আল্লাহর কাছে যারা ক্ষমা প্রার্থী তাদের প্রতি তার রহমতের সীমা নেই। জেনেশুনে কোনো অপরাধ না করা সত্ত্বেও নিজের অজান্তে অপরাধ করেছেন কিনা এই ভয়ে অনেক মুমিন ইসতিগফার করতেন।

ইমাম আহমদ রাহিমাহুল্লাহ একবার সফররত ছিলেন এবং তখন কোনো এক রাত তার বাইরে কাটানোর প্রয়োজন দেখা দিল। তাই তিনি একটি মসজিদে গেলেন, কিন্তু মসজিদের পাহারাদার ইমাম আহমদকে চিনতে না পেরে তাকে মসজিদে ঢুকতে বাধা দিলেন। ইমাম আহমদ অনেকবার তাকে অনুরোধ করে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, কিন্তু পাহারাদারটি তার অনুরোধ রাখলেন না।

হতাশ হয়ে ইমাম আহমদ রাতটি মসজিদের বারান্দায় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। এবার পাহারাদারটি আরও ক্ষেপে ইমাম আহমদকে টেনেহিঁচড়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলেন। নিকটস্থ রুটির দোকানের এক রুটি প্রস্তুতকারক এ দৃশ্য দেখলেন। ইমাম আহমদের প্রতি তার দয়া হলো। তাই তিনি ইমাম আহমদকে রাতে তার অতিথি হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

ইমাম আহমদ যখন রুটির দোকানে ছিলেন, তিনি খেয়াল করলেন যে, রুটি প্রস্তুতকারক লোকটি কাজ করছে আর ক্রমাগত ইসতিগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) করছে। সকালে ইমাম আহমদ খুব উৎসুক মনে সেই লোকটিকে তার ক্রমাগত ইসতিগফারের ব্যাপারে প্রশ্ন করলেন। লোকটি বলল, এটা তার কাজের মতোই এক স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ইমাম আহমদ জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি আপনার এই আমলের কোনো পুরস্কার পেয়েছেন?

লোকটি জবাবে বলল, আল্লাহর শপথ! আমি যত দোয়া করেছি সবই আল্লাহ কবুল করেছেন, শুধু একটি দোয়া বাদে। ইমাম আহমদ জিজ্ঞাসা করলেন, সেই দোয়াটি কি? লোকটি বলল, আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলাম যে, আমি যেন প্রসিদ্ধ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বালের সাক্ষাৎ লাভ করতে পারি।

ইমাম আহমদ অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হয়ে বললেন, আমিই আহমদ ইবনে হাম্বাল! তিনি আরও বললেন, আল্লাহর শপথ! তিনি আমাকে তোমার স্থানে নিয়ে এসেছেন এ জন্য যে, যাতে তোমার ইচ্ছা বাস্তবায়িত হয়।

লেখক : খতিব, সারুলিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ঢাকা।

 

 

।