আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্যায় যে করে অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা তারি সম দহে।আসুন দেশটাকে পঙ্গু না করি)



ঘটনা -১
"ব্যাটারি চালিত রিক্সার" পিছনে লেখা “মালিক মোঃ ছামসুল (যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার) ফোন ০১৯১২-------”।
ফোন করলাম। সুন্দর করে সালাম দিলাম, বল্লাম যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটা সংঘটন সাহায্য করেব ব্যাটারি রিক্সার জন্য একলক্ষ টাকা পর্যন্ত। বেশ গদ গদ কণ্ঠে কথা বলতে রাজি হইল।
আমিঃ চাচা দেশ কই?
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাঃ বাবুগঞ্জ বরিশাল।


আমিঃ চাচা আপ্নের বয়স কত?
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাঃ আইতো ৫০-৫২।
আমিঃ ঠিক কইরা বলেন, দুইটা বললে হবে না।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাঃ কনফিডেন্টলি ৫০।
আমিঃ চাচা আপনার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট আছে তো?
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাঃ আছে মানে, অবশ্যই আছে। অরজিনাল।


আমিঃ আমারে কিন্তু ঐটার ফটোকপি দিতে হবে। পারবেন তো?
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাঃ হ পারুম, কবে লাগব?
আমিঃ আচ্ছা কোথায় যুদ্ধ করছেন?
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাঃ ঢাকাতে।
আমিঃ চাচা মুক্তিযুদ্ধের সময় আপ্নের বসয় কত আছিল?
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাঃ আরও কনফিডেন্টলি ১৬।
আমিঃ চাচা একটা প্রশ্ন করি কিছু মনে কইরেন না, বাবুগঞ্জে যুদ্ধ না কইরা ঢাকাতে যুদ্ধ করতে আসছিলেন কেন? আর আপ্নের মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়স ১৬ হইলে এখন বসয় ৫০ হয় কেম্নে? দেশ স্বাধীন হইছে মোটে ৪২ বছরের মত। তখনতো আপ্নের বয়স ৮ হওয়ার কথা ছিল!! হ্যালো .... হ্যালো ... তারপর লাইটা কাটা গেল অতঃপর মোবাইল নাম্বার বন্ধ।



ঘটনা ২:
ব্যাটারি চালিত রিক্সার পিছনে লেখা “মালিক পঙ্গু (প্রতিবন্ধি)” ফোন ০১৮১২-------”। ফোন করলাম। সুন্দর করে সালাম দিলাম, বল্লাম প্রতিবন্ধি জন্য একটা সংঘটন সাহায্য করেব ব্যাটারি রিক্সার জন্য একলক্ষ টাকা পর্যন্ত। বেশ গদ গদ কণ্ঠে কথা বলতে রাজি হইল।
আমিঃ সালাম দিলাম, বললাম কই থাকেন?
প্রতিবন্ধিঃ মিরপুর, টিনশেড।


আমিঃ বয়স কত?
প্রতিবন্ধিঃ ৩৫।
আমিঃ একটু দেখা করতে পারবেন?
প্রতিবন্ধিঃ বল্ল গেরেজে আসেন।
আমিঃ গেলাম। দেখলাম বহাল তবিয়তে আছেন উনি। গলায় সোনার চেন, হাতে সোনার আংটি, সাদা ফতুয়া (বড় ভুড়ি) লুঙ্গি।

বাম হাতের তিনটা আঙ্গুল নাই।
আমিঃ ভাই হাতে কি হইছিল?
প্রতিবন্ধিঃ ছোট বেলায় রাইতের বেলা ডাব চুরি কইরা, কাটার সময় নিজের হাতে নিজেই কোপ দিয়া দিছিলাম।
আমিঃ তা এর জন্য কি কি অসুবিধা হয়?
প্রতিবন্ধিঃ কেন অসুবিধা হইব? শুধু একটু ছোট ঘরে (মুচকি হাসি), কিন্তু এখন অভ্যাস হইয়া গেছে।
আমিঃ আপনি কি আসলে পঙ্গু বা প্রতিবন্ধি কোন টার মধ্যে পড়েন?
প্রতিবন্ধিঃ না মানে...

প্রতিবন্ধি আব্দুল গনির রিক্সা আছে ৩৫টা। আগে ছিল প্যাডেল এখন হইছে সব ব্যাটারি।

ডেলি জমা ৪০০টাকা। প্রতি রিক্সার জন্য পুলিশ থেকে মাসিক টোকেন নিতে হয় ৮০০-১২০০ টাকা দিয়ে। দেখলাম গ্যারেজের পিছনে দিয়ে বেশ উন্নত ভাবে খাম্বার থেকে লাইন চুরি করা হইছে (রিক্সার বেটারি চার্জ করার জন্য)।

তথাকথিত প্রতিবন্ধি কি দেশটাকেই প্রতিবন্ধি বানাচ্ছেন না?

মিরপুর এলাকায় প্রায় ১০০,০০০ ব্যটারি রিক্সা আছে। পুলিশ টোকেন থাকলে ব্যাটারি রিক্সা বৈধ।

যার জন্য ৮০০ - ১০০০ টাকা দিতে হয়। আবার এই রিক্সার ব্যাটারি চার্জ করার জন্য নিতে হয় বিদ্যুৎ। যা আবার নেয়া হয় চুরি করে। খরচ হয় ৪০০০ - ৫০০০ টাকা। প্রায় ৫০০০ হাজারের মত ছোট বড় রিক্সার গেরেজ আছে ।



পুলিশ পায় = ১০০,০০০ X ৮০০ = ৮০,০০০,০০০ (আট কোটি টাকা প্রতি মসে শুধু মাত্র মিরপুর এলাকায়)
বিদ্যুৎ বিভাগ পায় = ৫০০০ X ৪০০০ = ২০,০০০,০০০ (দুই কোটি টাকা প্রতি মসে শুধু মাত্র মিরপুর এলাকায়)।

ব্যাটারি চালিত রিক্সার বিপদ কিন্তু আবার কম না। গতি, ভর, বেগের সমন্বয় নেই। নেই চালকের অভিজ্ঞতা। রাস্তায় চালানোর কোন নিয়ম নেই।

রোজা এবং ঈদ উপলক্ষে নতুন করে প্রায় ১০০,০০০ রিক্সা এসেছে ঢাকায়। রোজার আগের দিন থেকে যানজটের কারণ বুঝতে পারছেন?

আমরা যদি ব্যাটারি চালিত রিক্সায় না উঠি এবং অন্যকে না উঠার জন্য উৎসাহিত করি হয় তো পরক্ষ ভাবে আমরা দেশের জন্য কিছু করতে পারব (দেশপ্রেম বলেন আবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলেন)। সাথে বিপদের থেকেও বাঁচব। ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.