আমাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিয়ে আমাদের প্রধান দুই নারী নেত্রী যা করছেন, তাতে আমি মোটেও বিস্মিত নই । কারন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যাওয়া বা থাকা এমনি একটি ব্যাপার, যা আমাদের মতো ছাপোষা জনগনের জন্য কল্পনা করাও অসম্ভব । ক্ষমতায় থাকা বা যাওয়ার জন্য যদি জনগনের কিছু একটা অংশ মারা যায়, তাতে কি আর এমন ক্ষতি বলুন ? ১৬কোটি জনগনের এইদেশে, এটা কোন ব্যাপার হলো নাকি ? ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য তো ৩০লক্ষ লোক প্রান দিয়েছে, তাতে কি এমন ক্ষতি হয়েছে দেশের ? লোক যা মরার মরুক ,ক্ষমতা ছাড়া যাবে না, বা ক্ষমতা লাভের সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না কিছুতেই । আসলেও তো তাই । রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পাওয়া তো আর চার্টিখানি কথা না ! যে নারীরা একটি শাড়ীর জন্য এমন কান্ড করতে পারে, তাদের পক্ষে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার লোভ সামলানো কল্পনা করা যায় ? এই প্রসংগে একটি বাস্তব ঘটনা গল্পাকারে অবতারনা করলাম ।
সেই ছোট বেলায় মায়ের নিকট অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প শোনতাম এবং শোনতাম অনেক মর্মস্পদ বাস্তব ঘটনা যা আজও কল্পনা করলে ঝলঝল করে চোখের সামনে ভেসে ওঠে । কারন, একই গল্প ও ঘটনা মা বার বার শুনিয়েছেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তার স্মৃতির সীমিত ভান্ডার থেকে । এমনই একটি মর্মস্পদ বাস্তব ঘটনার আলোকে লেখাটি লিখতে যাচ্ছি যা কি না বর্তমানে আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিচ্ছবিই বহন করে ।
সেই অনেকদিন আগের ঘটনা, সীমিত বেতনের এক চাকরিজীবীর সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর মনে সাধ জাগে একটি সুন্দর দামী শাড়ী কেনার জন্য । তাই সে স্বামীর নিকট বায়না ধরে একটি সুন্দর দামী শাড়ি কিনে দেওয়ার জন্য ।
স্বামী বেচারা যেখানে তার স্বল্প বেতনে সংসারের ঘানি টানতেই হিমসিম খায়, তার উপর সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর আবদার মিটাবে কি করে, তা ভেবেই অস্থীর । স্বামী অবশেষে শর্তসাপেক্ষে স্ত্রীর বায়না পূরনের প্রতিশ্রুতি দেয় যে, প্রথম সন্তানটি যদি ছেলে হয়, তবে যত কষ্টই হউক না কেন, স্ত্রীকে একটি তার পছন্দমত দামী শাড়ী কিনে দিবে । অবশেষে স্ত্রীর কোল জুড়ে আসে ফুট ফুটে একটি পুত্র সন্তান এবং স্বামী বেচারা খুশীর চোটে ভুলে যায় তার নুন আনতে পানতা ফুরানোর কথা ।
স্বামী, স্ত্রীর আবদার মেটানোর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে বহু কষ্টে ধার-দেনা করে একটি দামী শাড়ী স্ত্রীকে কিনে দেয় । স্ত্রী তো মহা খুশী, দামী শাড়ি পেয়ে ।
এতো দামী শাড়ী কি শুধু ঘরে পরে থাকলে চলে ? দেখাতে হবে না পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনদের ! এমতাবস্থায় আসে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের নিমন্ত্রন । আর যায় কোথায় ? বিয়ে বাড়িতে কতো আত্মীয়-স্বজনেরা আসবে, দামী শাড়ী প্রদর্শনীর এমন মোক্ষম সুযোগ কি আর হাত ছাড়া করা যায় ? শিশুটির বয়স সবে মাত্র দুই কি তিন মাস । এমন ছোট দুধের শিশুকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে শিশুটির বাবা প্রথমে আপত্তি করলেও স্ত্রীর পীড়াপীড়িতে অবশেষে যেতে রাজি হলো ।
আসল সেই দামী শাড়ী প্রদর্শনীর দিন । স্ত্রীর সাজ-সজ্জা আর দেখে কে ? শাড়ীর সাথে কোন সাজ মানাবে তা দেখতে দেখতে ভুলে গেল অবুঝ শিশুটির প্রতি তার দায়িত্ব বোধের কথা ।
সাজ সজ্জার কোন এক পর্যায়ে শিশুটির প্রস্রাবে দামী শাড়ী ভিজে সাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকায় শিশুটির নুনু সূতা দিয়ে বেধে দেয়, যাতে শিশুটি আর প্রস্রাব করে শাড়ী ভেজাতে না পারে । আর, তার এই কান্ডটি, সে তার স্বামীর নিকট গোপন রাখে বকা খাওয়ার ভয়ে । তারপর স্বামী-স্ত্রী শিশুটিকে নিয়ে খুশীমনে বিয়ে বাড়িতে যায় । বিয়ে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী তার শিশুটিকে স্বামীর নিকট দিয়ে তার শাড়ীর গুনকীর্তনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং বিয়ে বাড়ির ধুম-ধামে ভুলে যায় শিশুটির সাথে করা তার কান্ডজ্ঞানহীন কর্মের কথা । শিশুদের অভ্যাসবসত ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগের কারনে শিশুটি অনবরত কাঁদতে থাকে কিন্ত অবুঝ বিধায় শিশুটি তার সমস্যাটির কথা বলতে না পেরে আরো জোরে জোরে কাঁদতে থাকে ।
শিশুটির বাবা কিছুই বুঝতে না পেরে নানা ভাবে শিশুটির কান্না থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে । এক পর্যায়ে শিশুটির বাবা লক্ষ্য করে দেখে যে, শিশুটির পেট স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী ফুলে গেছে । তৎক্ষনাৎ শিশুটির পেন্ট খুলে বাবা অবাক হয়ে দেখল যে শিশুটির নুনু ফুলে লম্বা বেলুনের মতো হয়ে গিয়েছে । ততক্ষনে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে । দৌড়ে ডাক্তারের কাছে পৌছানোর পূর্বেই শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল ।
শুধুমাত্র একটি শাড়ী প্রস্রাবে ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে যে, মা তার শিশু সন্তানের সাথে এমন কান্ডজ্ঞানহীন কাজ করতে পারে, সেই মা যদি একটা দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী হয়, তবে সেই মায়ের কি কোন হুস-জ্ঞান থাকতে পারে ? আর অভাগা জনগনেরই বা কি প্রাপ্যতা থাকতে পারে, সেই লোভকাতুরে নারীদের কাছ থেকে ? আপনারাই বলুন !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।