বাংলাদেশের রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বিদায় নিলেন। আমাদের মাঝ থেকে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন। ৮১ বছর বয়সে তিনি পুত্র-কন্যা, আত্দীয়স্বজন এবং রাজনৈতিক সহকর্মী ও ভক্তদের ছেড়ে বিদায় নিলেন চিরদিনের মতো। জীবন থেকে বিদায় নিলেও সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন রেখে গেছেন অসামান্য দেশপ্রেম ও নীতিবোধের উজ্জ্বল স্বাক্ষর। তার অবর্তমানেও তা প্রতিনিয়তই অনুভূত হবে। সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন নিজ যোগ্যতায় রাজনীতির মহীরুহ হওয়ার যোগ্যতা দেখিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের কাণ্ডারি তাজউদ্দীন আহমদের স্ত্রী। বলা হয়, এক অসামান্য দম্পতি ছিলেন তারা। স্বামীর আদর্শের ধারক-বাহক হিসেবে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের আত্দত্যাগ ও অসামান্য সাহস ইতিহাসের উপাদান হিসেবেই বিবেচিত হবে। বিয়ের আগে থেকেই তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক কর্মী। বিয়ের পর রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও স্বামী তাজউদ্দীন আহমদকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এবং ৩ নভেম্বর কারাগারে তাজউদ্দীনসহ চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। সেই দুর্দিনেও শোককে সামাল দিয়ে তাকে শক্তিতে পরিণত করার সাহস দেখিয়েছেন তিনি। পঁচাত্তর-পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন এই মহীয়সী নেত্রী। অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগতকারীদের ষড়যন্ত্রে যখন আওয়ামী লীগের ত্রিশঙ্কু অবস্থা তখন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন বঙ্গবন্ধু ও তার স্বামীসহ চার জাতীয় নেতার গড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিজ হাতে তুলে নেন। স্বামী তাজউদ্দীন আহমদের মতো সৈয়দা তাজউদ্দীনও ছিলেন নির্লোভ রাজনীতিকের প্রতিকৃতি। দেশের জন্য, দলের জন্য অসামান্য অবদানই শুধু তারা রেখেছেন। চারদিকে যখন ভোগবাদীদের দাপট তখনো তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা সুনীতি ও সুবিবেচনাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এই মহীয়সী নেত্রীর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।