চট্টগ্রামে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে বাড়ি ভাড়া। নতুন বছরকে সামনে রেখে বাড়ি মালিকরা এক থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানোর নোটিস দিয়েছেন ভাড়াটিয়াদের। নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া বাড়ানোর নোটিসে বেকায়দায় পড়েছেন নগরীতে বসবাসকারী সীমিত আয়ের পরিবারগুলো। গত ২৩ বছরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন হোল্ডিং ট্যাঙ্ বাড়ানোর হার যথসামান্য হলেও একই সময়ে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ৩৮১ শতাংশ!
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম সভাপতি এ কে এম নাজের হোসাইন বলেন, বাড়ি মালিকরা এ বছর প্রায় ২০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর নোটিস দিয়েছেন ভাড়াটিয়াদের। অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া বাড়ানোর কারণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সীমিত আয়ের পরিবারগুলোকে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আহমেদুল হক বলেন, কেউ বাড়ি ভাড়া বাড়ালেও আইন না থাকায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা নিতে পারেন না। গত তিন বছরে সিটি করপোরেশন হোল্ডিং ট্যাঙ্ এক পয়সাও বাড়ায়নি। অথচ বাড়ি মালিকরা হোল্ডিং ট্যাঙ্ বাড়ানোর কথা বলে ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। ক্যাব চট্টগ্রামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৩ বছরে চট্টগ্রামে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ৩৮১ শতাংশ। এর মধ্যে ২০১২ সালে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২০১১ সালে বেড়েছে ১৮ দশমিক ৮৫, ২০১০ সালে ১৮ দশমিক ৮৫, ২০০৯ সালে ১৭ দশমিক ৭৬, ২০০৮ সালে ২১ দশমিক ০৭, ২০০৭ সালে ২১ দশমিক ৪৮, ২০০৬ সালে ১৪ দশমিক ১৪, ২০০৫ সালে ৭ দশমিক ৮৯ ও ২০০৪ সালে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ।জানা যায়, তদারকি না থাকায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতি বছর নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ভাড়া বাড়াচ্ছে বাড়ি মালিকরা। কোনো কোনো বাড়িমালিক ভাড়াটিয়া পরিবর্তনের সুযোগে এক বছরে পাঁচবার ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদ করতে গিয়ে কখনো ভাড়াটিয়াদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে। নানা অজুহাতে ভাড়াটিয়াদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও বাড়িমালিকরা ফাঁকি দিচ্ছেন সরকারি ট্যাঙ্। বাড়িমালিকদের এ সব অনিয়ম এখন ওপেন সিক্রেট হলেও নির্বিকার নাগরিক অধিকার রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন।
নগরীর আকবর শাহ এলাকার মোহাম্মদ ইলিয়াছ নামে এক ভাড়াটিয়া বলেন, 'গত ২১ ডিসেম্বর দুই হাজার টাকা ভাড়া বাড়ানোর নোটিস দেয় বাড়ি মালিক। অস্বাভাবিক ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদ করলে আমার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং ঘর থেকে ইলেকট্রনিঙ্ পণ্য নিয়ে যায় বাড়ি মালিক। এ ঘটনার পর আকবর শাহ থানায় মামলা করি।'
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।