আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রথম দিনেই গুটিয়ে গেল টাইগাররা

দ্বি-স্তর ক্রিকেট প্রথা চালু হলে ভবিষ্যতে টেস্ট খেলতে পারবেন না- এমন প্রস্তাবের চাপেই কি ভেঙে পড়লেন মুশফিকুর রহিমরা? না, উইকেটের বাউন্স ও মুভমেন্টের সঙ্গে মানিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন? অথবা দায়িত্বহীন ব্যাটিং করেছেন? চাপে ভেঙে পড়া কিংবা উইকেটকে বুঝতে ব্যর্থ হওয়া অথবা দায়িত্বহীন ব্যাটিং-যেভাবেই বিশ্লেষণ হউক না কেন বাংলাদেশের ইনিংস, সেই পুরনো এবং পরিচিত রূপেই টাইগারদের দেখলো মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম। প্রতিপক্ষের বোলারদের সুইং ও বাউন্সের সমন্বিত সাঁড়াশি আক্রমণ ছিন্নভিন্ন হয়ে মাত্র ২৩২ রানে গুটিয়ে গেছে মুশফিকবাহিনী।

যে উইকেটে ব্যর্থ হয়েছেন টাইগাররা, সেখানেই সাবলীল ব্যাটিং করেছেন দুই লঙ্কান ওপেনার। স্বাগতিক বোলারদের সবধরনের আক্রমণকে সামলে বিনা উইকেটে ৬০ রান তুলে দিন পার করেছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।

স্পোর্টিং উইকেট চেয়েছিলেন দুই টাইগার ক্রিকেটার সাকিব ও মুশফিক।

গত এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ভালো ক্রিকেট খেলতে থাকা টাইগারদের এমন চাওয়াকে অনেকেই যৌক্তিক মনে করেছেন। অনেকের ভ্রু আবার কুঁচকে উঠেছিল। কেননা অতীত নিকটে হারারের সেই প্রথম ইনিংসের কথাই ভেবেছিলেন তারা। হারারের বাউন্সি উইকেটে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে মুশফিকবাহিনী গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৩৪ রানে। যদিও সেটা ছিল দেশের বাইরে।

ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো ক্রিকেট খেলেছে টাইগাররা সলিড ব্যাটিং উইকেটে। তাই ঘরের মাঠে স্পোর্টিং উইকেট চাওয়াকে একটু বেশিই মনে হয়েছে অনেকের। চাওয়াটা যে ভুল ছিল, সেটা দিন শেষেই বোঝা গেছে।

স্পোর্টিং উইকেটে বাউন্স থাকবে; এছাড়া শীতকালে কুয়াশার জন্য উইকেটে ময়েশ্চার থাকবে-এটাই স্বাভাবিক। তাই টস জিতে ফিল্ডিং নিতে নিতে কোনো বিলম্ব করেননি লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলি ম্যাথিউস।

লাঞ্চের আগে স্বাগতিক দলের প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফিরিয়ে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেন ম্যাথিউস। তবে চার স্বাগতিক ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন বাজে শটস খেলতে যেয়ে। অযথা পুল খেলে আউট হন ড্যাসিং তামিম। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা শামসুর রহমান স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন বড় ইনিংসের। কিন্তু উইকেটের অনেক বাইরের বলকে অযথা কাট খেলতে যেয়ে গালিতে সহজ ক্যাচ দেন শামসুর।

ফলে বড় ইনিংস খেলার স্বপ্নটা শেষ হয়ে যায় ৩৩ রানে। মার্শাল আইয়ুব তার স্বাভাবিক খেলা 'অন দ্য রাইজ' খেলতে যেয়ে মিস করেন বলের সুইং। ফল লেগ বিফোর। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারেননি মার্শাল। উইকেটের বাউন্সকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে মুমিনুলকে সাজঘরে ফেরান লাকমাল।

৫৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি বাধেন দলের দুই ব্যাটিং স্তম্ভ অধিনায়ক মুশফিক ও সাবেক অধিনায়ক সাকিব। দুজনে পঞ্চম উইকেটে যখন ব্যাট করছিলেন, তখন একবারও মনে হয়নি উইকেটে বাড়তি বাউন্স রয়েছে। কিংবা মুভমেন্ট রয়েছে। দুজনেই সাবলীল ব্যাটিং করে পঞ্চম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৮৬ রান। সাকিব ব্যক্তিগত ৫৫ রানে রঙ্গনা হেরাথের আর্মারে সুইপ খেলতে যেয়ে লেগ বিফোর হন।

অবশ্য ব্যক্তিগত ৪৮ রানের মাথায় ক্যাচ দিয়েও স্লিপ ফিল্ডারের অসতর্কতায় বেঁচে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সাকিবের বিদায়ের পর দলকে টেনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন অধিনায়ক মুশফিক। দলীয় ২০৩ রানে লাকমালের সুইং বুঝতে ব্যর্থ হলে ৬১ রানে লেগ বিফোর হন টাইগার অধিনায়ক। অবশ্য টেলিভিশন রিপ্লেতে পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে বলটি তার ব্যাটের কানায় লেগেছিল। মুশফিকের বিদায়ের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস।

গুটিয়ে যায় ৬৩.৪ ওভারে ২৩২ রানে।

প্রথমদিনে টাইগারদের গুটিয়ে যাওয়ায় মনে হয়েছিল উইকেটের সঙ্গে জোর লড়াই করতে হবে ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু সফরকারী দুই ওপেনার এতটাই আরামে ব্যাটিং করেন যে, মনে হচ্ছিল তাদের অধিনায়কের কথাই ঠিক। আগের দিন লঙ্কান অধিনায়ক বলেছিলেন, উইকেট ব্যাটসম্যানদের সহায়তা করবে। বিনা উইকেটে ৬০ রান তুলে অধিনায়কের কথাকে যৌক্তিক প্রমাণ করে ছাড়েন ২৮ রানে অপরাজিত থাকা করুণারত্নে ও ৩০ রানে অপরাজিত থাকা সিলভা।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.