বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র সাদ ইবনে মোমতাজকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী নামধারী পেশাদার দুবর্ৃৃত্তরা। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হল ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুজয় কুমার কুণ্ডু ও ছাত্রলীগ নেতা রোকনোজ্জামানকে পুলিশ এ অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা সাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে। ছাত্রলীগ নেতা নামধারী এই দুই সন্ত্রাসী এবং তাদের সহযোগীরা সাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। গুরুতর আহত সাদকে ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই তিনি মারা যান। পাঁচ বছর আগে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সারা দেশে আরম্ভ হয় ছাত্রলীগপনা। কোথাও কোথাও যুবলীগপনা। আওয়ামী লীগ নামের ঐতিহ্যবাহী দলটিকে কবর দেওয়ার অপতৎপরতায় লিপ্ত হওয়াকে তারা কর্তব্য বলে বেছে নেয়। আবদু ভাই বয়সী ছাত্রলীগ এবং দাদা-নানার বয়সী যুবলীগ নেতা-কর্মীদের দৌরাত্দ্য সব সীমা ছাড়িয়ে যায়। বিভীষণের এই বরপুত্ররা নিজেদের লুটপাটের ভাগবাটোয়ারাজনিত বিরোধে কখনো কখনো একে অন্যের রক্তও ঝরায়। লিপ্ত হয় নিজেদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে। এমনকি গুপ্তহত্যার মাধ্যমে কেউ কেউ পথের কাঁটা দলীয় প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করে। এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের মতলবে নিজেদের কৃত অপরাধ অপরের ওপর চাপিয়ে মায়াকান্নারও অবতারণা ঘটায়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হাতে নিহত সাদ নিজেও ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা। কিন্তু স্বার্থের দ্বন্দ্বে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করতে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষিত খুনিদের বাধেনি। সাদ হত্যার পর ছাত্রলীগপনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের ছাত্রলীগ পরিচালিত টর্চার সেল বন্ধ, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রশাসনে থাকা ব্যর্থদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের এই দাবি খুবই ন্যায্য এবং ছাত্রলীগ নামধারী দুর্বৃত্তদের প্রতি সহানুভূতি না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ দাবি মেনে নেবে। পাশাপাশি নিজেদের মুখে চুনকালি লাগানোর বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগের অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগ এবং সরকার এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেবে- আমরা তেমনটি দেখতে চাই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।