রাজনৈতিক সহিংসতায় ২০১৩ সালে নিহত হয়েছেন ৫৭৩ জন। এ বছর মানবাধিকার পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক ছিল জানিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার (বিএমবিএস) বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে গতকাল নির্বাহী পরিচালক আবুল বাশার বার্ষিক সংক্ষিপ্ত এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, 'মানবাধিকার লঙ্ঘনের বছর ছিল ২০১৩। বছরব্যাপী ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকা রাজনৈতিক সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। শুধু রাজনৈতিক সহিংসতায়ই মারা গেছেন ৫৭৩ জন, যা ২০১২ সালে ছিল ১১৭ জন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৪০৩ জন, যা ২০১২ সালে ছিল আট হাজার ২৪ জন।'প্রতিবেদনে বলা হয়- হরতাল, অবরোধ, চোরাগোপ্তা বোমা হামলা, অগি্নসংযোগ, কট্টরপন্থি হেফাজতে ইসলামের উত্থান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচারে গুলিবর্ষণের মতো নৃশংস মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষা, বিদ্যুৎ, নারী উন্নয়ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায়ের মতো বেশকিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। তবে সার্বিকভাবে মানবাধিকার পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক। অর্থনীতি ও জননিরাপত্তা ছিল চরম হুমকিতে। দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ এমপি-মন্ত্রী দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পাঁচ বছরে তাদের সম্পদ কয়েকশ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে, যা টিআইবির একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়- এসিড নিক্ষেপ, পারিবারিক নির্যাতন ও সীমান্তে হত্যার ক্ষেত্রে মানবাধিকার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও রাজনৈতিক সহিংসতা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, গুপ্তহত্যার মতো মারাত্দক অপরাধ বেড়েছে। এ বছর ২৭৭ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৬২ জনকে। অজ্ঞাতনামা লাশ পাওয়া গেছে ৭৬৮ জনের। বছর জুড়ে নিখোঁজ ও গুপ্তহত্যা নিয়ে শঙ্কিত ছিল মানুষ। গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ১২১ জনের।
বিএমবিএসের মহাসচিব অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা জানান, রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে যাত্রীবাহী গাড়িতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ, রেল লাইনের স্লিপার খুলে ফেলা, পুলিশকে টার্গেট করা, রাস্তার পাশে নির্বিচারে গাছ কাটা ইত্যাদি নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, 'সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই গণতন্ত্রের চর্চা করবে। নেতারা মানুষের ভাষা বুঝে অগ্রসর হবেন। সবার মনে রাখা দরকার, মানুষের জন্য সংবিধান, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়।'
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।