আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ

ঈশ্বরই জ্ঞান , জ্ঞানই আত্মা। মানুষ মাত্রই জ্ঞানী। আমি মানুষ,আমার ঔরসে জন্মায় দেবতার কারিগর।

সরকারি/বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সকল দুর্নীতির মূল উৎস আর এই দুর্নীতির চাবিকাঠি হচ্ছে রাজনীতি।

রাজনীতির এখন গুনগত পরিবর্তনের খুবই প্রয়োজন ।

যে দল বা যারা এই পরিবর্তনটি নিয়ে আসবে তারাই জাতির আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে । রাজনীতির এই পরিবর্তন সময়ের দাবী। বহু আগেই এই পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল । কেন এই পরিবর্তন ? কি প্রয়োজন এই পরিবর্তনের ?

আজকের জোট রাজনীতির দিকে যদি তাকাই এবং বিশ্লেষণ করি তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর একটি করুন দৈন্য দশা স্পষ্ট প্রতিয়মান । বড় দলগুলো আজ জোট ছাড়া বা অন্য ছোট রাজনৈতিক দল ছাড়া প্রায় পঙ্গু ।

ছোট আগাছা , পরগাছা দল নিয়ে বলার কিছুই নাই । কেন বড় দলগুলোর আজ এই করুন দশা । পরিষ্কার উত্তর , জনতার রাজনৈতিক দলগুলোর উপর থেকে সকল আস্থা শেষ হয়ে গেছে । সেই সাথে এই ঘুনে ধরা রাজনীতির উপরও জনতার কোন আস্থা নাই । অর্থাৎ রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল দুটোই জনতার দ্বারা পরিত্যাক্ত যার জ্বলন্ত প্রমাণ জোট রাজনীতি।



কিন্তু কত দিন এই জোড়া তালি দিয়ে চলবে । আজ কানারে টানো কাল লুলারে আনো শিয়াল কুত্তাতো বাংলাদেশ জন্মের সময় থেকেই সব দলেই ছিল এখন তো দেখি ছাগল ভেড়া থেকে টিকটিকি, চিকা, চামচিকা পর্যন্ত দলে টানতে হয় সরকার বা শক্ত বিরোধী দল বা জোট তা দেখানোর জন্য। কিন্তু রাজনীতির ছেড়া লুঙ্গিতে আর কত তালি দিয়ে চালাবেন? কত দিন চলবে ?

রাজনীতির এখন নতুন পথ নতুন মত তৈরি করতে হবে কিন্তু অবশ্যই ৭১ এর আদর্শের জায়গা থেকে। নেতা বা দল এই পরিবর্তন করলে ভালো জনতা অযথা কিছু হয়রানি থেকে বাঁচবে । যদি না করেন তাহলেও এই পরিবর্তন হবে আপনা আপনিই হবে।

মজার বিষয়টি হচ্ছে সমাজ ব্যবস্থা বা রাজনীতিও ঠিক প্রকৃতির মত নিজেই নিজের অবস্থান চাহিদা মত ঠিক করে নেয় । কিন্তু যদি সময়ের চাহিদা মত রাজনীতির পরিবর্তন গুলো আসতো তাহলে ১৫ই আগস্ট , ৮০র গণ অভ্যুথ্যান, ১/১১ এই তারিখগুলো কালও কালিতে অঙ্কিত হতনা। আজকের জোট রাজনীতি এই পরিবর্তনের যেমন ঘোষণা দিচ্ছে তেমনি সকল দলকে সম্ভাব্য বিপদের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে । ঠিক যেভাবে গাড়ির তেল শেষ হলে তা লাল বাতি জ্বলে সতর্ক করে । রাজনীতির আজ ঠিক সেই অবস্থা লাল বাতি জ্বলছে।



এক দিনে পরিবর্তন হবেনা । কিন্তু পরিবর্তনের গাড়ীটি ট্র্যাকে তুলে দিতে হবে বা পরিবর্তনের চাকা সচল করতে হবে । প্রথমেই নিষিদ্ধ করতে হবে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি। অপ রাজনীতির মূল এবং অন্যতম একটি সূতিকাগার হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি । মূলত প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতিই রাজনীতি নষ্ট করার মূল কারণ ।

কিন্তু আমি রাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার শতভাগ পক্ষে এবং জনতার আস্থা ফেরানোর জন্য তাই করা উচিত।

আমি বলছি সরকারী বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য। একটু লক্ষ্য করি রাজনীতি নষ্ট হচ্ছে কোথায় কোথায় ? অপ রাজনীতি বা রাজনীতির বা দলের দোহাই দিয়ে আইন লঙ্ঘন এবং সকল অপকর্ম কোথায় হচ্ছে ? উত্তর সকল সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। বিশ্ববিদ্যালয় , আদালত , কল কারখানা সকল জায়গায় এই রাজনীতির নামেই চলছে অপ রাজনীতি।

কিন্তু এই সকল সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই গুটি কয়েক লোক দিয়ে কি দল চলে ? মোটেও না জরীপ করলে দেখা যাবে এরা রাজনৈতিক দলের জনশক্তির ১% না ।

অথচ এরাই দলের নাম ভাঙ্গিয়ে সবচেয়ে বেশী লাভবান কিন্তু খরচের খাতায় দলের নাম অর্থাৎ এরা দলের নাম বেচে যে লাভটি করে তার সম্পূর্ণ দায়ভার বা খরচ বহন করে দল। যার ফল জনতা দলকে দোষারোপ করে অথচ অনেক সময় দল হয়ত জানেইনা যে তার নাম দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। সুতরাং দলকে সচেতন হতে হবে এবং হিসাব রাখতে হবে তার নাম কে কোথায় বিক্রি করছে ?

যখন প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়ে যাবে চাইলেই দলের নাম বিক্রি করা যাবেনা। ফলে সকল কাজে শৃঙ্খলা আসবে অনিয়ম অনেকাংশে কমবে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি নিষিদ্ধ বলতে যারা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বা চাকুরিরত বা জড়িত তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ অবশ্যই তা নয় ।

সবাই রাজনীতি করবে কিন্তু প্রতিষ্ঠানের বাইরে । একজন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে , উকিল আদালতের বাইরে , শ্রমিক কারখানার বাইরে , ডাক্তার হাসপাতালের বাইরে গিয়ে রাজনীতি করবে কিন্তু কোন অবস্থাতেই স্ব প্রতিষ্ঠানে নয়। সরকারী বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে সকল রাজনীতি নিষিদ্ধ করা খুবই প্রয়োজন।

প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে ব্যক্তি রাজনীতি নয়।


ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে খুব বেশী বিশ্লেষণের প্রয়োজন মনে করিনা ।

কারণ জনতা এবং সরকার সকলেই এর প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে । বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ । এটি হলে জাতি আসলেই একটি অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে।

বাবা মা যেমন তার মেধাবি সন্তানের কাছে ভালো ফল আসা করে তেমনি মুক্তি যুদ্ধের আদর্শের দল হিসেবে জনতা আওয়ামী লীগের কাছেই তাদের প্রত্যাশা বেশী করে । তাই জনতা ভোট দেয়নি কিন্তু নির্বাচনের বিপক্ষে রাজ পথেও নামেনি ।

এটি আওয়ামী লীগের প্রতি জনতার একটি মৌন সমর্থন তাতে কোন সন্দেহ নাই । তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই লীগের কাছে জনতার প্রত্যাশা অনেক বেশী । আশা করি শেখ হাসিনা তার দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে রাজনীতির গুণগত ফলপ্রসূ পরিবর্তন করে রাজনীতির প্রতি জনতার আস্থা ফিরিয়ে আনবে ।

প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি বন্ধ হলে ৫০% দুর্নীতি শেষ এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে ৪০% দুর্নীতি শেষ হয়ে যাবে ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.