২০১২ সালের শ্রেষ্ঠ নায়ক হিসেবে জাতীয় সম্মান পেলেন শাকিব খান। ১৯৯৬ সাল থেকে ঢালিউডের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে আছেন এই শীর্ষ নায়ক। তার ধারে-কাছে কেউ নেই, দেশীয় চলচ্চিত্রের দুর্দিনে একাই বীরদর্পে ঢাকাই চলচ্চিত্রকে ত্রাণকর্তা হয়ে আগলে রেখেছেন শাকিব। তার অভিনয়শৈলীতে মুগ্ধ দর্শক নির্মাতা। তাই তাকে ঢালিউডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না নির্মাতারা।
ঢালিউড চলচ্চিত্র শিল্পকে এখনো শাকিব খানই বাঁচিয়ে রেখেছেন, এ কথা চলচ্চিত্রকারদের। নায়করাজ রাজ্জাক বলেন, শাকিব সহজেই অভিনয়গুণ আয়ত্ত করে নিয়েছে। তাই ওর কাজ গ্রহণ করেছে দর্শক। ও চলচ্চিত্রে না এলে নায়কের অভাবে হয়তো এই শিল্প এতদিনে বন্ধ হয়ে যেত। প্রযোজক খোরশেদ আলম বলেন, শাকিব খান নিঃসন্দেহে অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়ক।
নিঃসংকোচে তার ওপর আস্থা রেখে এগোনো যায়। প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, শাকিব খানের ধারে-কাছে সহজে কেউ ঘেঁষতে পারবে কিনা তাতে সন্দেহ আছে। কারণ অভিনয়ে সে অলরাউন্ডার। এ সময়ের শিল্পীদের তার কাছ থেকে শেখার অনেক কিছুই আছে। মিশা সওদাগর বলেন, অভিনয়ের প্রতি তার আন্তরিকতা আর কর্মনিষ্ঠা সহজেই তাকে শীর্ষ শিল্পীতে পরিণত করেছে।
তার আসন দখল করা কারও পক্ষে সহজ হবে কিনা জানি না। এ তো গেল শাকিবকে নিয়ে চলচ্চিত্রকারদের শুভকামনাময় মন্তব্য। কিন্তু ঢালিউডে শাকিবের বর্তমান অবস্থা কেমন। ১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়েছেন এই নায়ক। কিন্তু ২০১২ সালে এসে কোনো কোনো নির্মাতা এবং প্রেক্ষাগৃহ মালিক বলছিলেন শাকিবের চলচ্চিত্র দর্শক আর দেখছে না।
সবার মনে হতাশার সুর। শাকিবও নিজের ব্যর্থতার জন্য নিজেকেই দায়ী করলেন। তার কথায় নির্মাতাদের অনুরোধ ফেলতে পারিনি বলে বাছ-বিচার না করেই একটানা কাজ করতে হয়েছে। তাই গল্প এবং আমার অভিনয়ে দর্শক মানের অভাববোধ করেছেন। এ অবস্থা শীঘ্রই কাটিয়ে উঠব।
হলোও তাই। ২০১৩ সালে প্রথমে 'নিষ্পাপ মুন্না' এবং পরে 'মাই নেম ইজ খান' দিয়ে আবার দর্শকহৃদয়ে তার আসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন শীর্ষ নায়ক। সেই সঙ্গে ২০১২ সালের শ্রেষ্ঠ নায়কের জাতীয় তকমাও জুটল তার ভাগ্যে। 'খোদার পরে মা' চলচ্চিত্রের জন্য তাকে দেওয়া হলো জাতীয় সম্মান। এটি অবশ্য নায়ক হিসেবে তার দ্বিতীয় জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তি।
শাকিব বলেন, এখন আমি চলচ্চিত্রের প্রতি আরও সিরিয়াস হব। শুধু অভিনয় নয়, আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করে বিদেশ থেকেও দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনব। শাকিব তার কথা রাখতে ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু করছেন নিজের প্রযোজিত 'হিরো দ্য সুপার স্টার' চলচ্চিত্রের নির্মাণকাজ। এতে বিশ্বের সেরা আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানো হবে। ইতোমধ্যে চিত্রায়ণের জন্য অত্যাধুনিক অ্যালেঙ্া ক্যামেরা আনা হয়েছে।
এদিকে গত বছরের ঈদে মুক্তি পাওয়া 'মাই নেম ইজ খান' সুপার ব্যবসাসফল হওয়ায় নির্মাতারা হতাশা ভুলে শাকিবের দরজায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। সম্প্রতি তার অভিনীত 'রাজত্ব' চলচ্চিত্রের ট্রেলর ও একটি গান নেটে প্রকাশ হলে দর্শক নির্মাতাদের চোখে অন্য এক অধিক সমৃদ্ধ শাকিবের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। সবার কথায় ঢালিউডে অতীতে যেমন ছিল ঠিক তেমনি এখনো রয়েছে শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের রাজত্ব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।