আমি বাংলাদেশের দালাল|
আমার আর আমার শ্বশুরের গোপন ফোনালাপ ফাস হয়ে গেছে।
(৫ই জানুয়ারী, ২০১৪ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩৫মিনিট। )
ভিটামিন সিঃ ফ্রিং.... ফ্রিং,....... (ওপাশে কল রিসিভ করার শব্দ পেলাম) আস-সালামু আলাইকুম।
শ্বশুরঃ ওয়ালাইকুম আস-সালাম। ওহ ভিটামিন, কেমন আছো?
ভিটামিন সিঃ ভালো আছি আউব্বা, আপনি কেমন আছেন?
শ্বশুরঃ ভালো-ই আছি।
নির্বাচনী দায়িত্বে ছিলাম। একটু আগে ব্যারাকে ফিরলাম। এইমাত্র খেতে বসেছি।
ভিটামিন সিঃ আমি দুঃখিত আউব্বা, খাওয়ার সময় ফোন দিয়ে বসে আছি। ঠিক আছে আপনি খান।
আমি না হয় পরেই ফোন দিবো।
শ্বশুরঃ না না, ঠিকাছে। তুমি বলো তারপর না হয় খাবো।
ভিটামিন সিঃ সারাদিন ডিউটি করে আসছেন, এখন একটু খেয়ে নিন।
শ্বশুরঃ প্লেটে এখনো ভাত নেই নাই।
তুমি বলো।
ভিটামিন সিঃ দিনের বেলায় ফোন দিই নাই আপনি ব্যাস্ত ছিলেন নির্বাচনী দায়িত্বে তাই। মৌসুমীর কাছ থেকে (মৌসুমী উনার মেয়ে, আমার প্রথম বৈধ বউ) আপনার খবর নিয়েছি দিনের বেলা।
তা আপনাদের ওখানে নির্বাচন কেমন হলো?
শ্বশুরঃ আমি এক নির্বাচনী কেন্দ্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান ছিলাম। আমার কেন্দ্রে কোন সহিংসতা হয় নাই।
শুনেছি আশে-পাশের কয়েকটা কেন্দ্রে একটু সমস্যা হইছে।
ভিটামিন সিঃ কেন আউব্বা, আপনার কেন্দ্রে কি কোন বিএনপির ভোটার বা সমর্থক নেই?
শ্বশুরঃ ছিল; কিন্তু কিছুদিন আগে এখানে এক সহিংসতায় আমাদের ওসি আহত হয়। তারপর থেকে এখানে পুলিশ পাহারা ছিলো। তাই তাদের উৎপাত এখানে কম। তাছাড়া (টা... জেলার) পুলিশের এসপি তো আমাকে ঘন্টাখানেক পরপর ফোন দিয়ে খবর নিচ্ছিল আর অর্ডার করেছে যে কেন্দ্রের আশে পাশে তাদের কোন কর্মী সমর্থক দেখলেই যেন ফায়ার করি।
পরে সেটা তারা ম্যানেজ করবেন।
ভিটামিন সিঃ পাশ করবো কে?
শ্বশুরঃ কেউ না। পাশ করার মতো ভোট কেউ ই পায় নাই। যদি শতকরা ৩৩ পাইলে পাশ হয় তাইলে কেউ ই পাশ করবো না। আমার কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৩৩০০ এর উপরে।
দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট কাষ্ট হইছে মাত্র ৫২ টা।
ভিটামিন সিঃ তারপর কি হইলো? টিভির খবরে দেখলাম কিছু জালভোট নাকি পড়ছে??
শ্বশুরঃ হুম উপর থেকে বারবার নির্দেশ আসছিলো প্রিসাইডিং অফিসারের উপর যেন মোট ভোট কাষ্টিং ৫৫ ভাগের বেশি দেখানো হয়। কিন্তু প্রিসাইডিং অফিসার বারবার এটা করতে পারবেন না বলছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন ৪৫% ভোট দেখানোর চেষ্টা করা হবে। কিন্তু উপরওয়ালারা মানছিলো না।
ভিটামিন সিঃ না, আমি বলছিলাম যে লীগের ছেলেরা কেন্দ্রে ঢুকে ভোট দিয়েছে কিনা।
শ্বশুরঃ হ্যাঁ, বেলা ২.০০ টার পর তো তারাই ভোট দেয়। আনসার রা ভোট দেয়, এজেন্টরা ভোট দেয়, দায়িত্বরত শিক্ষকরা ভোট দেয়। তারপরই তো ভোট কাষ্ট হলো ৫২%। সেই ফলই তো পরে কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
ভিটামিন সিঃ ধন্যবাদ আউব্বা। আপনি এখন খাওয়া দাওয়া করেন। আর সতর্কভাবে চলাফেরা করবেন। নির্বাচনের পরেও সহিংসতা হতে পারে। আপনার মেয়ে ফোন দিতাছে।
শ্বশুরঃ আচ্ছা। তুমিও ভালো থেকো। রাখি।
ভিটামিন সিঃ আল্লাহ হাফেজ। বলেই ফোন রেখে দিলাম।
বি.দ্রঃ এই লেখায় কেউ কোন বাস্তবতা খুজে বেড়াবেন না। এটা এন্টার্কটিকা মহাদেশের সাগরতলার একটি গনতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনী চিত্র। বাংলাদেশের সাথে এর কোন মিল নেই। কেউ যদি কোন মিল খুজে পান তাহলে এই পোষ্টের লেখক, লেখকের শ্বশুর বা সামু কেউই দায়ী থাকবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।