আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিলিপাইনের ডায়েরী = পর্ব - ২



ম্যানিলা এয়ার পোর্ট পার হতে ১০ মিনিট এর বেশী লাগলো না। এবার গন্তব্য মানি এক্সচেন্জ। ফিলিপাইনের মুদ্রার নাম পেসো (১ ইউ এস ডলার = প্রায় ৪৪ পেসো (ডিসেম্বর ২০১৩))। এখানে যে কয়েকটা মানি এক্সচেন্জ দেখলাম কেউ বাংলাদেশী টাকা নেয় না। তাই ফিলিপাইনে আসার আগে ডলার করে আনবেন।

আমাদের ম্যানিলা অফিস থেকে জানিয়েছিলো টার্মিনাল ১ এ আমার নামের প্লেকার্ড হাতে ড্রাইভার থাকবে। একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে ই তাকে পেয়ে গেলাম। আমার ড্রাইভার টি বেশ স্মাট। বেশ ভালো ইংরেজী বলতে পারে। যাক বাকি ভ্রমন টা বোরিং হবে না।

এখন আমাদের গন্তব্য ম্যানিলা হতে ১৩০ কিমি উত্তর পশ্চিমের ছোট শহর সুবিক (SUBIC) যেখানে রয়েছে ফিলিপাইনের সবচেয়ে বড় শীপইয়ার্ড - হানজীন শীপইয়ার্ড (HANJIN SHIPYARD), এটি ফিলিপাইনে হলেও এটি আসলে কোরিয়ান শীপইয়ার্ড। দক্ষিন কোরিয়ার বুসান এ হানজীন এর প্রধান শীপইয়ার্ড। আমাকে আগামী এক বছর এই সুবিক শহরে থাকতে হবে, কর্মস্থল হানজীন শীপইয়ার্ড।

আমাদের প্রাইভেট কার টি এয়ার পোর্ট পেরিয়ে কিছু দুর আসতেই KFC দেখেই গাড়ি দাড় করালাম লান্চ করার জন্য। এখানে ফাষ্ট ফুড সপ KFC, McDonald's, Jolibee, ChowKing রাস্তার ওলিগলিতে।

তবে এখানে বার্গার থেকেও জনপ্রিয় চিকেন ফ্রাই, আর চিকেন ফ্রাই এর সাথে এক বাটি ভাত পাবেন। এদের প্রধান খাদ্য হল ভাত,তিন বেলা ভাত খেতে পছন্দ করে, তাই ফাষ্ট ফুড সপে ভাতের আইটেম ই বেশী। তবে যারা ঝাল ছাড়া খাবার খেতে পারেন না, তাদের জন্য দুঃসংবাদ। এখানের সব খাবার ই মিষ্টি মিষ্টি। প্রথম মুখে দিলেই মনে হবে খাবার এ চিনি দেওয়া আছে।

ঝাল খবারের ব্যবস্থা আছে কোরিয়ান রেষ্টুরেন্ট এ। ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট নেই বল্লেই চলে।

এয়ার পোর্ট রোড ধরে যখন শহরের রাস্তায় আসলাম তখন এটাকে ঢাকা বলে মনে হতে লাগল, কারন আর কিছু নয়, ট্রাফিক জ্যাম। শুনেছিলাম ম্যানিলায় মেট্রো রেল (LRT, MRT) আছে, তাই এই ট্রাফিক জ্যাম আশা করি নাই। ড্রাইভার বল্ল অফিস ডে তে এমন চিত্র ই নাকি কমন, তবে ছুটির দিনে নাকি আরো বেশী হয়।

কারন এখানে ছুটির দিন মানেই বেড়ানো, বাইরে খাওয়া, সপিং ইত্যাদি। প্রায় ২ ঘন্টা লাগল এয়ার পোর্ট থেকে হাইওয়ে তে আসতে। কিন্তু একি ! হাইওয়ে তো প্রায় গাড়ী শূন্য। কারন টা বুঝতে বেশী সময় ও লাগল না। চলার পথে বুঝলাম এখানে সব হাইওয়ে ই প্রাইভেট, নামে ও ভিন্ন ভিন্ন, যেমন SCTEX, NLEX ....।

আর তাই অবধারিত ভাবে ই কিছুদূর পরপরই টোল প্লাজা। টোলের হার ও বেজায় মন্দ নয়। এই ১৩০ কিমি রাস্তায় ৫ বারে টোল দিতে হল বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৫০০ টাকা। ভালো কথা কোন ব্রীজ কিন্তু পার হতে হয়নি, হলে হয়ত টোলের পরিমান টাও বাড়ত। ফিলিপাইনের রাস্তায় ট্রাফিক সিস্টেম কিন্তু আমাদের উল্টা, মানে গাড়ীতে বাম পাশে ড্রাইভার রাস্তার ডান পাশ ধরে চলবেন।

হাইওয়ে তে গাড়ীর জন্য গতিসীমা সর্বনিন্ম ৭০ আর সর্বোচ্ছ ১২০ কিমি/ঘন্টা। রাস্তায় দুই পাশে দুটি করে লেন। ডান লেন ধরেই সবাইকে চলতে হবে, বাম লেনটি ওভার টেকিং আর জরুরী যানবাহন এর জন্য নির্ধারিত।

ম্যানিলা হতে সুবিক পর্যন্ত এলাকাটি পাহাড়ি। যেখানে সেখানে বাড়ি ঘর নেই।

তবে মাঝে মাঝে ছোট ছোট স্যাটেলাইট শহর পার হলাম। পাহাড় গুলো যেন সবুজের গালিচা। পাহাড়ের পাশে সমতল ভুমি কে অনাবাদি ই মনে হল। বড় বড় আগাছা ই চোখে পড়ল। তাই জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে সবুজে আপনার মন ভরে যাবেই।

এই সবুজে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ই সুবিক সিটি গেট দিয়ে আমরা প্রবেশ করলাম শহরে।


চলবে..........................।

প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিকান Part 1

আগামি পর্ব এক বাংলাদেশী র অসাধারন কৃতী ..............

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.