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলো প্রায় গ্রাহকশূন্য হয়ে পড়েছে। যমুনা ব্যাংকের ম্যানেজার মো. হাফিজুর রহমান বলেছেন, ব্যবসা খুব মন্দা। টাকার অভাবে এটিএম বুথে টাকা দিতে পারছি না। ইসলামী ব্যাংক সূত্র জানায়, লেনদেন নেই বললেই চলে। সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মাহমুদুল হক জানান, যে পরিমাণ টাকা প্রতিদিন জমা হওয়ার কথা তার ধারেকাছেও নেই।
জেলার অন্যতম চাতাল শাকি অটো প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী আলহাজ জয়নাল আবেদিন জানিয়েছেন, তার প্রতিষ্ঠানে তিন শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী আছে। তিন সপ্তাহ ধরে সব বন্ধ। ব্যাংকের টাকা দিতে পারছেন না। জেলা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রৌশন জানিয়েছেন, জেলার প্রায় সব চাতাল কল বন্ধ। কল মালিকরা দিশাহারা। রাজনৈতিক কারণে আজ তাদের পথে বসার অবস্থা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।