ব্লগে কবিতা, ছড়া এবং কর্মসংস্থানমূলক প্রবন্ধ লিখব বলে আশা করি। ক্যাকটাস গাছ দীর্ঘজীবী হলেও এর ফুলগুলো প্রায়ই স্বল্পস্থায়ী হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্যাকটাস ফুলই দু’একদিনের মধ্যে ঝরে পড়ে। তাছাড়া অধিকাংশ ক্যাকটাসের ফুলই ফোটে রাতের বেলায়। আর রাতে ফোটার কারণে সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত এসব ফুলের রংও হয় সাধারণত সাদা।
তবে যেসব ক্যাকটাসের ফুল দিনের বেলায় ফোটে সেগুলো হলুদ, লাল, গোলাপি, বেগুনি প্রভৃতি বিচিত্র রংয়ের হয়ে থাকে। দীর্ঘায়ু, কাঁটাযুক্ত এসব ক্যাকটাস গাছের প্রধান সুবিধা হচ্ছে ছোট্ট একটি টবে বছরের পর বছর ধরে এগুলোকে সজীব রাখা যায়। ঘরের বারান্দা, ব্যালকনি কিংবা ঘরের সুবিধামতো যে কোনো স্থানে এগুলো রাখা যায়। অন্যান্য ফুলগাছের মতো ক্যাকটাসের খুব বেশি যত্নআত্তির প্রয়োজন হয় না। সপ্তাহান্তে একদিন সামান্য পরিমাণ পানি গাছের গোড়ায় ছিটিয়ে দিলেই হলো।
বাগানে ক্যাকটাস না লাগানোই উত্তম। কারণ বৃষ্টির ফলে কিংবা বর্ষাকালে মাটির আর্দ্রতা বেড়ে গেলে গাছের গোড়া পচে তা বিনষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য বাগানে ক্যাকটাস রোপন করতে চাইলে উঁচু জায়গা নির্বাচন করতে হয় এবং বৃষ্টির পানি যাতে গাছে সরাসরি না পড়তে পারে সে জন্য গাছের উপরে দোচালা ঘরের মতো করে স্বচ্ছ পলেথিন দ্বারা আচ্ছাদন দিতে হয়। কাঁচ কিংবা পলেথিন দ্বারা আচ্ছাদিত এরূপ ঘরকে বলা হয় ‘গ্রিন হাউস’। যে টবটিতে ক্যাকটাস রোপণ করা হবে তাতে তিন ভাগের একভাগ মাটি, একভাগ বালি এবং একভাগ পাতা পচা সার ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হয়।
এক বছর পর পর একই নিয়মে টবের মাটি পরিবর্তন করে দিতে হয়।
ক্যাকটাস চাষ বিভিন্ন পদ্ধতিতে করা যায়। সাধারণত শিকড় থেকেই ক্যাকটাসের চারা তৈরি হয়ে থাকে। তবে ক্যাকটাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য গ্রাফটিং বা জোড়কলম পদ্ধতি অনুসরণ করা আবশ্যক। দুই বা ততোধিক প্রজাতির ক্যাকটাস একত্রে জুড়ে দেয়ার কাজটিকে বলা হয় গ্রাফটিং।
এর মাধ্যমে একটি ক্যাকটাস গাছ অনন্য শিল্পকর্মের রূপ ধারণ করে। যারা ক্যাকটাসের চাষ করেন তারা দিনের পর দিন একটি গাছকে কেটে-ছেঁটে, ঘুরিয়ে-বাঁকিয়ে নানা বর্ণের মিশ্রণে গ্রাফটিং করে তাকে শিল্পসমৃদ্ধ করে তোলেন। এর ফলে গাছটি হয়ে ওঠে একটি জীবন্ত শিল্পকর্ম, হয়ে ওঠে দৃষ্টিনন্দিত, অপরূপ। পোকামাকড় ও রোগজীবাণুর হাত থেকে ক্যাকটাসকে রক্ষা করার জন্য ‘একালাক্স’ দ্রবণ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হয়। এছাড়া মাঝেমধ্যে ছত্রাকনাশক ওষুধও প্রয়োগ করা আবশ্যক।
আমাদের দেশে ক্যাকটাসের জনপ্রিয়তা দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারের ড্রইং রুম থেকে শুরু করে গ্রামের শিক্ষিত ও শৌখিন ব্যক্তিদের আঙ্গিনাতেও ক্যাকটাস শোভাবর্ধন করছে। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি নার্সারি থেকে ক্যাকটাসের চারা সংগ্রহ করা যাবে। তবে অন্যান্য ফুলগাছের তুলনায় ক্যাকটাসের চারার দাম কিছুটা বেশি। বেকার যুবক ও যুব মহিলারা মাত্র ৩০/৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ঘরে বসেই ক্যাকটাস চাষ করতে পারেন অতি সহজেই।
এর ফলে একদিকে যেমন পাওয়া যাবে অনাবিল আনন্দ, তেমনি ঘুচবে বেকারত্ব ও আর্থিক অনটন। ঢাকার বলধা গার্ডেনে দেড় শতাধিক এবং বোটানিক্যাল গার্ডেনে দুই শতাধিক প্রজাতির ক্যাকটাস রয়েছে। তবে এগুলো শুধু প্রদর্শনের জন্য, বিক্রয়ের জন্য নহে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।