প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে বিএনপিসহ সব দলের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা মোকাবিলায় সরকারের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে তিনি বলেন, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। যারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে খেলছে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আশ্বাস দেন আগামী নির্বাচন আলোচনা করেই সমাধান করা হবে। তবে সে আলোচনার জন্য বিএনপি নেত্রীকে সন্ত্রাস ও সহিংসতা পরিহার এবং যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদী জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বিএনপিসহ সব দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আলোচনার যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তা তাৎপর্যের দাবিদার। দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট অংশ না নেওয়ায় এ নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। সরকার পক্ষও স্বীকার করে নিয়েছে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য তারা বিরোধী দলের বর্জনের মুখেও নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছে। বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করলেও শর্ত জুড়ে দিয়ে বলা হয়েছে, এ জন্য সন্ত্রাস ও সহিংসতা পরিহার এবং যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এমন নির্বাচনের বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশের কোনো অবকাশ নেই। তবে এ দাবি আদায়ের নামে যারা সন্ত্রাস ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে তা অবশ্যই অগ্রহণযোগ্য। জনগণের জানমাল রক্ষা যে কোনো সরকারের অবশ্য কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। সে কর্তব্য পালনে সরকার সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারেনি। যারা সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার নির্বাচন দাবির আড়ালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার রোধ করতে চায় এবং সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে দেশবাসীকে জিম্মি রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বিরুদ্ধেই কার্যত অবস্থান নিয়েছে। তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন কতটা এগিয়ে যেতে পারবে তা সময় থাকতেই ভেবে দেখতে হবে। আমরা মনে করি সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এমন নির্বাচন যেমন প্রাসঙ্গিক তেমন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জননিরাপত্তার বিষয়টিও সমগুরুত্বপূর্ণ। যারা ককটেল ও পেট্রলবোমার অনুশীলনে রত তাদের সঙ্গে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী কোনো শক্তির দূরতম সম্পর্কও থাকা উচিত নয়। সমঝোতার স্বার্থে সরকারকে যেমন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে তেমন বিএনপিসহ সব বিরোধী দলকেও সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটাতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।