সিলেটে জামায়াতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণে ১৮-দলীয় জোটের নেতৃত্বাধীন বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করে দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল হরতাল পালনকালে মিছিল নিয়ে ১৮-দলীয় জোটের মুখোমুখি হয়েছিল বিএনপির অঙ্গ সংগঠন। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে দুই মিছিলে থাকা নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সরকারের শেষ সময়ে ১৮ দলের মধ্যকার এই দ্বন্দ্বে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, খালেদা জিয়া নির্দেশিত সংগ্রাম কমিটিতে ত্যাগী, পরীক্ষিত ও আন্দোলন সংগ্রামে নিবেদিত মুক্তিযোদ্ধা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদল, ওলামা দল, মহিলা দলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীকে রাখা হয়নি। অন্যদিকে সংগ্রাম কমিটিসহ ১৮-দলীয় জোটের সব কর্মসূচিতে জামায়াত-শিবিরকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ১৮-দলীয় জোটের মিছিল-সমাবেশে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের চেয়ে ছাত্রশিবিরের নামে বেশি স্লোগান দেওয়া হয়ে থাকে। এসব কারণে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী, বিশেষত তরুণ নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা বিএনপি ও ১৮-দলীয় জোটের সঙ্গ ত্যাগ করে আলাদা কর্মসূচি পালন করছে। ১৮ দলের এই অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ ২৫ অক্টোবর প্রকাশ্যে রূপ নেয়। ওই দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত ১৮ দলের সমাবেশে যোগ না দিয়ে পৃথক অবস্থান নেন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
শেষ পর্যন্ত ১৮ দলের শীর্ষ নেতারা তাদের মান ভাঙিয়ে মূল সমাবেশে নিয়ে গেলেও ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। টানা তিন দিনের হরতাল চলাকালে প্রতিদিনই ১৮-দলীয় জোটের কর্মসূচিতে না গিয়ে আলাদা শোডাউন করে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন। আর হরতাল চলাকালে নগরীতে ১৮-দলীয় জোটের শোডাউনে ছিল যথারীতি জামায়াত-শিবিরের আধিক্য। এর ফলে অঙ্গ সংগঠনগুলোর সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে বিএনপি ও জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে। এদিকে গতকাল বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে বের করা বিশাল মিছিলে ম্লান হয়ে যায় ১৮-দলীয় জোটের মিছিল।
নগরীর জিন্দাবাজার পুরান লেনের সামনে উভয় পক্ষের মিছিল মুখোমুখি হলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও শেষ পর্যন্ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, কয়েকটি অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ১৮ দলের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এ দূরত্ব ঘুচিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জামায়াতকে অধিক মূল্যায়ন করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, একদিন মিছিল থেকে জামায়াত-শিবিরের নামে বেশি স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। পরে তাদের এ রকম স্লোগান দিতে বারণ করা হয়েছে। শীঘ্রই সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।