স্থানীয় সরকার হলো জনগণের সরকার। স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে গণতন্ত্রচর্চার পাশাপাশি সরকারব্যবস্থার সঙ্গে নাগরিকদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এ কারণে উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে স্থানীয় সরকারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে সাধারণ নাগরিকরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বেশি অংশ নেয়। বাংলাদেশে স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে শুরু থেকেই। স্থানীয় সরকারগুলোতে মেয়াদ শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠান কালেভদ্রেই হয়ে থাকে। দেশের বৃহত্তম স্থানীয় সরকার ঢাকা সিটি করপোরেশনে সাড়ে ছয় বছর ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ মেয়র, কাউন্সিলর এবং এখন সরকারি আমলা ও কর্মচারীদের রাজত্ব চলছে। সেদিক থেকে দেশের প্রায় ৫০০ উপজেলায় মেয়াদ শেষে ফেব্রুয়ারি থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে। তবে এ ব্যতিক্রমের পেছনে স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার সদিচ্ছা, না নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার অভিলাষ- কোনটি জড়িত তা স্পষ্ট করা হয়নি। কারণ গত পাঁচ বছরে উপজেলা ব্যবস্থাকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রাখা হয়েছিল। সংসদ সদস্যদের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়েছে। উপজেলা পরিষদকে সক্রিয় করতে আইন সংস্কারের ব্যবস্থা না নিয়ে মেয়াদ শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে তোড়জোড় চলছে তাতে সাধারণ মানুষ কতটা লাভবান হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমরা মনে করি, সময়মতো উপজেলা নির্বাচন অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তবে নির্বাচনের পাশাপাশি উপজেলা ব্যবস্থাকে অর্থবহ করে তুলতে সরকারকে যত্নবান হতে হবে। উপজেলা পদ্ধতিকে সক্রিয় এবং অর্থবহ করে তুলতে পারলে উপজেলাকেন্দ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা যেমন বাড়বে তেমন গণতন্ত্রচর্চাও নিশ্চিত হবে। দশম সংসদ জনগণের ক্ষমতায়নে উপজেলা পদ্ধতিকে সক্রিয় করার পদক্ষেপ নিলে তা একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।