শেষ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ৭৩ উপজেলার মধ্যে রাত পৌনে ১টায় ৭১টির বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ৫২, বিএনপি ১৩, জামায়াত ৩ এবং অন্যান্য দলের ৩ জন চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া নরসিংদীররায়পুরায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান ২৬ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। সেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোটেক শামসুল হক তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী। একইভাবে গাজীপুরের শ্রীপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবদুল মোতালেব। এবার বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কোনো উপজেলায় বিজয়ী হতে পারেনি। পাঁচ ধাপের মোট ফলাফলে আওয়ামী লীগ ২২৯, বিএনপি ১৬৩, জামায়াত ৩৫, জাতীয় পার্টি ৩, ইউপিডিএফ ৪, এলডিপি ১, স্বতন্ত্রসহ অন্যান্য প্রার্থী ৫টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। এর আগে গতকাল গোলাগুলি, কেন্দ্র দখল, জালভোটসহ সংঘর্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। দুপুর ১২টার মধ্যেই অন্তত ১৯টি উপজেলায় ভোট বর্জন করে বিএনপি।
৯ জেলায় মোট ৫৮ প্রার্থীর ভোট বর্জন এবং তিন জেলায় অন্তত ৯টি কেন্দ্রে ফলাফল স্থগিত রাখা হয়। নির্বাচন বর্জন করে বেশ কয়েকটি উপজেলায় বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা আজ হরতালের ডাক দেন। আওয়ামী লীগ : আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে- চুয়াডাঙ্গা সদরে আসাদুল হক বিশ্বাস, আলমডাঙ্গায় হেলাল উদ্দিন, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে মাহবুবুজ্জামান, গাইবান্ধার ফুলছড়িতে হাবিবুর রহমান, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মোহাম্মদ আলী, শাহাজাদপুরে আজাদ রহমান, পাবনা সদরে মোশাররফ হোসেন, বেড়ায় আবদুল কাদের ও নীলফামারীর ডোমারে আবদুর রাজ্জাক বসুনিয়া, সাতক্ষীরা সদরে আসাদুজ্জামান বাবু, দেবহাটায় আবদুল গনি, তালায় ঘোষ শরৎ কুমার, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আবদুল মোতালেব তালুকদার, দশমিনায় সাখাওয়াত হোসেন শওকত (বিদ্রোহী), জামালপুরের মাদারগঞ্জে ওবায়দুর রহমান বেলাল, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আশরাফ উদ্দিন বাদল, নান্দাইলে আবদুল মালেক চৌধুরী স্বপন, বরগুনা সদরে আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা, বামনায় সাইফুল ইসলাম লিটু মৃধা, পাথরঘাটায় রফিকুল ইসলাম রিপন, আমতলীতে জি এম দেলোয়ার, কিশোরগঞ্জে অষ্টগ্রামে শহিদুল ইসলাম জেমস, পাকুন্দিয়ায় রফিকুল ইসলাম রেনু, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে নজরুল ইসলাম খান, মির্জাপুরে মীর এনায়েত হোসেন মন্টু, গোপালপুরে ইউনুস ইসলাম তালুকদার, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, সিলেটের বিয়ানিবাজারে আতাউর রহমান খান, মৌলভীবাজারের জুড়ীতে এম এ মুমিত আশুক, রাজনগরে আসকীর খান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে এ বি এম নুরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে শাহজালাল মিয়া, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে ওসমান গণী তালুকদার, টঙ্গিবাড়িতে ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ, সিরাজদিখানে মহিউদ্দিন আহম্মেদ, নরসিংদীর মনোহরদীতে সাইফুল ইসলাম খান বিরু, গাজীপুরের কালিগঞ্জে মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আলহাজ মোহাম্মদ শাহজাহান ভূইয়া, আড়াইহাজারে শাহজালাল মিয়া, ফেনীর ছাগলনাইয়ায় মেজবাউল হায়দার চৌধুরী, রাঙামাটি রাজস্থলীতে উথিনসিন মারমা, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে মাস্টার শাহজাহান, কক্সবাজারের টেকনাফে জাফর আহমেদ, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে খাইরুল আনাম সেলিম, হাতিয়ায় মাহবুব মোরশেদ লিটন (বিদ্রোহী), কুমিল্লার চান্দিনায় তপন বকসী, মুরাদনগরে আবদুল কাইয়ুম খসরু, লক্ষ্মীপুর সদরে এ কে এম সালাউদ্দিন টিপু, রায়পুরে আলতাফ হোসেন হাওলাদার, রামগঞ্জে আ ক ম রুহুল আমিন, রামগতিতে আবদুল ওয়াদুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে জাহাঙ্গীর আলম ও কসবায় অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপি : শেষ ধাপে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে- দিনাজপুরের বিরলে আ ন ম বজলুর রশীদ কালু, পার্বতীপুরে আমিনুল ইসলাম, হাকিমপুরে হারুন অর রশীদ, বগুড়া সদরে আলী আজগর তালুকদার হেনা, ময়মনসিংহের ত্রিশালে জয়নাল আবেদীন, নরসিংদী সদরে মঞ্জুর এলাহী, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর হারুন উর রশিদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কামরুজ্জামান (বিদ্রোহী), নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নান, কক্সবাজারের উখিয়ায় সারওয়ার জাহান, রাঙামাটির লংগদুতে তোফাজ্জল হোসেন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে শেখ বশির আহমেদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে আবু আসিফ বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। জামায়াত : জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যানরা হলেন- গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে মো. মাজেদুর রহমান, রাজশাহীর পবায় মকবুল হোসেন ও কক্সবাজার সদরে জি এম রহিমুল্লাহ।
অন্যান্য : খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী নবকুমার চাকমা, রাঙামাটির সদরে জনসংহতি সমিতির অরুণ কান্তি চাকমা ও বিলাইছড়িতে জেএসএসের (সন্তু লারমা) শুভ মঙ্গল চাকমা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ইসির তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চম ধাপের ৩৪ জেলার ৭৩ উপজেলায় এক হাজার ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩৬২ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪১৮ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৭৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এসব উপজেলায় মোট ভোটার ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৫১। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৯ লাখ ৩০ হাজার ২৬৯, মহিলা ভোটার ৬৯ লাখ ৬১ হাজার ৪৮২।
ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৫৩৪টি, ভোটকক্ষ ৩৪ হাজার ৮৮৫টি। প্রিসাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৫ হাজার ৫৩৪ জন। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৩৪ হাজার ৮৮৫ জন এবং পোলিং অফিসার ৬৯ হাজার ৭৭০ জন দায়িত্ব পালন করেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।