জেলা ও মহানগরের আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে রংপুর জাতীয় পার্টি। বিশেষ করে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত তিন নেতাকে জেলা ও মহানগর কমিটির আহ্বায়ক এবং সদস্যসচিবের দায়িত্ব দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নতুন কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে দলীয় কার্যালয় দখলে রেখেছেন বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। এ নিয়ে দুই পক্ষে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় গতকাল বিকালে দলীয় কার্যালয় চত্বরে কে বা কারা দুটি হাতবোমা নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ ঘটনার জন্য পরস্পরকে দায়ী করা হচ্ছে। এক বছর আগে গঠিত রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির কমিটি রবিবার বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সাবেক সংসদ সদস্য করিম উদ্দিন ভরসাকে আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে সদস্যসচিব করে জেলা এবং আবদুর রউফ মানিককে আহ্বায়ক ও এস এম ইয়াসিরকে সদস্যসচিব করে মহানগর জাতীয় পার্টির কমিটি গঠন করা হয়। বিকালে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভরায় স্বাক্ষরিত কমিটি নেতাদের হাতে চলে আসে। এ নিয়ে বিলুপ্ত কমিটির নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ২৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রউফ মানিক, জেলা সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরকে দল থেকে বহিষ্কার করেন এরশাদ। একই বছরের ৪ ডিসেম্বর দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গাকে জেলা ও মহানগরের সভাপতি, আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টুকে জেলা এবং সালাহ উদ্দীন কাদেরীকে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করেন এরশাদ। কোনো কারণ ছাড়াই এ কমিটি বিলুপ্ত করায় নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। রাঙ্গা, নান্টু ও কাদেরীর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয় দখলে রেখেছেন। তারা বলছেন, এরশাদ নিজ মুখে সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত তারা অন্য কোনো নেতাকে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে দেবেন না। প্রেসিডিয়াম সদস্য, বিলুপ্ত জেলা কমিটির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, রংপুরের ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা বলেই যে কোনো সিদ্ধান্ত নেন দলীয় চেয়ারম্যান। তিনি অসুস্থ হয়ে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। তার স্বাক্ষর ছাড়া কমিটিকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। রংপুরে দলকে দ্বিধাবিভক্ত করার এটা একটা ষড়যন্ত্র। এর অংশ হিসেবে তথাকথিত নতুন কমিটির নেতারা দলীয় কার্যালয়ে দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। নতুন জেলা কমিটির সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, বৈধ-অবৈধ কমিটির বিষয়ে দলের চেয়ারম্যান সঠিক জবাব দিতে পারবেন। আমরা সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। পরিকল্পিতভাবে তারা নিজেরাই দলীয় কার্যালয়ে হাতবোমা ফাটিয়ে আমাদের দোষারোপ করছেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।