রাশাদ কে নিয়ে বড় বিপদে আছে সানজিদা। ছেলেটা সুযোগ পেলেই বলবে “ আম্মু, গপ্পো বলো। ” এই বয়সে বাচ্চারা গল্প শুনতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক, এর মধ্যে বিপদের কিছু থাকার কথা না, কিন্তু আছে! সানজিদা প্রথম কয়েক দিন চেষ্টা করেছিল ও’র নিজের ছোট বেলায় শোনা সুন্দর সুন্দর রুপকথা গুলো বলতে। বিপদের শুরু সেখানে থেকে!
প্রথম দিনের ঘটনা, সানজিদা গল্প শুরু করেছে, রাজকন্যা কে দৈত্য ধরে নিয়ে গেছে, রাজকুমার তাকে বাচাতে যাবে সেই গল্প। গল্প একটু এগোনোর আগেই রাশাদের প্রশ্ন শুরু;
রাশাদঃ আম্মু, দৈত্য কি?
সানজিদাঃ দৈত্য হচ্ছে, বড় বড় শিং ওয়ালা অনেক লম্বা আর মোটা মানুষ।
সানজিদা বুঝতে পারে রাশাদ বিশ্বাস করবে কি না দ্বিধায় আছে। তবে আর কোন প্রশ্ন করে না।
গল্প আর একটু এগোয়।
রাশাদঃ আম্মু, রাজকুমার কেন রাজকন্যা কে বাচাতে যাবে, আর কেও কেন যাবে না?
সানজিদাঃ রাজকুমার রাজকন্যার বন্ধু তো তাই।
রাশাদঃ তা হলে রাজপুত্র কেন পুলিশ কে বলবে না? পুলিশ কেন রাজকন্যা কে ছাড়াতে যাবে না?
সানজিদাঃ তখন পুলিশ ছিল না আব্বু।
চুপ করে গল্প শোন, না হলে কিন্তু আর বলবো না।
রাশাদ আর প্রশ্ন করে না। চুপ করে শুনতে থাকে। কিন্তু রাজকুমার পংখীরাজ ঘোড়ায় চড়লে আর রাশাদ চুপ থাকতে পারে না।
রাশাদঃ আম্মু, ঘোড়া কি ওড়ে? আমিতো কখনো দেখিনি!
সানজিদাঃ (কিছুটা বিব্রত হয়ে) এখন ওড়েনা বাবু, আগে উড়তো।
রাশাদের সরল প্রশ্নঃ তা হলে কি আগে গরু, ছাগল গাছ এরাও উড়তো?
এই প্রশ্নের উত্তর সানজিদার জানা নেই, আর রাশাদও ততক্ষনে তার সিদ্ধান্তে পৌছে গেছে, “যাহ! তুমি খালি ভুল গল্প বলো। আমি এই গল্প শুনবো না”। এবং তার পরই চিৎকার করে কান্না শুরু। “আমাকে ভালো গল্প বলতে হবে, আমি ভুল গল্প শুনবো না...”।
সানজিদা বুঝতে পারছে না, যে ছেলে এত কিছু বোঝে, গল্প শুনতে চেয়ে সে কান্না করে কি ভাবে!!
বাচ্চারা বাচ্চাই আছে।
তারা গল্পও শুনতে চাইবে। কিন্তু তারা আর ভুত পেত্নি, দৈত্য দানোর গল্প শুনতে চায়না। তাদের গল্পে কোন দুষ্ট বুড়ি থাকতে নেই। তারা শুনবে, রুপকথার গল্পই শুনবে। তবে সেই রুপকথা হবে নভোজানে করে মহাকাশ জয় করার, গ্রহ থেকে গ্রহ, নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে ছুটে চলার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।