আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নগরে চাঁদ, মেঘ, আলোরা



আজকে নগরের সব সুন্দরী নারী পরিবেষ্টিত ছিলাম, সব সব সুন্দরী...অদ্ভুত ব্যাপার...এত সুন্দর নারীরা আগে জন্মেনি কোন শহরে, এত সুন্দর নারীরা কখনও জনসমক্ষে বের হয়নি এই শহরে। এটা লেখা ঠিক হলো কিনা তা ঠিক বুঝতে পারছিনা কারণ আমি আর আমার বউ ক্লাসমেট তাই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের কিছু কমন ফ্রেন্ড আছে আর আছে কিছু আনকমন ফ্রেন্ড যারা বউয়ের ফ্রেন্ড কিন্তু আমার না। এদের মূল কাজ হচ্ছে আমার প্রোফাইল পাহারা দেয়া এবং বউয়ের কাছে আমার প্রশংসা করা। এরা প্রশংসাও করে অত্যন্ত creative ভাবে।

যেমন ধরেন বউকে ফোন করে বলবে,

"আল্লাহ, শামীম কি মেধাবী! ও মাশাল্লাহ খুব ভাল করতেসে, আমরা ওকে নিয়ে খুব proud feel করি।

ওকে সবাই চেনে, কত জানা-শোনা। সেদিন কে যেন বললো বইমেলায় ওকে খুব সুন্দর একটা মেয়ের সাথে দেখেছে, মনে হয় ওর ফ্যান-ট্যান হবে, তাইনা?"

এই হইতেসে তাদের প্রশংসার ধরণ। যাই হোক, বউয়ের বান্ধবীরা এমন একটু-আধটু প্রশংসা করবে এটাই স্বাভাবিক, মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। তো সন্ধ্যায় দুই ভয়াবহ সুন্দরী রমনীর সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছি। এতই সৌন্দর্য তাদের যে শহরে অমাবস্যার রাতে পূর্ণিমা নামে, ঘোর বর্ষায় সূর্য ওঠে এমন অবস্থা।



এক সুন্দরী বললো,

"তুমি আর কারও মনে কষ্ট দিও না প্লিজ। মানুষের মনে কষ্ট দেয়া ঠিক না। "

আমি আর মানুষের মনে কষ্ট দিব কি, আমি সেই সুন্দরীর চোখের তারায় ততক্ষণে হারিয়ে গেছি।

বাসায় ফিরেছি। বাসায় আরও তিন সুন্দরী।

মা, বউ, মেয়ে।

মেয়ের দাপট সর্বাধিক। খাবার টেবিলে বাবার সাথে টুকটাক আলাপ করি। কোন এন। জি।

ও'র কোন এডভাইজার আমাকে ২ চোক্ষে দেখতে পারেনা, কোনখানকার স্টাফ কত গরু এইসব। যাইহোক, স্টাফ নিয়ে কথা বলছি, মেয়ে আটকালো,

"বাবা, স্টাফ মানে জিনিসপত্র, তাহলে তুমি কি বল অফিসের স্টাফ ভাল না?"

"এই স্টাফ s-t-a-f-f স্টাফ, s-t-u-f-f স্টাফ না রে আব্বা"

আমার ৬ বছরের স্কলাসটিকা পড়ুয়া মেয়ে মিরপুর বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাস করা বাপের কথায় ২ পয়সার পাত্তা না দিয়ে স্কুটি চালিয়ে চলে যায়।

তারও কিছুক্ষণ পরে। আমি খেয়ে একটু আরাম করার প্ল্যান করছি। মেয়ে এসে ধমক,

"তুমি এখনও ব্রাশ-পেস্ট নাও নাইনি, কে আমার দাঁত ব্রাশ করাবে, এত রাত হয়ে গেছে, কালকে স্কুল, ওহ no, বাবা! তুমি না!"

মেয়ের ধাতানি খেয়ে আমি উঠি, মেয়ের ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে ব্রাশটা ওর হাতে দেই, সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ব্রাশ করতে থাকে, আমি আবার একটু আরাম করার জন্য বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দেই।



২ মিনিটও হয়নি, মেয়ের চিৎকার,

"বাবা আমার দাঁত ব্রাশ করা শেষ, কে কুলি করায় দিবে। "

আমি যেয়ে কুলি করাই। মেয়ে বিরক্ত, আহা-উহু শব্দ করে।

"কি হইসেরে?"

"তুমি আমার নাক দিয়ে পানি ঢুকিয়ে দিচ্ছ কেন?"

"ওহ স্যরি। "

"তুমি শুধু স্যরিই বলো আর একই কাজ বার বার করো বাবা।

"

আমি মেয়ের দিকে তাকাই, ফাজিল বলে কি? আমার ভয়ে সবাই অস্থির, Discomfort এ কাপাকাপি আর এই মেয়ে আমাকে ঝাড়ির ওপর রাখছে।

যাইহোক সন্ধ্যার আরেক সুন্দরী কিছু বলেনা। তাকিয়ে থাকে। গভীর রাতে এস। এম।

এস দেয়,

"I can't live with or without you"

আমি কিছু বলিনা। সব কথা বলার ক্ষমতা ঈশ্বর সবাইকে দেননি।

[ধরে নিন এটি একটি কল্পকাহিনী। স্ট্যাটাস পড়ে সাথে সাথে আমার কাছে সুন্দরী মেয়ে দুটির পরিচয় জানতে চেয়ে এস। এম।

এস দেবেন না প্লিজ। এই মুহুর্তে ১৩ টা আনরেড এস। এম। এস আর ৯টা মিসড কল নিয়ে ফোনটা চার্জে আছে। সুবেহ সাদিকের আগে ধরবার কোন ইচ্ছে নেই]

শুভ রাত্রি।



শামীম আহমেদ
৯ মার্চ ২০১৪
নিকেতন, ঢাকা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।