এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২টি দুর্গ, একটি মসজিদ আর একটি দরগা। ঢাকা থেকে সকালে গিয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই জায়গাগুলো থেকে বেড়িয়ে আসা সম্ভব। হাজীগঞ্জ জল দুর্গ হাজীগঞ্জ জল দুর্গ বিবি মরিয়ম মসজিদ ও সমাধি সোনাকান্দা দুর্গ কদমরসুল দরগা কদমরসুল দরগা শীতলক্ষ্যা নদী
হাজীগঞ্জ জল দুর্গ
হাজীগঞ্জ জল দুর্গ
নারায়ণগঞ্জ শহরের কিল্লারপুল এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ জলদুর্গ। ঈসা খাঁর কেল্লা নামেও পরিচিত এই স্থাপনা প্রতিষ্ঠাতার সঠিক সময় জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয় সুবাদার মিরজুমলার শাসনামলে এটি তৈরি করা হয়।
নির্মাণের প্রধান কারণ নদীপথে মগ ও পর্তুগিজদের আক্রমণ প্রতিহত করা।
ঢাকাকে রক্ষা করতে সপ্তদশ শতকের আগে-পরে যে তিনটি জলদুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল। তারই একটি হাজীগঞ্জ। পাঁচ কোণাকৃতির এ দুর্গের প্রাচীরগুলো বেশ উঁচু এবং পুরু। উত্তর দিকে দুর্গে ঢোকার একমাত্র তোরণ।
চারপাশের প্রাচীরে রয়েছে বন্দুক বসিয়ে গুলি চালাবার ফোকর।
হাজিগঞ্জ জলদুর্গে যাওয়ার সহজ উপায় হল, ঢাকা থেকে বাসে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া নামতে হবে। সেখান থেকে অটোরিকশা কিংবা রিকশায় আধা ঘণ্টার কমসময়ে পৌঁছান যাবে।
বিবি মরিয়ম মসজিদ ও সমাধি
হাজীগঞ্জ দুর্গের কাছেই ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থাপনা বিবি মরিয়ম মসজিদ ও সমাধি। ঐতিহাসিকগণ মনে করেন, ১৬৬৪-১৬৮৮ সালের দিকে শায়েস্তা খাঁ এই স্থাপনা নির্মাণ করেন।
তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদের কাছে তাঁর কন্যা বিবি মরিয়মের সমাধি। এই কারণেই নামকরণ বিবি মরিয়ম মসজিদ।
তবে শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত বলে এটি হাজীগঞ্জ মসজিদ নামেও পরিচিত। চাষাড়া থেকে হাজীগঞ্জ দুর্গে যাওয়ার পথে সামান্য আগেই পড়বে এই স্থাপনা।
সোনাকান্দা দুর্গ
নারায়ণগঞ্জের আরেকটি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান সোনাকান্দা দুর্গ।
এটিও একটি জল দুর্গ। শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলায় এর অবস্থান। এর উল্টো পাশেই রয়েছে হাজীগঞ্জ দুর্গ।
নদীপথে ঢাকার সঙ্গে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ নদীপথগুলোর নিরাপত্তার জন্য মোগল শাসকগণ বেশকিছু জলদুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হল সোনাকান্দা দুর্গ।
হাজীগঞ্জ দুর্গের মতো দেখতে হলেও আকারে কিছুটা ছোট।
প্রথমে নারায়ণগঞ্জে এসে নৌকায় শীতলক্ষা নদী পার হতে হবে। তারপরে রিকশা কিংবা অটোরিকশায় সহজেই সোনাকান্দা দুর্গে পৌঁছান যাবে।
কদমরসুল দরগা
কদমরসুল দরগা
নারায়ণগঞ্জ শহরের বিপরীত দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পারে নবীগঞ্জে অবস্থিত কদমরসুল দরগা। এখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা) পায়ের ছাপসম্বলিত একটি পাথর রয়েছে বলে এর নাম কদম রসুল।
জানা যায়, সম্রাট আকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী আফগান নেতা মাসুম খান কাবুলি এই পদচিহ্ন সম্বলিত পাথর একজন আরব বণিকের কাছ থেকে কিনেছিলেন। ঢাকার জমিদার গোলাম নবী ১৭৭৭-১৭৭৮ সালে এ সৌধটি নির্মাণ করেন। আর কদম রসুল দরগার প্রধান ফটকটি গোলাম নবীর ছেলে গোলাম মুহাম্মদ ১৮০৫-১৮০৬ সালে নির্মাণ করেন।
শীতলক্ষ্যা নদী
নারায়ণগঞ্জের প্রধান নদী। একসময় বিশ্ব সমাদৃত বাংলাদেশের মসলিনশিল্প গড়ে উঠেছিল শীতলক্ষ্যার দুই তীরে।
এখন বিভিন্ন কলকারখানায় পরিপূর্ণ নদীর দুপাশ। নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে শুরু করে কালীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ শীতলক্ষ্যার গতিপথ। দিনে দিনে দূষণ আর দখলে জৌলুস হারালেও দীর্ঘ এ পথে নৌভ্রমণ ভালো লাগবে সবার।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের পথে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেশ কিছু বাস চলাচল করে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— বিআরটিসি, বন্ধন, উৎসব, সেতু, আনন্দ ইত্যাদি।
ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইট ও গুলিস্তানের হকি স্টেডিয়ামের আশপাশ থেকে এসব বাস ছেড়ে যায়। ভাড়া ৩৫-৫০ টাকা।
ছবি: মুস্তাফিজ মামুন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।