আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাতিল হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ

গ্রামীণ ব্যাংকের মূল অধ্যাদেশ বাতিল করে তৈরি করা হচ্ছে নতুন আইন। এমনকি গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ জারির পর সেটির যে সংশোধনী আনা হয়েছে সেসব সংশোধনীও বাতিল হচ্ছে। এর বদলে গ্রামীণ ব্যাংক আইন-২০১৩ নামে একটি নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

১৯৮৩ সালে সামরিক সরকারের জারি করা এক অধ্যাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক গঠিত হয়। এরপর ১৯৮৬ ও ১৯৯০ সালে একাধিকবার কয়েকটি ধারা সংশোধিত হলেও 'গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩-এর মৌলিক কোনো পরিবর্তন হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলে এমডি নিয়োগে সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ২০১২ সালেও একবার সংশোধন করা হয় অধ্যাদেশটি। তারপরও গ্রামীণ ব্যাংকের সৃষ্টির পেছনে ১৯৮৩ সালের অধ্যদেশটিই মূলভিত্তি হিসেবে রয়ে গেছে। এখন সেটিই বাতিল করে তৈরি হচ্ছে নতুন আইন।

আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার জন্য তৈরি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, 'দ্য গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৩-এর সকল সংশোধনীসহ রহিত করে প্রস্তাবিত গ্রামীণ ব্যাংক আইন-২০১৩ বাংলায় প্রণয়নের নিমিত্ত খসড়া বিল নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করা যেতে পারে।' গতকাল সচিবালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম। এদিকে নতুন এই আইন সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ), এনবিআর, এসইসিসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের মতামত চাওয়া হয়েছে। ২৫ আগস্টের মধ্যে সংস্থা প্রধানের সইসহ মতামত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠাতে হবে। গতকাল সচিবালয়ে গ্রামীণ ব্যাংক সংক্রান্ত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম। জানতে চাইলে ব্যাংকিং সচিব এম আসলাম আলম বলেন, ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংক চলবে না। ব্যাংকটি বর্তমানে যে ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছে তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই নতুন আইন করা হচ্ছে। এ ছাড়া আদালতের রায়ে সামরিক সরকারের আমলে জারি করা সব অধ্যাদেশ বাতিল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেও আইনটি নতুনভাবে করার প্রয়োজন পড়েছে বলে জানান সচিব। তিনি বলেন, সামরিক সরকারের জারি করা অধ্যাদেশগুলোর মধ্যে প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য যেগুলো প্রয়োজন সেগুলো সাময়িকভাবে আইনে পরিণত করা হয়েছে। এখন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাময়িকভাবে করা সব আইন নতুন করে বাংলায় তৈরি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বাদ যাবে কিছু ধারা : নতুন আইনে ব্যাংকটির মূলধন বাড়ানো ছাড়াও বেশকিছু ধারা বাদ দেওয়া ছাড়াও হালনাগাদ করা হবে বলে জানান সচিব। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি একটি প্রজেক্ট ছিল। অধ্যাদেশে বলা আছে, জনবল নিয়োগে প্রজেক্টের কর্মচারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু ত্রিশ বছর পর বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধারাটি রাখার আর দরকার নেই। সে কারণে নয়া আইনে এটি বাদ যাবে। বোর্ডের কোরাম গঠনে একটি ধারার উল্লেখ করে সচিব জানান, ১৯৮৩-এর অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পর্বে পরিচালনা পর্ষদের তিন সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম পূর্ণ হবে। পরে চারজনে কোরাম পূরণ করতে হবে। সচিব বলেন, ব্যাংকটি প্রাথমিক পর্যায় শেষ করেছে অনেক আগেই। সে কারণে এ ধারাটিও বাদ যাবে। তিরাশির অধ্যাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক-কে 'নিউ ব্যাংক' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই শব্দটিও নয়া আইনে থাকবে না বলে জানান ব্যাংকিং সচিব। তিনি বলেন, ব্যাংকটি গঠনকালীন সময়ে 'নিউ ব্যাংক' শব্দ দ্বারা অধ্যাদেশে রাষ্ট্রীয় ব্যাংক বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এখন কোনো ব্যাংকই রাষ্ট্রীয় নয়। সবকটিকেই করপোরেট ব্যাংকে রূপান্তর করা হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমাধান হচ্ছে না : অধ্যাদেশ জারি করে গঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কে নয়া আইনে সেটির সমাধান করা হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কখনো বাংলাদেশ ব্যাংক, কখনো এমআরএ আবার কখনো গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ন্ত্রক সংস্থা রূপে পৃথক একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের ব্যাপারে আলোচনা হলেও প্রস্তাবিত আইনে এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.